পশ্চিম মেদিনীপুর: সামান্য চেহারার মানুষ তিনি। বয়সও ৬৫ পেরিয়েছে। চাষাবাদের পাশাপাশি সমানতালে চলে সংস্কৃতি চর্চা। কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প লেখায় কলম থামে না। গ্রামীণ এলাকার নানা সংস্কৃতি-ইতিহাস চর্চা করেন তিনি। প্রান্তিক জেলায় থেকে পৈতৃক জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান। তবে পরিচিতি তাঁর কলমের জন্যই।
তৎকালীন সময়ে স্নাতক পাশ করেছেন, করেছেন বি.এডও। তবে পারিবারিক একফসলি জমিতে চাষাবাদ করা, পুকুর রক্ষণাবেক্ষণ করার কারণে চাকরির জন্য আবেদনও করেননি। তাই জীবন কাটছে সাদামাটাভাবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রান্তিক এই মানুষের কৃতিত্ব জানলে চমকে যাবেন।
জেলার বাংলা-ওড়িশা সীমানা এলাকা, দাঁতন থানার জামুয়াপতি এলাকার বাসিন্দা অতনু নন্দন মাইতি। বরাবরই তিনি সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত। তেমন আড়ম্বর নেই জীবনযাত্রায়। পাঞ্জাবি-পাজামা আর কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগ, এমনই দেখে অভ্যস্ত সকলে। তবে তাঁর গুণ চমকে দিয়েছে সকলকে।
স্কুলজীবন থেকে লেখালেখি শুরু। স্কুলে প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধ এবং কবিতা থেকেই ঝোঁক শুরু। এরপর তিনি কলকাতা-সহ বিভিন্ন পত্রিকায় নানাবিধ লেখা লিখেছেন। দৈনিক এক সংবাদপত্রেও তিনি নিয়মিত নানা প্রবন্ধ ও বিষয়ের উপর লেখালেখি করতেন। এরপর প্রায় ২০ বছর আগেই তিনি একটি পাক্ষিক সংবাদ ও সংস্কৃতি চর্চার পত্রিকা প্রকাশ করছেন। নিজের সম্পাদনাতেই তিনি স্থানীয় ইতিহাস. সংবাদ তাতে তুলে ধরেন। শুধু তা-ই নয় তিনি লোকায়ত সংস্কৃতি, নানা ইতিহাস, গ্রামীণ নানা রীতি নিয়ে লিখেছেন বইও।
আরও পড়ুন: রোজ খাবার পরে পানের নেশা? ভরা পেটে পানপাতা চিবোচ্ছেন? আপনার শরীরে কী ঘটছে জানেন
প্রসঙ্গত বাবা চাকরি করতেন। বাড়িতে তেমন লেখালেখির চল ছিল না। তবে স্কুলজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু। এরপর সেই ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন তিনি। এখনও তাঁর কাছে বহু মানুষ আসেন নানা গ্রামীণ সংস্কৃতি, শিল্প এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানতে। দিব্যি চাষাবাদ করে এভাবে সংস্কৃতি চর্চায় ডুবে অতনু। বহুবার বহু সাহিত্যিক, বিশিষ্টজনদের তিনি চিঠি লিখেছেন, পেয়েছেন চিঠির উত্তরও। তবে সাদামাটা জীবনই যেন বেশি ভাল লাগে তাঁর।
এভাবেই পাজামা-পাঞ্জাবী পড়ে সেই পুরনো সাইকেল নিয়েই তিনি সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েন। চাষাবাদের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা, লেখালেখিতে কাটে সারাদিন। প্রান্তিক জেলায় থেকেই তাঁর এই চর্চাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলের।
রঞ্জন চন্দ