জলপাইগুড়ি: আইনি ফাঁদে জর্জরিত পান! এই পান পাতা ছিঁড়ে খাওয়া তো দূরের কথা, ধরাও মানা। ভাবছেন কি এমন পান পাতা যে ধরাও নিষেধ! তা হলে জানুন। ডুয়ার্সের জঙ্গলকে অনেকেই বলে থাকেন “অ্যামাজন অফ নর্থ বেঙ্গল”। এর অন্যতম কারণ, আজও বেশিরভাগ পর্যটকদের কাছে ডুয়ার্সের জঙ্গলের বহু সম্পদ সম্পর্কে অজানা। যার মধ্যে অন্যতম গভীর জঙ্গলের জঙ্গলী পান। ডুয়ার্সের গরুমারা লাটাগুড়ি-সহ বিভিন্ন ঘন জঙ্গলের ভেতরেই মেলে এই জঙ্গলী পান। এই পান নামে জঙ্গলী হলেও, স্বাদে চমৎকার।
নব্বইয়ের দশকের পর এই লতা জাতীয় উদ্ভিদ-সহ অন্যান্য বহু কিছুই বন আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই থেকেই জঙ্গলের জলা জায়গায় আপন খেয়ালে বড় বড় গাছ বেয়ে উঠে যাওয়া জঙ্গলী পানের ওপরও বসে নিষেধাজ্ঞার খাড়া।
এই জঙ্গলী পাতা তথা পান খেতেন বনবস্তী এলাকার বাসিন্দারা। এমনকি পড়শি দেশ ভূটানেও পাড়ি দিত এই পান। এই পান বিক্রি করে এবং ভূটানে রফতানি করাই ছিল এলাকাবাসীদের প্রধান জীবিকা। পাশাপাশি গরুমারা জাতীয় পার্কের এক প্রাক্তণ কর্মীর কথায়, আগে জঙ্গলে ডিউটি করতে যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে শুধু চুন আর সুপারি নিয়েই রওনা হতেন তিনি।
তবে এখন জঙ্গল থেকে যে কোনও গাছের পাতা কিংবা ডালপালা তুলে আনাও বেআইনি। তাই জঙ্গলী পানের স্বাদ থেকে যেমন বঞ্চিত হতে হচ্ছে বনবস্তিবাসীদের তেমনই জীবিকা নির্বাহেও ভাটা পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বিকল্প পেশার খোঁজে ছুটতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের। স্বাভাবিকভাবেই ঘন জঙ্গলের অন্যতম ঐতিহ্য জঙ্গলি পানের স্বাদও ভুলতে বসেছে তাঁরা।
সুরজিৎ দে