কবিগানের লড়াই

Kavigan: হারিয়ে যেতে বসা কবিগান ফিরছে, আকৃষ্ট হচ্ছে নতুন প্রজন্ম

মুর্শিদাবাদ: একটা সময়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছিল গ্রাম বাংলার কবিগান। তবে বর্তমানে আবারও যুব সমাজ মোবাইল ছেড়ে ধীরে ধীরে এই কবিগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে লোক শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে সম্মেলন। সেখানেই কবি গানের প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ নজরে এসেছে।

মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত হয় একদিনের লোকশিল্পীদের নিয়ে সন্মেলন। কান্দি রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী অডিটোরিয়ামে এই সম্মেলনে নজর কাড়ে কবিয়ালদের কবি গানের লড়াই।

বর্তমানে মোবাইলে ফোনে সীমাবদ্ধ যুব সমাজ। ফলে কবি গানের মত বাংলার নিজস্ব প্রাচীন লোকসংস্কৃতি থেকে অনেকেরই নজর দূরে সরে গিয়েছিল। ঢোল বাজনা সানাইয়ের সঙ্গে দুই কবিয়ালের লড়াই একসময় বেশ ভাল‌ই জমে উঠত। তবে আবারও বর্তমানের নতুন প্রজন্ম এই কবিয়াল গান শিখছে, তা তুলেও ধরছে আমজনতার সামনে।

আরও পড়ুন: আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় দেহ নিয়ে বেরোনোর সময় হুলস্থূল, বিক্ষোভ বাম-বিজেপির

কবিগান পরিবেশনকারীদের বলা হয় কবিয়াল। কবিগানে মূলত একাধিক দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা (বাদাবাদি) হয়। যেখানে একদল প্রশ্ন গান (চাপান) গাইবে এবং সেই গান শেষ হলে অপর দলটি তার জবাব গান(উতোর) গাইবে। শেষ পর্যন্ত গানের প্রশ্নোত্তরের টক্করে যে দল সবচেয়ে ভাল বলে বিবেচিত হবে তারাই বিজয়ী হবে। বাংলায় কবিগানের ইতিহাস অত্যন্ত পুরনো। গোঁজলা গুঁই, চারণ কবি মুকুন্দ দাস, হরু ঠাকুর, ভোলা ময়রা, নিতাই বৈরাগী থেকে শুরু করে অ্যান্টনী ফিরিঙ্গি— সকলেই ছিলেন বাংলার বিখ্যাত কবিয়াল।

কবিয়ালদের গান সংগ্রহ ও গবেষণার কাজ করেছিলেন ঈশ্বর গুপ্ত, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক সুশীল কুমার দে প্রমুখ। এই গানে পৌরাণিক, সামাজিক বিভিন্ন প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনও বিষয় হিসেবে উঠে আসে। সব মিলিয়ে জমজমাট গানের লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই আবারও মুর্শিদাবাদের গ্রামের মানুষ ফিরে পেতে চাইছে বাংলার লোকসঙ্গীতের ‘হারানো সুর’।

কৌশিক অধিকারী