উত্তর ২৪ পরগনা: একই এলাকায় মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে দুই পরিবারই এখন কাটাচ্ছে উৎকণ্ঠার প্রহর। উত্তরবঙ্গে অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য ঘোলার পার্থসারথি মন্ডলের সঙ্গেই ফিরছিলেন পানিহাটির নাটাগড় এলাকার বাসিন্দা খোকন সেন সহ আরেক সহকর্মী শঙ্কর মোহন দাস। যদিও রাঙাপানিতে দাঁড়িয়ে থাকা সেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে মাল গাড়ি এসে ধাক্কা মারার পরেই, মৃত্যু হয় শঙ্কর মোহন দাসের।
সেই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই রীতিমতো কান্নার রোল পড়ে যায় পানিহাটির সেন পরিবারেও। সেই খবরের পরই পরিবারের সকলে ভেবেছিলেন হয়তো তাদের পরিবারের সদস্য খোকনের উপরও নেমে এসেছে চরম দুর্ঘটনা। কি করবেন তারা, যেন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। রেলওয়ে মেল সার্ভিসে কর্মরত খোকন সেনের স্ত্রী স্বপ্না সেন সহ রয়েছে দুই ছেলে। কেমন আছে বাবা, কি অবস্থায় আছে তা বুঝতে না পেরেই ছোট ছেলে স্বরূপ সেন রওনা দেন ঘটনাস্থলের উদ্দেশে।
ইতিমধ্যেই অন্যান্য সহকর্মীদের থেকে খবর আসে বাড়িতে। গুরুতর আহত অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে খোকন বাবুকে। জরুরী ভিত্তিতে অস্ত্রপচার করা হয় তার। আঘাত লেগে লিভারের রক্ত জমে যাওয়ায় দ্রুত চিকিৎসকরা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে চলে অপারেশন। অবশেষে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন তিনি বলেই জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।
স্ত্রী স্বপ্না দেবীর সঙ্গে ফোনে কথা হলেও কোন কথাই বলতে পারেননি শারীরিকভাবে অসুস্থ খোকন বাবু। শুধু গোঙানি শব্দই শুনতে পেয়েছেন বলে জানালেন পানিহাটির বাড়িতে উৎকণ্ঠার প্রহর গোনা স্ত্রী স্বপ্না সেন। এখনও যেন চোখের জল বাঁধ মানছে না। স্বামীকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে তা যেন স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তিনি। তবে বারংবার এভাবে রেল দুর্ঘটনার জন্য অবশ্য রেলের গাফিলতি রয়েছে বলেই মনে করছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত খোকন সেনের পরিবার। খোকন বাবুকে বাহাত্তর ঘন্টা অবজারভেশনের রাখা হয়েছে বলে মা কে জানিয়েছে ছেলে। অফিসের তরফ থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য মিলছে বলেও জানান স্ত্রী। তবে যতক্ষণ না স্বামী কে স্বশরীরে দেখতে পাচ্ছেন, ততক্ষণ যেন দুশ্চিন্তা কমছে না পানিহাটির সেন পরিবারের এই গৃহিণীর।
Rudra Narayan Roy