যুগজিৎ নন্দ

Independence day 2024: অভিনয়ের দক্ষতা বাঁচিয়েছিল তাদের, স্বাধীনতা সংগ্রামী বাবা-কাকাদের কাহিনি শোনালেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক

পশ্চিম মেদিনীপুর: বয়স তার ৮০ পেরিয়েছে। এখনও তিনি নাটক লেখেন, লেখেন নানা গল্প। শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর নিয়ে তিনি সময় কাটান সাংস্কৃতিক নানা বিষয় নিয়ে। পারিবারে নাটকের চল ছিল, তবে সেই নাটকের বেশ ধরে পরিচয় গোপন করে ব্রিটিশ পুলিশকে ধোকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা ও কাকা। অল্প বয়সের সেই স্মৃতি এখনও টাটকা তাঁর মনে। চোখের সামনে দেখেছেন স্বাধীনতা আন্দোলন।

আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রুখতে বড় দাবি অভিষেকের, কী বললেন তৃণমূল সাংসদ?

যুগজিৎ নন্দ, বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে হলেও কর্মসূত্রে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তার পরিবারের অধিকাংশ শরিকরা থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরে। যুগজিতের ঠাকুমা সারদাময়ী নন্দ ছিলেন লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা অঞ্চলের নেত্রী। পরাধীন ভারতে তিনিও লড়েছেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। বারবার এই নিয়ে ব্রিটিশ পুলিশ হানা দিয়েছে তাঁদের বাড়িতে।

আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে পড়ুয়াদের সমস্ত দাবি দাবি মেনে নিল স্বাস্থ্য দফতর, কী কী পদক্ষেপ?

যুগজিৎ নন্দের বাবা পূর্ণচন্দ্র নন্দ কাজ করতেন খিদিরপুর ডকে। খিদিরপুর ডকে কাজ করা কালীন ভাই প্রেমচাঁদ নন্দকে নিয়ে চলে যান সেখানে। সেখানে পড়াশোনা করতে গিয়ে গান-বাজনার চর্চাও করতেন তিনি। যুগজিতের কাকা অর্থাৎ প্রেমচাঁদ নন্দের সঙ্গে পরিচয় হয় কাজি নজরুল ইসলামের। তাঁকে গান শেখাতেন নজরুল। বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত গেয়ে প্রশংসা জুটেছিল নজরুল ইসলামের থেকে। এরপর ধীরে ধীরে বঙ্গবাসী কলেজে পড়াকালীন জড়িয়ে পড়লেন স্বাধীনতা আন্দোলনে। কারাবাস হয় যুগজিতের বাবার।

বৃদ্ধ যুগজিৎ স্মৃতি হাতড়ে জানান, একদিন বাড়িতে তল্লাশি হয়। চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে ব্রিটিশ পুলিশ। তবে মহিলা ছদ্মবেশ নিয়ে রাতে ব্রিটিশ পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান তাঁর বাবা এবং কাকা। নেপথ্যে নাটক করার অভিজ্ঞতা। আগেই অবশ্য আঁচ পেয়ে ঘর থেকে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন যুগজিৎ বাবুর ঠাকুমা সারদাময়ী দেবী।

এখন যুগজিৎ নন্দের বয়স ৮০ পেরিয়েছে। তবে স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই স্মৃতি আজও টাটকা। কখনও হেসে উঠেন আবার কখনও সেদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শুনলে চোখে জল আসে তাঁর।