দোকান সামলেই ছবি আঁকছেন সুমন

Hooghly News: মুদিখানা সামলেই চলছে স্বপ্ন পূরণ! দোকানে বসে দক্ষ হাতে ছবি আঁকেন উত্তরপাড়ার সুমন

হুগলি: উত্তরপাড়া বাজার এলাকায় জি টি রোড এর ওপরেই রয়েছে এমন এক দোকান যেখানে বসে দোকানদারির সঙ্গে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছেন বছর ২৫-এর যুবক। একদিকে দোকান চালানো অন্যদিকে নিজের শিল্পী সত্ত্বাকে ধরে রাখা। মুদির দোকানে বসেই একের পর এক ছবি এঁকে চলেছেন চলেছে সুমন মোদক। বৃদ্ধ বাবার দোকান সামলানোর সঙ্গে নিজের স্বপ্ন পূরণের প্রস্তুতি দুই কাজে চলছে পরিপূরক ভাবে।

সিনে দুনিয়ার সুপারস্টার থেকে, ক্রিকেট জগতের তারকা কিংবা বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সকলেরই অনবদ্য পোর্ট্রেট ছবি আঁকেন সুমন মোদক। ছোট থেকেই আঁকার প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ। ছবি আঁকার জন্য পড়াশোনায় ক্ষতি হবে সেই নিয়ে বাড়িতে ঝামেলাও হয়েছিল বিস্তর। এক সময় বাড়ির নির্দেশেই তাকে ছাড়তে হয়েছিল ছবি আঁকা। সেই থেকে জেদ ধরেছিলেন বড় হয়ে তিনি নিজেরা ছবি আঁকার স্কুল খুলবেন যেখানে যারা ছবি আঁকা শিখতে ইচ্ছুক তারা বিনামূল্যেই তাদের অঙ্কন শিক্ষা নিতে পারবে। সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এখন সুমন।

আরও পড়ুন-  ভয়ঙ্কর তোলপাড় পরিবর্তন! সূর্য-মঙ্গল-বুধ-শুক্রের বিরাট চালে ভাগ্যের খেলা শুরু…! কারা ভাগ্যবান, কাদের লোকসান? আপনার কপালে কী?

বাবা গৌতম মোদকের একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে উত্তরপাড়া জয় কৃষ্ণ লাইব্রেরীর ঠিক বিপরীতে। সেখানে মুদিখানার সামগ্রীর সঙ্গে বিক্রি হয় সুমনের হাতে আঁকা পোট্রেট ছবি ও। সুমনের কথায়, গ্রাজুয়েশন পাস করে অনেকবার চাকরির চেষ্টা তিনি করেছিলেন কিন্তু তার সুফল মেলেনি। লকডাউনের সময় থেকে দোকানে বসেই দোকান চালাতেন ও ছবি আঁকতেন। আস্তে আস্তে দু-একটা ছবি দোকানের বাইরে বিক্রির জন্য রাখতে শুরু করেন। তার হাতে আঁকা ছবি মানুষের এতটাই পছন্দ হয় যে ছবি রাখার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হতে শুরু হয়। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত ছবি বিক্রি হয়েছে তার দোকান থেকে। মুদির দোকান সামলানোর সঙ্গে সেখানে বসেই চলছে তার ছবি আঁকার কাজ।

আরও পড়ুন-   মাত্র ৭ দিনেই জব্দ! ধমনী থেকে নিংড়ে বার করবে কোলেস্টেরল, শিরায় জমে থাকা ময়লা হবে সাফ, রোজ পাতে রাখুন এই খাবার

এ বিষয়ে তার বাবা গৌতম মোদক তিনি বলেন, তার পারিবারিক ব্যবসা সামলানোর দায়িত্ব এখন তার ছেলের উপরেই। তবে ছেলের যে ছবি আঁকার প্রতি নেশা তাতে তারা পরবর্তীকালে আর কোনওরূপ বাধার সৃষ্টি করেননি। বরং দোকানে বসেই সে ছবি আঁকে। এবং সেই ছবি বিক্রি হয় ভাল দামে। বর্তমানে সে একটি আকার স্কুল করেছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সে আঁকা শেখাচ্ছে। কিছু সময় তো বাইরের রাজ্য থেকেও তার কাছে কাজের জন্য ডাক আসে তারই ছবি আঁকা নিয়ে। পথ চলতি মানুষ জন সুমনের হাতে আঁকা ছবি দেখে তাজ্জব হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল, একজন শিল্পী তার নিজের শিল্প সত্তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সর্বস্তরের প্রচেষ্টা চালায়। ঠিক তেমনি সুমন নিজের সত্তাকে বজায় রাখার জন্য ও একাধারে সংসার সামলানোর জন্য একদিকে মুদিখানার দোকান চালাচ্ছেন অন্য দিকে সেই দোকানে বসেই চলছে তার স্বপ্নের চারকোল সেডের পোর্ট্রেট স্কেচ ।

রাহী হালদার