হুগলি: দুর্ঘটনায় কারোর হাত বাদ গেছে, কারোর বা পা। জীবনের মূল স্রোত থেকে তারা অনেকটাই পিছিয়ে। যখন এই সব মানুষরা সমাজের বাতিলের খাতায় সেই সময় তাদের জীবনের আশার আলো দেখাচ্ছেন আরামবাগের এক যুবক। হাত-পা হীন অসহায় মানুষদের কৃত্রিম হাত-পা লাগিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে আরামবাগের আজাহার।
কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে আরামবাগ-সহ আশেপাশের এলাকার মোট ৩০ জন হাত পা নেই এমন অসহায় মানুষদের কৃত্রিম হাত পা লাগানোর ব্যবস্থা করছে আজাহার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মহাবীর সেবা সদন। যেখানে আজকালরার দিনে মানুষ শুধু নিজের ও নিজেদের কথা ভাবতে ভাবতেই ব্যস্ত, শেখানে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলা মানুষের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হাত পা হীন মানুষদের কথা ভেবেছেন আরামবাগের যুবক আজাহার।
আজহারের জানালেন, সংসারে একজন রোজগেরে মানুষের হাত বা পা চলে গেলে তলিয়ে যায় তাঁদের সংসার। তাই তাঁদের আঁধার জীবনে কিছুটা আলো আনার চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। এই কাজ কলকাতাতে হলেও কলকাতা গিয়ে সেখানে থেকে হাত পা নিতে গেলে অনেক খরচা পরে যাবে,যা অনেকেই বহন করতে পারবে না।
এর পর অনেক সন্ধান চালিয়ে সে সন্ধান পায় সুদূর কলকাতায় মহাবীর সেবা সদন নামের একটি সংস্থার। যারা বিনামূল্যে কৃত্রিম হাত পা মানুষকে প্রদান করেন। যারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মানুষকে কৃত্রিম হাত পা উপহার দিয়ে থাকেন।
এর পরেই আজাহার আরামবাগের হাত-পা হীন মানুষদের কথা ভেবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারাও আরামবাগে আসতে রাজি হয়। এর পরেই শুরু হয় হাতে পায়ের মাপ নেওয়ার কাজ। মাপ নেওয়া হয় গেলে প্রস্থেটিক্স প্রস্তুতকারকরা তাঁদের সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে উপস্থিত হন আরামবাগে।
এক এক করে ৩০ জন মানুষকেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃত্রিম হাত পা প্রদান করেন। শুধু আরামবাগই নয় আরামবাগের বাইরে থেকেও অনেক মানুষ বেঁচে থাকার রসদ হাত পা নিতে ছুটে আসেন আরামবাগে এবং এই কাজ চলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষের হাত পা চলে গেছে পথ দুর্ঘটনায়।
কৃত্রিম ভাবে হাত পা পেতে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে এই আসায় অনেকটাই খুশি হয় তারা। অনেকে আবার এই হাত পা নিয়েই টোটো কিনেই বা ছোট খাটো কাজ করেও সংসারের হাল ধরবেন বলেও জানান।সব মিলিয়ে আজাহারের এই উদ্যোগে সাধুবাদ জানাচ্ছেন আঁধার জীবনে কিছুটা আলো ফিরে পাওয়া মানুষজন।
রাহী হালদার