আইহো হাট

Bangla Video: যুগের ধাক্কায় অস্তিত্ব সঙ্কটে শতাব্দী প্রাচীন ‘সব পেয়েছির’ হাটে

মালদহ: নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে গরু-ছাগল, আসবাবপত্র। সমস্ত কিছুই মিলত এক জায়গায়। এ এক আজব কেনাকাটার জায়গা। কিন্তু আজ অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে মালদহের শতাব্দী প্রাচীন আইহো হাট। ক্রেতাদের আনাগোনা ক্রমশ কমতে থাকায় বিক্রেতারাও এই হাটে আসা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিচ্ছেন।

বর্তমানে গুটি কয়েক ব্যবসায়ী এখানে তাঁদের পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতে আসেন। সাপ্তাহিক এই হাটের একসময় কদর ছিল গোটা এলাকা জুড়ে। প্রতি রবিবার মালদহের হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রামে বসে এই হাট। টাঙ্গন নদীর তীরে বিশাল এলাকা জুড়ে এই হাটের ব্যাপ্তি ছিল। ধীরে ধীরে হাটের জায়গাও কমে এসেছে। একসময় বিশাল গরুর হাট ছিল। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই হাট বসে। বর্তমানে প্রশাসনের নির্দেশে গরুর হাট আর বসে না। তবে অন্যান্য সমস্ত কিছুই পাওয়া যায়। কিন্তু আধুনিকতার দাপট ও বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট বাজার বসে যাওয়ায় থাকায় আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে প্রাচীন এই হাট।

আরও পড়ুন: শাসক-বিরোধী তরজায় কাজ বন্ধ কারখানায়

স্থানীয় বাসিন্দা ফজলু শেখ বলেন, এক সময় দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এই হাটে আসতেন। স্থানীয় জমিদার এই হাটের সূচনা করেছিলেন। বর্তমানে হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের নানান সমস্যায় জর্জরিত এই হাট।

এক সময় বহু দূর দূরান্ত থেকে এই হাটে ক্রেতা থেকে বিক্রেতা আসতেন। শনিবার রাত্রে গরুর গাড়ি নিয়ে হাটে আসতেন। সারাদিন রান্নাবান্না করে খেয়ে হাটে কেনাবেচা করে পরের দিন ভোরবেলা বেরিয়ে যেতেন। লম্বা লাইন পড়ত গরুর গাড়ির। জমিদার আমলে শুরু হয়েছিল এই হাট। বর্তমানে এই হাট দেখাশোনা করেন তাঁদের বংশধর।

এই ঐতিহ্যবাহী হাটের অস্তিত্ব সঙ্কট প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা দ্বিজেন সাহা বলেন, আগে হাটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেনাবেচা হত। এখন আর সেরকম কেনাবেচা হয় না। বর্তমানে হাটে লোকজন অনেক কম আসছে।

এই হাট এখন চলে গিয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে। এছাড়াও আস্তে আস্তে হাটের অস্তিত্ব হারিয়ে যেতে বসেছে। এই নিয়ে সকলে চিন্তিত রয়েছে। হয়ত কোন একদিন হাট আর থাকবে না। এই হাটে ধান, গম, পাট সহ কাঁসা -পিতল, গরু, ছাগল হাঁস মুরগি সবই বিক্রি হত একসময়, এখন আর সেইসব নেই বললেই চলে।

হরষিত সিংহ