দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাংলার আকাশে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এখন টানা কদিন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে অঝোর ধারায় বর্ষণ হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। টানা তাপপ্রবাহের পর এই বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে মানুষের জীবনে। তবে এই বৃষ্টির উপযোগিতা এখানেই থেমে থাকছে না। স্বস্তির বৃষ্টিতে এবার আরও মিষ্টি হয়ে উঠবে আপনার বাগানের আম, লিচু। শুধু তার জন্য করতে হবে ছোট্ট একটা কাজ।
আম ও লিচু দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় চাষ হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় এই দুই রসালো ফলের চাষ ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে। তাছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার লিচু বিশ্ব বিখ্যাত। এখান থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি রাজ্যের বাইরেও রফতানি হয় লিচু। তবে টানা তাপপ্রবাহ এবারের লিচু চাষ শেষ করে দিতে বসেছিল। তবে দেরিতে হলেও অবশেষে বৃষ্টি শুরু হাওয়ায় ফলন ভাল হওয়ার পাশাপাশি লিচুর স্বাদও এবার অনেকটা বেশি হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: চাল-চোরকে ধরিয়ে দিল CCTV ফুটেজ!
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকা, যেমন জয়নগর, কুলতলি, বারুইপুর এই সমস্ত গ্রামীণ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লিচু ও আমের চাষ দেখা যায়। শেষে বৃষ্টির দেখা মেলায় হাসি ফুটেছে এখানকার কৃষকদের মুখে। এই প্রসঙ্গে কৃষি বিশেষজ্ঞের মতামত হল, আম বোটা সহ পাড়তে হবে। পাড়ার পর আম উল্টো করে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এতে আটা ঝরে যাবে, আমের গায়ে দাগ লাগবে না। আম কার্বাইড দিয়ে পাকানো উচিত নয়। প্রয়োজনে মাত্রা বুঝে ইথিলিন গ্যাস স্পে করে আম পাকানো যেতে পারে। লিচুর জলসোনা রোগ রুখতে লিচু বাগানে বিভিন্ন দিকে নাইলনের নেট ব্যবহার করতে পারলে এতে গরম হাওয়া থেকে ঠেকানো যাবে। আম ও লিচু পাড়ার দু’সপ্তাহ আগে কার্বেন্ডাজিম ও ম্যানকোজেবের দুটিকে একসাথে মিশিয়ে স্প্রে করলে ছত্রাক জনিত রোগ থেকে বাঁচানো যেতে পারে।
সুমন সাহা
উত্তর দিনাজপুর: বাড়ির উঠোনে শখ করে শসা, লাউ বা কুমড়ো গাছ লাগিয়েছেন? কিন্তু কিছুতেই সেই গাছে ফলন আসছে না? আর চিন্তা নেই। আমাদের এই সহজ টিপস মেনে চলুন, তাহলেই দেখবেন এবার সহজেই বাড়ির উঠোনে শখ করে লাগানো গাছ ফলে ভরে উঠেছে।
বাড়িতে ফলের আশায় অনেকেই নানান রকম গাছ লাগান। কিন্তু বহু সময় দেখা যায় সেই আশা আর বাস্তবায়িত হয় না। এই অবস্থায় কী করনীয়? এ ব্যাপারে কৃষি বিশেষজ্ঞ অবেন দেবশর্মা জানালেন, শসা বা ওই ধরণের যেকোনও লতানো গাছে ফল না এলে কিংবা গাছে পোকামাকড়ের উৎপাত দেখা দিলে বাড়িতে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই মিলবে সমাধান। এর জন্য রসুনের ও পেঁয়াজের খোসা ভালভাবে ছাড়িয়ে নিয়ে একটি পাত্রে জল নিয়ে তাতে ডুবিয়ে রাখুন। এর সঙ্গেই পুরনো আখের গুড় বা খেজুরের গুড় সেই জলের মধ্যে ভালভাবে মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করুন। এবার দ্রবণটি ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। তারপর একটি ছাঁকনির সাহায্যে ছেঁকে নেবেন। সব শেষে ওই দ্রবণের সঙ্গে আরও জল মিশিয়ে সেটিকে কিছুটা পাতলা করুন।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির দেখা নেই, প্রবল তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে ভুট্টা চাষিরা
এই নানান মিশ্রণ দিয়ে তৈরি দ্রবণটিকে এবার বাড়ির উঠোনে লাগানো লতানো গাছের গোড়ায় দিন। তবে এই দ্রবণটি বিকেলের দিকে গাছে দেবেন। প্রতি সাত দিন অন্তর অন্তর এটি ব্যবহার করুন। তাহলেই ম্যাজিকের মত ফল পাবেন। দেখবেন লতা জাতীয় যেকোনও গাছ যেমন শশা, লাউ, চাল কুমড়া ইত্যাদি গাছে কিছুদিনের মধ্যেই ফল চলে এসেছে।
