মালদহ: মালদহে আদিবাসী গ্রামে কুসংস্কারের ছায়া! গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা অসুস্থ৷ বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থতা না সারায় ‘ডাইনি’ চিহ্নিত করা হয়েছে গ্রামেরই এক নিরীহ মহিলাকে। শুধু তাই নয়, গুণিনের কাছে নিয়ে গিয়ে জোর করে ডাইনি বলে স্বীকার করতে বাধ্য করা হয় মহিলাকে।
এরপর চলে বেধড়ক মারধর ও হেনস্থা। এনিয়ে গ্রামে সভাও হয়৷ আরও অভিযোগ, নির্যাতিত মহিলাকে ডাইনি হিসাবে চিহ্নিত করার মুখ্য ভূমিকা নিয়েছেন অসুস্থ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর তৃণমূল নেতা স্বামী৷ লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ওই মহিলাকে নিয়ে যান পাশের গ্রামের এক গুণিনের কাছে৷ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবেশী আরও এক মহিলাকে৷
অনেকটা সময় ধরে তুকতাকের পর ওই মহিলার দুই কানে লোহার শিকের খোঁচা দিয়ে তাঁকে আরও একবার ডাইনি ঘোষণা করেন গুণিন৷ এরপরেই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ও গ্রামের কিছু লোকজন মহিলাকে বেধড়ক মারধর করেন৷ মেয়েদের সামনেই মায়ের উপর চলে শারীরিক অত্যাচার ও হেনস্থা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ব্যাপক মার খেতে হয় এক প্রতিবেশীকেও৷
আরও পড়ুন: প্রচার শেষ হতেই সায়নী বললেন, ‘আমি জিতে গেছি’! যাদবপুরে কি জিতে গেল তৃণমূল? জানুন
ঘটনার চাউর হওয়ার পর নির্যাতিত মহিলা ও তাঁর পরিবারকে উদ্ধার করেন ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এরপর নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়া মহিলার চিকিৎসা করা হয় স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে। কার্যত মধ্যযুগীয় এই ঘটনা পুরাতন মালদহ ব্লকের ভাবুক পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের৷
আরও অভিযোগ, এই ঘটনায় নির্যাতিতা মালদহ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ডাইনি অপবাদ বাদ দিয়ে সাধারণ মারধরের অভিযোগ নেয় পুলিশ। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন মালদহের বিজেপি বিধায়ক গোপাল সাহা এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান প্রভুনাথ দুবে। অসুস্থতার জন্য গ্রামে পুজো হয়েছিল। সেখানে অন্য পরিবারের সঙ্গে নির্যাতিতার ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে ডাইনি অপবাদের ঘটনা সত্য নয়। এমনই দাবি তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর অভিযুক্ত স্বামী দিলীপ বেসরার।
সেবক দেবশর্মা