কলকাতা: আজকাল ফল কিনতে গেলে একটাই দৃশ্য চোখে পড়ে। আর সেটা হল – আপেল কিংবা কমলালেবুর মতো ফলের গায়ে স্টিকার সাঁটানো থাকে। দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো বড় শহর থেকে শুরু করে বিহার-উত্তর প্রদেশের ছোট ছোট এলাকাগুলিতেও এই দৃশ্য চোখে পড়বে। তবে ফলের গায়ে স্টিকার সাঁটানো দেখে অধিকাংশ মানুষই ভাবেন যে, এই ফলগুলি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি বা অত্যন্ত ভাল মানের। আর সেগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করানো। আর গুণমান ভাল মানেই তো দাম বেশি। ফলে বেশি দাম দিয়ে ফল কিনতে তো কোনও সমস্যাই নেই। আর ফল বিক্রেতারাও গ্রাহকদের এই মানসিকতার ফায়দা তোলেন। অর্থাৎ ক্রেতাদের অনায়াসে ঠকান তাঁরা।
শপিং মল থেকে শুরু পথের ধারের বিক্রেতাদের কাছেও স্টিকার সাঁটানো ফল পাওয়া যায়। এই ধরনের ফল কিনতে ভালবাসেন খদ্দেররা। অথচ ৯৯ শতাংশ মানুষই এর আসল কারণটা জানেন না। কিন্তু সেই কারণটা ঠিক কী, সেটাই জেনে নেওয়া যাক। আমদানি-রফতানি অথবা ফলের দামের সঙ্গে এই স্টিকারের কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকী, গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের সঙ্গেও এর কোনও যোগ নেই।
আপেল অথবা কমলালেবুর গায়ে চার অঙ্কের স্টিকার দেখলেই তা কেনার আগে সাবধান হতে হবে। আর স্টিকারে লেখা সংখ্যা ৪ দিয়ে শুরু হয়। যেমন – ৪০২৬ অথবা ৪৯৮৭ ইত্যাদি। যদি এমনটা দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে, এই সমস্ত ফল কীটনাশক এবং রাসায়নিক ব্যবহার করেই ফলানো হয়েছে। আর এগুলি স্বল্প দামেই পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এগুলি স্বাস্থ্যের উপকারের বদলে বরং বেশি ক্ষতি করে দেয়।
আরও পড়ুন- মিলল ছাড়পত্র, অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি ভুলে ৩ অগাস্ট থেকেই খুলে যাচ্ছে অ্যাক্রোপলিস মল
আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, কিছু ফলের গায়ে সাঁটানো স্টিকারে পাঁচ অঙ্কের সংখ্যা লেখা থাকে। আর এই সংখ্যাগুলি ৮ দিয়ে শুরু হয়। যেমন – ৮৪১৩১ অথবা ৮৬৫৩২। এমনটা হলে বুঝতে হবে, ফলগুলি জিনগত ভাবে ফলানো হয়েছে। অর্থাৎ এই ফলগুলি প্রাকৃতিক নয়। বরং তা পরীক্ষাগারে তৈরি করা হয়েছে। এগুলির দাম রাসায়নিক ব্যবহার করে ফলানো ফলের দামের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে স্বাস্থ্যের জন্য এগুলি উপকারী হলেও কিছু অপকারিতাও রয়েছে।
তাহলে কোন ধরনের ফল ভাল? আরও এক ধরনের স্টিকারও ফলের গায়ে দেখা যায়। সেই স্টিকারেও পাঁচ অঙ্কের সংখ্যা দেখা যায়। যা শুরু হয় ৯ দিয়ে। যেমন – ৯৩৪৩৫ ইত্যাদি। এমনটা দেখলে বুঝতে হবে যে, এই ফলগুলি সাধারণত জৈব চাষের প্রক্রিয়ার ফলানো। অর্থাৎ এগুলি ফলানোর সময় কীটনাশক এবং রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি। যার জেরে এর দামও হয় বেশি। আর স্বাস্থ্যের দিক থেকে এই ধরনের ফল অত্যন্ত উপকারী।