কৌশিক অধিকারী, মুর্শিদাবাদ: ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে যে পলাশির যুদ্ধ হয়ে ছিল, সেই যুদ্ধে বাংলার পরাজয় ঘটেছিল। আর সেই দিনে সিরাজউদ্দৌলা, মীরমদনের মতো বহু বীরের সেদিন মৃত্যু হয়। পলাশির যুদ্ধে মীরমদন ঘোড়ায় করে লড়াইয়ের সময় নিহত হন। কথিত, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মীরমদনের দেহ নিয়ে আসা হয় রেজিনগরে বাবা ফরিদের আস্তানায়। বাবা ফরিদ সাহেব নিজের আস্তানায় মীরমদনের সমাধি দেন।
১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন, পলাশির আমবাগানে ডুবে গিয়েছিল বাংলার তথা দেশের স্বাধীনতার সূর্য। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়েছিলেন মীরমদন। মুর্শিদাবাদে ভাগীরথী নদীর পাশে ফরিদপুর গ্রামে চিরঘুমে শুয়ে আছেন পলাশির যুদ্ধে নবাবেবর অন্যতম সেনানায়ক বক্সী মীরমদন। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁকে, পলাশীর সমরে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত সাহসী।
হাসানউদ্দিন খানের অধীনে ঢাকায় কাজ করতেন মীরমদন। হাসানউদ্দিন খান ছিলেন হোসেন কুলি খানের ভ্রাতুষ্পুত্র। মীরমদনকে তাঁর বিশ্বস্ততা ও কর্মদক্ষতার জন্য নবাব আলিবর্দি খাঁ নিজেও পছন্দ করতেন। পরে তাঁকে ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে এসে সেনাপতির আসনে বসান নবাব সিরাজ। তাকে দেওয়া হয় ‘বখশী’ (বক্সী) উপাধি। সেখান থেকে পলাশির সমরে মৃত্যু পর্যন্ত কখনও নবাবের বিশ্বাস ভাঙেননি তিনি।
আরও পড়ুন : চেনা এই মশলাগুলি রান্নাঘরে রাখুন এই ভাবে! অর্থবৃষ্টিতে সংসারে উপচে পড়বে টাকা! টের পাবেন না অভাব
মীরমদনের অনুগত সৈনিকরা তাঁদের প্রিয় সেনাপতির দেহ ফেলে আসেননি। তাঁরা তাঁর মৃতদেহকে গোপনে বহন করে নিয়ে আসেন পলাশি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের কাছে একটি গ্রামে। ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী সে গ্রামটির নাম ফরিদপুর। ফরিদপুর নামটি হয়েছে সাধক ফরিদ খানের নামানুসারে। সেই ফরিদ খানের সমাধির পাশেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়।