দার্জিলিং: এই ডিজিটাল দুনিয়ায় অনলাইনে প্রতারণা শিকার হচ্ছে বহু মানুষ, বহু শিশু। বর্তমান নবীন প্রজন্ম ডিজিটাল মাধ্যমে সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু সবকিছু জানা সত্ত্বেও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। বাল্যকাল থেকেই মোবাইলের প্রতি বেশি ঝুঁকে যাচ্ছেন শিশুরা। তারপরেই ডিজিটাল জগতে মিথ্যে প্রেম, প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
সমাজকে নতুন আশার আলো দেখানোর কাজ যাঁদের প্রত্যেক দিনের জীবনযাত্রার অঙ্গ তাঁদের নিয়েই এ বার বিশেষ উদ্যোগ নিল পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ এবং ইউনিসেফ। বহু বছর আগে থেকেই এই সংস্থাগুলি শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে চলেছেন। তবে এ বার দার্জিলিঙে প্রথমবার বিশাল আকারে রাজ্য শিশু সুরক্ষা দিবস আয়োজন করতে চলেছে। যেখানে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করবেন এবং সচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা দেওয়া হবে।
তথ্য অনুযায়ী ১১ থেকে ১২ বছরের শিশুরা ইন্টারনেটের প্রতি বেশি আসক্ত। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, এ বয়সের শিশুদের ভাল মন্দ পার্থক্য করার বোধ তৈরি না হওয়ার কারণে তারা যে কোনও ধরনের লোভে পড়ে নিজেদের বিপদের মুখে ফেলতে পারে, এমন কী নিজের অজান্তে অভিভাবক ও আত্মীয়স্বজনদের জন্যও তৈরি করতে পারে ফাঁদ। এমন নজির বিভিন্ন সময় দেখা গেছে। সুতরাং শিশুদের ডিজিটাল জগতে প্রবেশের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।
অভিভাবকরা সচেতন হলে তবেই তাঁদের সন্তানরা সুরক্ষিত থাকবে। ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সুচরিতা বর্ধণ জানান, বহুদিন ধরেই শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা নিয়ে তারা কাজ করে আসছে। ইউনিসেফ এবং আয়োগের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দার্জিলিঙে এবার প্রথম এমন কর্মসূচি রাখা হয়েছে। আগামীতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।।
পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারম্যান তুলিকা দাস বলেন, ‘ বর্তমানে শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ও অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, সরকারের সুরক্ষা নীতিমালা, কঠোর ডিজিটাল ও পর্নোগ্রাফি আইন এবং অভিভাবকদের সচেতনতাই শিশুদের রক্ষাকবচ হতে পারে। প্রত্যেক বাবা মায়ের কাছে তাঁদের সন্তান জীবনের সবচেয়ে দামি সম্পদ। সে কী করছে- বাস্তব জীবনে ও অনলাইনে কাদের সঙ্গে মিশছে- এসব পর্যবেক্ষণ করা এবং সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেয়ার মাধ্যমেই তাদের জীবন নিরাপদ করা যেতে পারে।’
এ ছাড়াও তিনি বলেন ,’ ডিজিটাল লিটারেসির ভীষণ প্রয়োজন রয়েছে। অর্থাৎ, এখন সকলেই বলেন বাচ্চারা কি দ্রুত শিখে নিচ্ছে। তবে অভিভাবকদেরও শিখতে হবে। ডিজিটাল মাধ্যমে কোথায় আমরা সুরক্ষিত সেই সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়েগুলিতে ডিজিটাল লিটারেসি পড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।’
অনির্বাণ রায়