দুই পুরুষ ধরে ফুটপাথে ব্যবসা করা চারজন চর্ম কার

Nadia News: ৫০ বছর ধরে দিচ্ছেন পরিষেবা! ফুটপাথে ব্যবসা বন্ধে চর্মকারেরা ফিরছেন দেশে

শান্তিপুর: সম্প্রতি হকার উচ্ছেদের নির্দেশের ফলে প্রায় ৫০ বছর শান্তিপুরে পরিষেবা দেওয়া বিহার থেকে আসা অবশিষ্ট চার চর্মকারও কি ফিরে যেতে চলেছেন দেশে ! জুতো ছিড়লে কিংবা ফুটবল সেলাই করতে এবার কোথায় যাবেন?শান্তিপুর শহরে আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে, যখন ফুটপাথে এত দোকানের রমরমা ছিলনা। কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি তৎকাল পরিষেবা বজায় ছিল সেই আদি অনন্তকাল ধরে। পরিষেবা বলার কারণ পথ চলতি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বড় বড় বাবুরা প্রত্যেকেই রাস্তায় বেরোলে কখনও না কখনও এই বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে, আর তা হল জুতোর ছেড়ার সমস্যা। কারোর চলতে চলতে জুতো ছিড়ে গিয়েছে কিংবা কেউ অফিস কাছারিতে যাওয়ার আগে জুতো পালিশ করতে ভুলে গিয়েছে তাড়াহুড়োয়, আর ঠিক তখনই কিন্তু মনে পড়ে তাদের কথা। যারা চর্মকার অর্থাৎ জুতো সারাইয়ের মিস্ত্রি। যারা তাৎক্ষণিক সেই পরিষেবা না দিলে হয়তো বিড়ম্বনা পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে। শুধু কি জুতো! চামড়ার ব্যাগ, ছাতা, ভলি কিংবা ফুটবল বল সবই মেলে রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি ছাতার নিচে বসা অস্থায়ী এই সার্ভিস সেন্টার থেকে।

আরও পড়ুন: তোলা না দেওয়ার জের! ভরদুপুরে কৃষ্ণনগরের ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করার অভিযোগ

অথচ তাদের কথা অনুযায়ী দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রোদ, জল, ঝড় সহ্য করা সত্ত্বেও গাঁথেননি একটি ইটও। অন্যদিকে কোটি টাকার ব্যবসায়ীও হকার সেজে রাস্তার পাশে ইমারত নির্মাণ করে একের পর এক বাড়িয়ে চলেছেন দোকানের পসরা আর তার ফলেই মানুষজনের চলাচলের অসুবিধা সর্বসাধারণের জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ সেইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্যই আজ পেটে লাথি পড়েছে প্রকৃতপক্ষে অস্থায়ীভাবে দোকান পেতে কাজ করা এই সমস্ত মানুষজনের যারা একটি ত্রিপল পর্যন্ত টাঙাননি গত ৫০ বছর ধরে। এমনকি তাদের দোকানের ছোটখাটো যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম রাখার জন্য পর্যন্ত প্রতিদিন রীতিমতন ভাড়া দিতে হয় আশেপাশের কোন একটি দোকানে নিরাপদে ওই ব্যাগটি রাখার জন্য।

আরও পড়ুন: বাজারে কেমন আছে আলু-পটল-ঝিঙেরা? খোঁজ নিতে সাতসকালে হাজির বিডিও

কম পড়াশোনা জানলেও তারাও জানেন এটা সরকারি জায়গা, এখানে স্থায়ী কিছু করা যায় না । অথচ এত সততা থাকা সত্ত্বেও আজ সকলের দলে পড়েছেন তারাও, উচ্ছেদের বিধানদাতা বাবুরাই হোক কিংবা রক্ষাকর্তা সকলেই তাদের দোকানের খরিদ্দার, সকলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্থায়ী সমাধানের পথ বলতে পারছেন না কেউই। তবে কেউ কেউ ট্রেড লাইসেন্স এর ভিত্তিতে পুনর্বাসনের কথা বললেও তারা জানেন ফুটপাতের জায়গায় কখনো কাগজপত্র হয় না তাই নেই ট্রেড লাইসেন্সও।
এত বছর ধরে শান্তিপুরের সঙ্গে ভাবে যুক্ত হওয়ার পরেও দেশে ফিরে যেতে চায়না মন।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
অতিথি হলেও বেশ পুরনো এই পরিষেবা দেওয়া মানুষগুলোর জন্য পৌরসভা কি আলাদাভাবে কোনও চিন্তা ভাবনা করছে? চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ জানান যাদের রুজি রুটি শুধুমাত্র এই ছোট্ট দোকানের ওপর যারা পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করছে অতীতেও কখনও দখল করার চিন্তাভাবনা করেনি তাদের জন্যও ভাবা হবে।

Mainak Debnath