পাঙ্খিয়া 

West Medinipur News: পাতার তৈরি বিশেষ রেইনকোট, গায়ে একফোঁটাও জল ঢুকবে না! দামে কম কিন্তু মানে ভাল

পশ্চিম মেদিনীপুর: বর্ষাকাল এলে আমরা ব্যবহার করি রেইনকোট। তবে এই সময় যখন মাঠে চাষের কাজ হয় তখন বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বিশেষ এই পোশাক ব্যবহার করে চাষের কাজ করা যায় না। পুরানো দিন থেকেই মানুষ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে এবং বৃষ্টিতে চাষের কাজ করবার সময় এক বিশেষ রেইনকোট ব্যবহার করতেন। যা সম্পূর্ণ তৈরি হত পাতা দিয়ে। শরীরে এক ফোটা জলও প্রবেশ করতে পারত না এই বিশেষ রেইনকোট ভেদ করে। তবে কালের নিয়মে জৌলুস হারিয়েছে এই বিশেষ পোশাক।

আরও পড়ুনঃ বর্ষায় বাড়ছে সংক্রমণ! কী ধরনের রোগ বেশি হয় এইসময়? কী ভাবেই বা সুস্থ থাকবেন? জানুন

গ্রামবাংলায় প্রচলিত একাধিক ব্যবহৃত জিনিস রয়েছে যা হয়ত যুবক প্রজন্ম জানে না। পাঙ্খিয়া নাম শুনেছেন কখনও? হয়ত বা শুনে থাকবেন কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম দেখেনি। বর্ষাকালে চাষের ক্ষেত্রে বৃষ্টির জল থেকে না ভেজার জন্য তাল পাতা দিয়ে বিশেষ রেইনকোট বানাতেন গ্রামীণ এলাকার মানুষ। যাকে গ্রামীণ ভাষায় পাঙ্খিয়া বলা হয়। চাষের কাজ যেমন রোয়াপোতা কিংবা অন্যান্য কাজ করবার সময় বৃষ্টি থেকে বাঁচতে এই পাঙ্খিয়া ব্যবহার করতেন সকলে।তবে বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে এখন হাতে তৈরি পাঙ্খিয়া ব্যবহার করে না কেউ। চাষের কাজেও দেখা যায় না তালপাতার তৈরি এই বিশেষ রেইনকোট। হাতেগোনা কয়েকজন হয়ত ব্যবহার করেন।

গ্রামীণ এলাকায় বহু মানুষ পেশাগতভাবে এই পাঙ্খিয়া বানাতেন। তবে, বর্তমান দিনে সেই চাহিদাও কমেছে। পেশাগতভাবে এই পাঙ্খিয়া বানানো কোনও রকম করে টিকিয়ে রেখেছেন বছর ৬৮ এক বৃদ্ধ। হাতে বানিয়ে বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করেন এই পাঙ্খিয়া। সামান্য দামে বিক্রি হয় তালপাতার তৈরি এই বিশেষ রেইনকোট যা পরিবেশবান্ধব। জানা গিয়েছে, তাল গাছের পাতা এনে, তাকে জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে সেই পাতা শুকিয়ে কেটে একের পর এক পাতা বুনে তৈরি করা হয় এই পাঙ্খিয়া।

পশ্চিম মেদিনীপুরে নারায়ণগড় ব্লকের আসন্দা প্রহরাজপুর গ্রামের অনন্ত বর। তিনি এখনও পাঙ্খিয়া বানিয়ে বিভিন্ন বাজারে কিংবা মেলায় বিক্রি করেন। ছোট থেকে বাবার কাছ থেকে শিখে বানাচ্ছেন পাঙ্খিয়া। তবে, পুরানো দিনের থেকে বর্তমানে চাহিদা কমেছে পাঙ্খিয়ার। বর্তমান সময়ে সেই পাঙ্খিয়া চাহিদা কমেছে। বাজারে বিক্রি রয়েছে ছাতা কিংবা রেনকোটের। বাজারে এক একটি পাঙ্খিয়া বিক্রি হয় ৭০, ৮০ কিংবা বড়গুলো ৯০ টাকা করে।

কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে হাতের তৈরি পাঙ্খিয়া। সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মজেছে নতুন আবিষ্কারে। ফাঁপরে পড়ছেন গ্রামীণ শিল্পীরা। গ্রামীণ শিল্পী ভাটা পড়ায় সমস্যায় গ্রামীণ অর্থনীতিও।

রঞ্জন চন্দ