ড্রাগন ফ্রুট চাষ করে আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ 

East Bardhaman News:৭৫ বছর বয়সে একমাত্র এই ফল চাষ করে লাভ করছেন বৃদ্ধ! জলও লাগে না

পূর্ব বর্ধমান: গোলাপি রঙের খাঁজকাটা আকৃতি, অনেকটা হৃৎপিণ্ডের মতো দেখতে। কয়েকবছর আগেও সকলের কাছে অপরিচিত ছিল এই ফল। ইদানীং ঘরে ঘরে জনপ্রিয় ড্রাগন ফ্রুট। স্থানীয় বাজারে এখন এই ফল বিক্রিও হচ্ছে দেদার। চাহিদা বাড়তে বর্তমানে অনেকেই ড্রাগন ফ্রুটের চাষও শুরু করেছেন। সেরকমই পূর্ব বর্ধমানেও ড্রাগন ফ্রুট চাষ করতে দেখা গেল ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধকে। কেতুগ্রাম ১ ব্লকের পালিটা গ্রামের বাসিন্দা উদয়ন ঘোষ। ড্রাগন ফ্রুট চাষ করে আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন তিনি।

এই বয়সে এসে কী ভাবে পেলেন অনুপ্রেরণা? কী ভাবে শুরু করলেন ড্রাগন ফলের চাষ? উদয়ন বলেন, “কৃষি দফতর থেকে গ্রুপের মাধ্যমে একটা ড্রাগন ফ্রুটের বাগান করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তার পর কৃষি দফতর থেকেই আমাকে এই চাষ করার জন্য বলা হয়।” শুরুতে রাজি হননি উদয়ন। পরে লাভের কথা ভেবেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হন। তাঁর কথায়, “যে জায়গায় চাষ করা হয় না, সেই জায়গাতেও এই চাষ করলে অনেক লাভবান হওয়া যাবে।”

আরও পড়ুন: বারে খানাপিনার বিল ১৮হাজার ৭৩০টাকা! বিএমডবলু কাণ্ডে নয়া মোড়

প্রায় তিন বছর ধরে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন উদয়ন। জানান, শুরুতে টাকা লাগলেও পরবর্তী সময়ে কোনও খরচ নেই। স্বল্প পরিশ্রমে এই চাষ করে বছরে ভাল টাকা উপার্জন করা সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন। বাড়ি সংলগ্ন এক ফালি জমিতে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করেছেন উদয়ন। গাছ লাগানো থেকে শুরু করে এখনও গাছের পরিচর্যাকরা এই বয়সে সবটাই একা হাতে সামলান তিনি।

আত্মা প্রকল্পের আওতায় ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করছেন বলে জানান। চাষ করে ইতিমধ্যেই ভাল ফলন হয়েছে তাঁর। বাজারে সেই ফল বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা উপার্জনও করেছেন উদয়ন।

খরচ কেমন? উদয়ন জানান, ১০ কাঠা জমিতে প্রথমে খরচ হয় ৪০ হাজার টাকা। এর পর আর বিশেষ খরচ নেই। শুধু জৈব সার ও কীটনাশক দিতে হয়। তাতেই প্রতি বছর ১০ কাঠা জমি চাষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা রোজগার করা সম্ভব বলে জানান। এমনকি জলও বেশি লাগে না। পরিচর্যার সেরকম কিছু নেই। কাঁটা জাতীয় গাছ বলে ছাগল, গরুর উপদ্রবও কম।

কৃষি দফতরের সাহায্য পেলে আরও বড় আকারে এই চাষ করার ইচ্ছে রয়েছে উদয়নের। ইদানীং গ্রামের অনেকেই উদয়নের কাছে ড্রাগন ফ্রুট চাষের জন্য পরামর্শ নিতে আসেন। কারণ, অন্যান্য চাষের থেকে এই চাষ বেশি লাভজনক, এমনটাই মনে করেন উদয়ন।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী