যেন ভার্চুয়াল লকডাউন। কয়েক ঘণ্টার জন্য অচল হয়ে যায় মাইক্রোসফট। প্রথমে বোঝা যায়নি কী হল। কম্পিউটার স্ক্রিন নীল। রিস্টার্ট করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু বারবার রিস্টার্ট করেও লাভ হচ্ছে না কিছুই। তারপর জানা যায়, গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ক্রাউডস্ট্রাইকের সফটওয়্যার আপডেটের কারণেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মাইক্রোসফট পরিষেবা।
মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তাতেই তোলপাড় পড়ে যায় গোটা বিশ্বে। হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়। দেরি হয় হাজার হাজার বিমানের। যাত্রীদের লাইন পড়ে যায় এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন বিমানবন্দরে। অনলাইনে চেক ইন থেকে বোর্ডিং প্রক্রিয়া সারতে গিয়ে মাথায় হাত। শেষ পর্যন্ত ফিরতে হয় ম্যানুয়াল মোডে।
একই অবস্থা হাসপাতাল থেকে মিডিয়া হাউজেও। ব্রিটেনে অনলাইন বুকিং সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। রোগীদের মেডিক্যাল হিস্ট্রি দেখতে গিয়ে জেরবার হন চিকিৎসকরা। সে দেশের প্রধান বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ লাইভ অনুষ্ঠান বাতিল করে দেয়। এ জন্য দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছে তারা। আমেরিকায় কাজ করছিল না ৯১১ নম্বর। বন্ধ হয়ে যায় জরুরী পরিষেবা।
প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটিও জানিয়েছে, মাইক্রোসফট বিভ্রাটের জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। অষ্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে ব্যাঙ্কগুলি মুখ থুবড়ে পড়ে। লগ ইন করতে সমস্যা হয়। সব মিলিয়ে ত্রাহি রব উঠে যায় প্রায় গোটা বিশ্বেই।
এই ঘটনার পিছনে আসল ‘কালপ্রিট’ হল ক্রাউডস্ট্রাইক। এই আমেরিকান সিকিউরিটি ফার্ম কোম্পানিগুলোকে ‘নিরাপদ আইটি পরিবেশ’ পরিচালনায় সাহায্য করে। র্যানস্যামওয়্যার, সাইবার অ্যাটাক থেকে বাঁচানোই এদের কাজ। পাশাপাশি কোম্পানির ডেটা যাতে চুরি না হয় সেটাও দেখে এরা। সাইবার থ্রেট থেকে রিয়েল টাইম সুরক্ষা প্রদানের জন্য ফ্যালকন সেন্সর আপডেট করেছিল তারা।
ক্রাউডস্ট্রাইক আশ্বস্ত করে বলে, “এটা কোনও নিরাপত্তা হুমকি বা সাইবার অ্যাটাক নয়। উইন্ডোজ হোস্টে সিঙ্গল কনটেন্ট আপডেটের ত্রুটি।“ সিস্টেম ব্যাক আপ এবং চালু হতে “কিছু সময় লাগতে পারে” বলেও জানানো হয়। সোজা কথায়, ফ্যালকন সেন্সর আপডেট করতে গিয়েই গোলযোগ বাঁধে। যা ঠিক করতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।