ভারত থেকে প্রতিটি ডিম বাংলাদেশ কিনেছে ৪ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) দরে। আমদানি শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ডিমের ক্রয়মূল্য পড়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৭ টাকার কাছাকাছি।

Muhammad Yunus: ‘আমাদের ভুলের কারণে…’, দায়িত্ব নেওয়ার আগেই দেশকে সতর্ক করলেন মহম্মদ ইউনুস! কবে ফিরছেন দেশে?

ঢাকা: অরাজকতা, বিশৃঙ্খলায় লাগাম টেনে কি স্থিরতা ফিরবে বাংলাদেশে? শক্ত হাতে কার্যকর করা যাবে আইনের শাসন? এই সমস্ত প্রত্যাশা পূরণে আপাতত যার দিকে গোটা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নজর রয়েছে, তিনি মহম্মদ ইউনুস৷ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকেই প্রথম থেকে নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে দাবি করে এসেছেন বাংলাদেশের আন্দোলনরত ছাত্ররা৷ মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন জানিয়ে দিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হচ্ছে মহম্মদ ইউনুসকেই৷ বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা নিজেও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন৷ প্রশ্ন হল, শক্ত হাতে কি বাংলাদেশকে সঠিক পথে চালিত করতে পারবেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ? বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই দেশে ফিরছেন ইউনুস।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের আমজনতার জন্য বার্তা দিয়েছেন ইউনুস। তাঁর কথায়, “আমি সাহসী ছাত্রদেরকে অভিনন্দন জানাই, যারা আমাদের দ্বিতীয় বিজয় দিবসকে বাস্তবে রূপ দিতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং অভিনন্দন জানাই দেশের আপামর জনসাধারণকে, যাঁরা ছাত্রদের এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। আসুন, আমরা আমাদের এই নতুন বিজয়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যব্যবহার নিশ্চিত করি। আমাদের কোনও প্রকার ভুলের কারণে আমাদের এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়।”

আরও পড়ুন: কোন দেশের সঙ্গে ভারতের বর্ডার সবথেকে বড় জানেন? পাকিস্তান, চিন নয় কিন্তু! নামটা শুনলেই চমকে উঠবেন

মহম্মদ ইউনুসের সংযোজন, ”আমি সকলকে বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংসা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি এবং ছাত্র ও দলমত নির্বিশেষে সকলকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। আমাদের প্রিয় এই সুন্দর ও বিপুল সম্ভাবনাপূর্ণ দেশটিকে আমাদের নিজেদের ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রক্ষা করা এবং একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের প্রধান কাজ। একটি নতুন পৃথিবী বিনির্মাণে আমাদের তরুণরা প্রস্তুত। অকারণ সহিংসতা করে এই সুযোগটি আমরা হারাতে পারি না। সহিংসতা আমাদের সকলেরই শত্রু। অনুগ্রহ করে শত্রু সৃষ্টি করবেন না। সকলে শান্ত থাকুন এবং দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসুন। অনুগ্রহ করে নিজে শান্ত থাকুন এবং আপনার আশেপাশের সকলকে শান্ত থাকতে সহায়তা করুন।”

প্রসঙ্গত, দারিদ্র দূরীকরণে অবদান রাখার জন্যই ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস৷ কিন্তু নোবেল জয়ের আগে পরে কখনওই সেভাবে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়াননি তিনি৷ যদিও শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারেই ভাল ছিল না৷ বরং, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদকে আইনি হেনস্থারও অভিযোগ উঠেছে৷ ইউনুসের অন্যতম ইতিবাচক দিক হল, পশ্চিমী দুনিয়ার শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বেশি৷

তবে বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার কাজটা ইউনুসের পক্ষে মোটেই সহজ হবে না৷ গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে অন্তত চারশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ মৃতদের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক পুলিশকর্মী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন৷ দেশজুড়ে চলছে লুঠ, খুন, গণহত্যার মতো ঘটনা৷ তার উপর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও খুব একটা স্বস্তিদায়ক জায়গায় নেই৷ হাসিনা সরকারের আমলে পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছুটা গতি এলেও মাঝেমধ্যেই তা থমকে গিয়েছে৷ ফলে বাংলাদেশকে আর্থিক সঙ্কট থেকে বের করে আনতে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারকে পদক্ষেপ করতে হয়েছে৷