পূর্ব বর্ধমান: বনদফতরেই বড় হচ্ছে রামু। ছোট্ট হনুমান শাবকের নাম রাখা রয়েছে রামু। আদর, যত্ন এবং স্নেহের সঙ্গে রামুকে বড় করে তুলছেন বনদফতরের কর্মীরা। কখনও দুধের বোতল ধরে দুধ খাচ্ছে। আবার কখনও নিজের খেয়ালে খেলা করছে। আবার অনেক সময় বনকর্মীর কাঁধে চড়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে রামু।
তিন মাসের ছোট্ট হনুমান শাবক রামুকে নিয়ে মেতে উঠেছেন বনদফতরের অফিসার থেকে কর্মী সকলেই। প্রায় দু’মাস আগে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে দলছুট হয়ে পড়েছিল এই হনুমান শাবকটি। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া রেঞ্জের বনদফতরের কর্মীরা শাবকটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ফরেস্ট অফিসে।
কিন্তু তখন এই হনুমান শাবক এতটাই ছোট ছিল যে, তাকে কোথাও ছেড়ে দিতে ভয় পাচ্ছিলেন বনদফতরের কর্মীরা। ছোট অবস্থায় রামুকে ছেড়ে দিলে কুকুরে কামড়ানোর মত আশঙ্কাও থেকেই যাচ্ছিল।সেই কারণে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া বনদফতর সিদ্ধান্ত নেয় কয়েক মাস ছোট্ট শাবকটিকে অফিসে পর্যবেক্ষণে রাখবেন। এবং পরবর্তীতে একটু বড় হলেই তাকে আবার ছেড়ে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে কাটোয়া বনদফতরের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা জানিয়েছেন, “ওকে অনেক ছোট অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। যেহেতু ও ছোট সেকারণে এখন ছেড়ে দিলে ক্ষতি হতে পারে। তাই আমরা ওকে বড় করছি। পরবর্তীকে বড় করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
কাটোয়া বনদফতরের কর্মী সমীর হাজরা রামুকে খুবই যত্ন সহকারে বড় করছেন। তিনি এই ছোট্ট রামুকে দুধ খাওয়ান আবার নিয়ম করে ঘুরতেও নিয়ে যান। হনুমান শাবকরা ছোট থেকেই তাদের মায়ের কাছে গাছে চড়ার প্রশিক্ষণ পায়। কিন্তু এই রামু দলছুট হয়ে পড়েছে। তাই রামুকে গাছে চড়ার প্রশিক্ষণও দেন বনকর্মী সমীর। কাটোয়া বনদফতরেরের পাশে কয়েকজন বালক প্রত্যেকদিন রামুকে দেখার জন্য ভিড় জমায়।
মাঝে মধ্যে রামু তাদের সঙ্গেও খেলা করে। বর্তমানে বনদফতরের সকলের কাছে কয়েক দিনের রামু বড় আদরের হয়ে উঠেছে। সাধারণত বনদফতরের কোনও জীবজন্তু উদ্ধার হলেই তাকে বর্ধমান রমনা বাগান অভয়ারণ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রামুর ক্ষেত্রে ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। কাটোয়া বন দফতরেই বড় হচ্ছে ছোট্ট রামু।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী