Report: Mohit Sharma
মোহিত শর্মা, করৌলি: গত সপ্তাহে সৎসঙ্গে যোগ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। উত্তর প্রদেশের হাথরসের সেই ঘটনায় তাজ্জব হয়ে গিয়েছে গোটা দেশ। যে ধর্মগুরুর জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সুরজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে ভোলে বাবার সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর গোপন খবর প্রকাশ্যে আসছে।
উত্তর প্রদেশের হাথরসের সেই মর্মান্তিক ঘটনার পর এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই রাজস্থানের দৌসায় ভোলে বাবার এক বিলাসবহুল আশ্রমের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ওই রাজ্যেরই অলওয়ারেও একই রকম আরও একটি আশ্রমের সন্ধান মিলল। আর এই আশ্রম থেকেই ভোলে বাবার কিছু গোপন তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। নতুন সন্ধান পাওয়া এই আশ্রমটি রয়েছে অলওয়ারের খেরলি শহরতলির সহজপুর গ্রামে। পূর্ব রাজস্থানের দ্বিতীয় বিলাসবহুল এই আশ্রমটি দেড় বিঘা জমির উপরে তৈরি।
ভোলে বাবার এই আশ্রমটির নিরাপত্তাবেষ্টনী এতটাই জোরালো যে, অনুমতি ছাড়া কাকপক্ষীও সেই ফাঁক গলতে পারবে না। আর এই আশ্রমের বাইরে থাকা প্রাচীর এতটাই উঁচু যে বাইরে থেকে কিছুই দেখা যায় না। এমনকী এই আশ্রমে প্রবেশাধিকার নেই স্থানীয় গ্রামবাসীদেরও। তবে গ্রামবাসীদের দাবি, করোনার কালে এই আশ্রমেই থাকতেন বাবা। এমনকী, পরেও মাঝেমধ্যেই বাবার আগমন ঘটত ওই আশ্রমে। এখনও পর্যন্ত বাবার এই আশ্রমে একাধিক বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এমনকী এই আশ্রমে বাবার ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। তবে চমকপ্রদ বিষয় হল, ভোলে বাবার এই আশ্রমে রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা। এই বিলাসবহুল আশ্রমের প্রতিটি ঘরের পাশাপাশি শৌচাগারেও রয়েছে এসি।
গ্রামবাসীদের মতে, যখন ভোলে বাবা এই আশ্রমে আসেন, তখন শুধুমাত্র মহিলা ভক্তদেরই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। বহু সময় আশ্রমে প্রবেশের সময় বাবার ভৃত্যরা ভক্তদের মারধর করেন। যখন ভক্তরা বাধা দেন, তখন বাবার ভৃত্যরা এই প্রহারকে বাবার ‘আশীর্বাদ’ বলে থাকেন। এই আশ্রমে ভোলে বাবার ধর্মোপদেশ দেওয়ার নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। যেখানে বসে তিনি ধর্মোপদেশ দেন। আশ্রমে যাতে ভক্তরা বসতে পারেন, তার জন্য এক বিঘা জমি ফাঁকা রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন– ‘প্রথম দেখাতেই প্রেম’, কীর্তি চক্র সম্মান হাতে বললেন শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের স্ত্রী
ওই গ্রামেরই এক বাসিন্দার কাছ থেকে দেড় বিঘা জমি কিনেছিলেন ভোলে বাবা। এরপর ২০০৯-১০ সাল নাগাদ আশ্রমটি নির্মাণ করেছিলেন বাবা। ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা ওয়ার্ড পঞ্চ ফুল সিং যাদব Local18-কে বলেন যে, ভোলে বাবার ধর্মোপদেশের সময় গ্রামের বাইরে থেকে আসা ভক্তরাই ঢোকার অনুমতি পান। এমনকী আশ্রম থেকে জখম অবস্থায় বেরোতে দেখা যেত ভক্তদের। বাবার দর্শনের জন্যই ভক্তদের প্রহার করতেন বাবার ভৃত্যরা। আর এটাকেই বাবার দর্শনের প্রসাদ বলতেন। সহজপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ভক্তরা ভোলে বাবার চমৎকার দেখে থাকলেও গ্রামবাসীদের এখনও সেই সৌভাগ্য হয়নি। যাঁরাই আশ্রমে আসেন, তাঁরা ভোলে বাবাকে ঈশ্বর হিসেবে পুজো করেন।