খুদে ম্যাজিশিয়ান মঞ্চে 

Nadia News: মাত্র আট বছর বয়সী ম্যাজিশিয়ান প্রয়াগ! স্টেজ-শো তে অ্যাসিস্ট্যান্ট তার বাবা মা

নদিয়া: বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল পড়াশোনার সঙ্গে নাচ গান আবৃত্তির মতো গতানুগতিক নয়, ছেলে শিখুক ভিন্ন স্বাদের কিছু। অন্যদিকে ছেলেও ছোটবেলা থেকে আগ্রহী ম্যাজিকে। বিভিন্ন মেলা খেলা কিংবা বিভিন্ন ম্যাজিক শো দেখতে গেলে সেখান থেকেই ম্যাজিক দেখানো সরঞ্জাম এবং সেই সংক্রান্ত বই পত্র কেনার বায়না।

এমনকি তার আবদারের কথা জেনে জন্মদিন কিংবা পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার উপহার হিসাবে পেয়ে থাকে সে সমস্ত ম্যাজিক দেখানোর সামগ্রী এবং বই পত্র। একদিকে বাবা-মার ইচ্ছা অন্যদিকে সন্তানের আগ্রহ এই দুয়ের মেলবন্ধনে মাত্র আট বছর বয়সেই নদিয়ার শান্তিপুরের প্রয়াগ পাল হয়ে উঠেছে সর্বকনিষ্ঠ ম্যাজিশিয়ান।

আরও পড়ুন: বাজ পড়ার সময় ফোন চার্জে? পুড়ে যাবে না তো? বৃষ্টি হোক বা বজ্র, বর্ষায় ফোন ভাল রাখতে কখনও করবেন না এইসব ভুল

তবে শেখার জন্য স্থান এবং বয়স যে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন বাবা-মা। প্রথমে রানাঘাটের একজন ম্যাজিশিয়ানের কাছে ছেলেকে নিয়ে গেলে তিনি পরামর্শ দেন এত ছোটবেলায় শেখার ব্যবস্থা নেই তার কাছে। এরপর ছেলের বায়না মেটাতে সুদূর কলকাতা, সেখানে প্রায় একই অবস্থা হলেও বাচ্চার আগ্রহ দেখে ম্যাজিশিয়ান শিক্ষক রাজি হন। তবে এসবই এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ শেখা এবং স্টেজ শো।

ইতিমধ্যেই জেলা এবং জেলার বাইরে বিভিন্ন শো করে সাড়া ফেলে দিয়েছে প্রয়াগ শুধু তাই নয়। রাজ্যের বেশ কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠিত ম্যাজিশিয়ান তার ম্যাজিক দেখে খুশি হয়ে দিয়েছেন ম্যাজিক দেখানোর সামগ্রী উপহার হিসেবে। বাবা গোপাল পাল বর্তমানে দক্ষিণেশ্বরের বিডিও অফিসে কর্মরত, আগে ছিলেন নদিয়ার ফুলিয়ায়।

তবে আদি বাড়ি শান্তিপুরে মা পায়েল পাল শান্তিপুরেরই মেয়ে। গতকাল শান্তিপুরে এসেছিলেন একটি স্টেজ শো করতে। জন্মদাতা পিতা মাতা বাড়িতে অভিভাবক হিসেবে বকাঝকা করলেও স্টেজে ছেলের প্রধান সহকারি। তবে পড়াশোনার ক্ষেত্রেও খুব সিরিয়াস।

আরও পড়ুন: শনিবারও চলল গুলি! বিদেশ সফর বাতিল হাসিনার, বাংলাদেশের এখন কী পরিস্থিতি?

শুধু ম্যাজিক নয় সে জানে মেন্টালিজম। অর্থাৎ মানুষের ব্রেন পড়ে ফেলার অদ্ভুত ক্ষমতা । অর্থাৎ আপনার চিন্তাভাবনা মানসিকতা এক নিমেষেই বলে দিতে পারে মাত্র কয়েকটি প্রশ্নের পরিবর্তে । আর হাতে কলমে প্রমাণ যদি চান তাহলে প্রয়াগকে আড়াল করে তার দেওয়া পাঁচটি পেনের মধ্যে কোনটিতে আপনি দাগ দিয়েছেন তা সে অনায়াসে বলে দিতে পারে চোখ বাধা অবস্থাতেই। তবে এ সমস্তই সম্পূর্ণ বিজ্ঞান এবং কিছু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ছাড়া আর কিছুই নয়। মন্ত্র তন্ত্র কিংবা বুজরুকি এই সমস্তর বিরুদ্ধেই তার প্রচার। জানায় কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গড়া তার লক্ষ্য।

প্রয়াগের বাবা মায়ের ইচ্ছে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার নয় বড় হয়ে তার ছেলে যেন একজন মস্ত বড় ম্যাজিশিয়ান হয়। কারণ হিসেবে বলেন , প্রথমত সন্তানের আগ্রহ অনুযায়ী তার পড়াশোনা ব্যবস্থা করে দেওয়াই একজন সচেতন বাবা-মার উচিত সেই সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন পেশার সামঞ্জস্য থাকা উচিত। ম্যাজিকের মাধ্যমে সামাজিক বিভিন্ন বার্তা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয় আগামী প্রজন্মের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় । মনোরঞ্জনের সঙ্গে শেখা এবং শেখানো যায় অনেক কিছু।

এবং সেই কারণেই ছোটবেলা থেকেই তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়াচ্ছে তার বাবা-মা। যদিও সরকারিভাবে সুযোগ খুব কম রয়েছে কিন্তু তবুও বড় হয়েও তাকে এই বিষয়ে আরও নানান বিভাগ নিয়েই পড়াশোনা করতে উৎসাহ দেবে তার বাবা-মা বলে এমনটাই জানান।

Mainak Debnath