পিয়া গুপ্তা
কোচবিহার: দাবদাহ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আর তা থেকে ক্ষণিকের স্বস্তি পেতে মানুষ ছুটছে ঠান্ডা পানীয়ের দিকে। তবে যারা স্বাস্থ্য সচেতন তাঁরা কিন্তু বাজার চলতি সফট ড্রিঙ্কের বদলে ফলের রস কিংবা ডাবের জলের উপরই ভরসা করছেন। এই কারণেই মূলত গরম পড়তেই ডাব ও ডাবের জলের বিক্রি বেড়ে গিয়ূছে কয়েক গুণ।
এদিকে গ্রীষ্মকালে চাহিদা অনেকটা বেড়ে গেলেও ডাবের পর্যাপ্ত যোগান মিলছে না। ফলে ডাবের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। কোচবিহার শহরের এমনই এক ডাব বিক্রেতা প্রদীপ রায় জানান, গরম যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে দিশেহারা মানুষ। মূলত এই কারণেই ডাবের জলের বিক্রি বেড়েছে অনেকটাই। তবে প্রতিনিয়ত যেভাবে ডাবের বিক্রি বাড়ছে সেই তুলনায় যোগান থাকছে না। তাই দাম অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। যোগানের অভাবে অনেকে ডাব কিনতে এসে দোকান থেকে ফিরে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: অনাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পাট চাষ
এখন গ্রামের দিকের গাছগুলিতে খুব একটা ডাব পাওয়া যায় না। তাই যোগানে ঘাটতি বলে জানাচ্ছেন ডাব ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য, অত্যধিক গরমের ফলে শরীর থেকে ঘাম হয়ে সব জল বেরিয়ে যাচ্ছে। তাই চিকিৎসকরা এই সময় বেশি করে ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এর হাত ধরে শরীরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজের ভারসাম্য বজায় থাকে। কিন্তু দাম ও পর্যাপ্ত যোগানের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই ডাবের জল খেতে পাচ্ছেন না।
সার্থক পণ্ডিত
গরমকাল মানেই ফলের সমাহার৷ এই মরশুমে নানা ধরনের ফলের পশরায় সেজে ওঠে বাজার৷ তীব্র দহনজ্বালা থেকে বাঁচার উপায়ও রয়েছে এই ফলের নানা গুণের বৈশিষ্ট্যেই৷ কিন্তু আমরা অনেকেই অভিযোগ করি বেশিদিন তাজা থাকছে না ফলগুলি৷ কারণ আমরা ঠিকমতো রাখতে বা সংরক্ষণ করতে পারি না৷ অনেক ফলই ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়৷ কিন্তু আমরা ভুলে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিই সেগুলি৷ দেখে নিন কোন কোন ফল কোনওমতেই ফ্রিজেই রাখবেন না৷
কলা
ফ্রিজে কলা রাখলে এর পরিপক্ব হয়ে ওঠার হার কমে যায়৷ দ্রুত কালো হয়ে যায় খোসা৷ স্বাদও হারিয়ে যায়৷ কলা কিনে আনলে সব সময় ফ্রিজের বাইরে রাখুন৷
তরমুজ
গরমেও সব সময় তরমুজ রাখুন রুম টেম্পারেচারে৷ কারণ ফ্রিজে রাখলে এই ফলের অ্যান্টি অক্সিড্যান্টসের হার কমে যায়৷ কমে যায় পুষ্টিমূল্যও৷
আম
ইথিলিন অক্সাইড গ্যাসের কারণে আমও ফ্রিজে রাখলে তাতে দ্রুত কালো ছোপ ধরে যায়৷ পেকেও যায় দ্রুত৷
শশা
অতিরিক্ত ঠান্ডায় রাখলে শশা নষ্ট হয়ে যেতে পারে দ্রুত৷ তাই ৩ দিনের বেশি কখনওই ফ্রিজে রাখবেন না শশা৷
আরও পড়ুন : ফেলে না দিয়ে আমের খোসা খান এভাবে! বশে ব্লাড সুগার, আর্থ্রাইটিস! কমবে হৃদরোগের আশঙ্কাও
পিচ
অতিরিক্ত সময় ফ্রিজে রাখলে পিচফল ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়৷ কম যায় ফলের ফ্লেভারও৷
টম্যাটো
সবজি হিসেবে মান্যতা পেলেও টম্যাটো আদতে ফল৷ ফ্রিজে রাখলে টম্যাটোও ফ্লেভার হারিয়ে স্বাদহীন হয়ে যেতে পারে৷ কাগজের ব্যাগে রুম টেম্পারেচারে রাখুন টম্যাটো৷ তাহলেই দ্রুত পাকবে৷
এই ফলগুলি বাজার থেকে কিনে আনলে চেষ্টা করুন রুম টেম্পারেচারেই রাখতে৷ রেফ্রিজারেটরে রাখবেন না৷ তাহলে অনেক দিন তাজা থাকবে৷ ব্যবহারযোগ্যও থাকবে৷ তবে একটা জিনিস অবশ্যই মনে রাখবেন একমাত্র গোটা অবস্থাতেই রুম টেম্পারেচারে রাখবেন৷ একটুকরো কাটা হয়ে গেলেও ফ্রিজে রাখতেই হবে৷ কারণ খণ্ডিত অবস্থায় যে কোনও খাবারই অনেক বেশি পচনশীল হয়ে যায়৷