পার্থ-অনুব্রত-জ্যোতিপ্রিয় গড়েও ঘাসফুল ঝড়

Partha Anubrata Jyotipriya: পার্থ-অনুব্রত-জ্যোতিপ্রিয় গড়েও ঘাসফুল ঝড়! ‘ম্যাজিক ফ্যাক্টর’ আসলে কী? বলে দিল তৃণমূল

কলকাতা: একাধিক দূর্নীতির অভিযোগ। জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর এই নেতাদের নিয়েই গত কয়েক মাস ধরে তুমুল অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে লোকসভা ভোটের মতো বড় শক্তি পরীক্ষার সময়েই প্রথম সারির এই নেতাদের অভাবে বেগ পেতে হয়েছে স্থানীয় দলীয় সংগঠনগুলোকেও। ‘দাদাদের’ ছাড়াই বীরভূম থেকে বেহালা ও বারাসতের একাংশে ময়দানে নামে তৃণমূল। তবে ফলাফল সামনে আসতেই দেখা গেল বড় চমক। ব্যক্তি ‘গাইড’ নন, দলীয় সংগঠনের তৈরি গাইডবুকেই দিব্যি পেরিয়ে যাওয়া গেল ভোট বৈতরণী।

উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন কেষ্ট-বালু-পার্থ, এই তিন নেতার জেলে যাওয়ার পরেও ভোট বাক্সে কোনও প্রভাব পড়েনি তৃণমূলের। সবকটি এলাকাতেই তৃণমূল কংগ্রেস তাদের প্রাপ্ত ভোট এবং জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছে শাসক দল। দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় একছত্র দাপট ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। সেই জেলায় বনগাঁ বাদে সব আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আবার অনুব্রত-হীন বীরভূমেও দুই লোকসভা আসনেই জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিম থেকেও ভাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে কার্যত দুর্নীতি-অভিযোগ ও দাদাদের অনুপস্থিতি কিন্তু সে ভাবে ছুঁতে পারেনি ইভিএমের বোতামকে। এর পিছনে আসল কারণ কী? তৃণমূলের অন্দর অবশ্য সংগঠনকেই গুরুত্ব দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘আজ থেকেই আমি এই কাজ শুরু করছি…’, ভোটের ফলাফল সামনে আসতেই বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ!

প্রসঙ্গত, বীরভূমে তৃণমূল মানেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে সিবিআইয়ের (CBI) হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হন গরু পাচার কেলেঙ্কারি মামলায়। বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে বন্দি কেষ্ট মণ্ডল। কিন্তু দেখা গেল ‘রাঙা মাটির দেশে’ কেষ্ট মণ্ডলের প্রভাব এতটাই বেশি যে সশরীরে না থেকেও জেলা নির্বাচনী ময়দানে অলক্ষে খেলোয়াড় ছিলেন তিনিই! দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা স্লোগানেও জ্বলজ্বল করছিল অনুব্রতর নাম।

আরও পড়ুন: অখিলেশের বাড়িতে অভিষেক, নাড্ডার বাড়িতে শাহ…! নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত? NDA-INDIA তৎপরতা তুঙ্গে

অন্যদিকে, হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে। এলাকার সংগঠনের অনেকটাই তাঁর হাতে তৈরি। ফলে নির্বাচনের সময়ে তাঁর অনুপস্থিতির একটা প্রভাব থাকবে বলে ধারণা ছিল দলের অন্দরেও। তবে সেক্ষেত্রেও সে ভাবে দাঁত ফোটাতে পারেনি দুর্নীতি ইস্যু।

দীর্ঘদিন জেলেই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। বেহালা পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রবীণ রাজনীতিক। ভোটের প্রচারে বা সংগঠনের কাজে তাঁর অভিজ্ঞতায় নির্ভর করতেন স্বয়ং দলনেত্রীও। এহেন পার্থর অনুপস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকে এই এলাকা দেখার জন্য আলাদা কমিটি গড়ে দেয় রাজ্য নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি দেবাশিস কুমারের নেতৃত্বে সেই কমিটিই সবটা নজরে রেখেছে। আর পাশের কেন্দ্র বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় নিজে সংগঠন ও প্রচারের বিষয়টি দেখেছেন। বিশেষ দায়িত্বে আছেন প্রার্থী মালা রায় নিজেও। সর্বোপরি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভোট থেকে জয়, সবটাই হয়েছে মসৃণভাবেই।