মহানন্দা নদী

Indigo Harvest: মহানন্দার পাশে পড়ে আছে নীলচাষের প্রাচীন উনুন, পরিত্যক্ত নীলকুঠিতে কান পাতলেই শোনা যায় অত্যাচারিতদের কান্না

পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুর: রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ইটাহারের ইতিহাস আজ প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে ইটাহারের নীলাভ মাটি আর কৃষকদের উপর ব্রিটিশদের অত্যাচার কাহিনী আজও কান পাতলেই শোনা যায় চুড়ামনের ইতিহাসের পাতায়।

১৭৭৭ সালে বাংলায় প্রথম শুরু হয় নীলচাষ । সে সময় ইংরেজ বণিকরা জোর করে কৃষকদের দিয়ে নীল চাষ শুরু করায়। ইংরেজ বণিকরা গ্রামে কুঠি স্থাপন করে নীলচাষের তদারকি করতেন। সেই কুঠি নীলকুঠি নামে পরিচিতি পায়। সেই নীলকুঠি আজও বাংলার আনাচে কানাচে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে কাঁচামালের আমদানি প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় নীলের। ব্রিটিশ আমলে বাংলায় চাষিদের দিয়ে নীল চাষ করিয়ে প্রচুর মুনাফা লুটতেন নীলকর সাহেবরা। বাংলার বিভিন্ন আনাচে-কানাচে সেই সময় তৈরি হয়েছিল নীলকুঠি। সেই নীলকুঠির মধ্যে বড় বড় উনুনে কড়াইয়ে নীল জ্বাল দিয়ে তা থেকে নীল তৈরি করা হত।

এমনই এক নীলকুঠি ছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারে। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের চূড়ামনে এলে আজও দেখতে পারবেন নীলকুঠি। সেখানে একসময় ইংরেজরা প্রজাদের দিয়ে নীলচাষ করাতেন। ব্রিটিশ আমলের কৃষকরা নীল চাষ করতেন এই গ্রামেই। যার নিদর্শন প্রায় শেষ হয়ে গেলেও এখনো এই গ্রামে এলে দেখতে পারবেন নীল তৈরির বিশাল বিশাল উনুনগুলির ভগ্নাংশ । যা রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে আজও পড়ে রয়েছে ।

আরও পড়ুন: পলিমাটির কাশবনে আগমনীর বার্তা, নদীর বুকে ময়ূরপঙ্খীতে আনন্দবিহার…বর্ষায় চলুন তিস্তাপারের বৃত্তান্ত জানতে

ইটাহারের প্রবীণ নাগরিক শ্রীবাস কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ব্রিটিশ আমলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এই ইটাহারের চূড়ামনেই নীলচাষের ব্যবস্থা ছিল। চূড়ামন অঞ্চলের মহানন্দা নদীর পার্শ্ববর্তী শ্মশানের পাশেই আজও ঐতিহাসিক সেই নীলচাষের উনুনগুলো তার সাক্ষী বহন করছে।’’ সেই নিদর্শনগুলিকে সংরক্ষণ করে সেই ঐতিহাসিক স্থানগুলির মাধ্যমে পর্যটন স্থান তৈরি করা যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।