Tag Archives: Independence day
Independence Day: স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেও মোদির মুখে নারী সুরক্ষা প্রসঙ্গ!
Independence Day at Red Road: দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা মমতার, ইঙ্গিতবাহী পোস্ট
Independence Day at Digha: দিঘার সমুদ্র সৈকতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন!
Mamata Banerjee: ‘হে ভারত, আজি তোমারি সভায়..’ দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা মমতার, নাম না করে ‘সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল’কে খোঁচা মুখ্যমন্ত্রীর
কলকাতা: আজ দেশের ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস। এদিন দুপুরে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে বিশেষ পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে স্বাধীনতা দিবসের বার্তাতে নাম না করে অন্য রাজনৈতিক দলকে নিশানাও করেছেন মমতা।
‘হে ভারত, আজি তোমারি সভায় শুন এ কবির গান । তোমার চরণে নবীন হরষে এনেছি পূজার দান ।’
রবি ঠাকুরের এই জনপ্রিয় গানের দু’লাইন লিখেই স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লিখেছেন, ‘‘আজ ভারতবর্ষের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। এই পুণ্যভূমিকে চিরতরে স্বাধীন করতে যাঁরা নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ করেছেন, আজকের এই মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁদের সকলকে বিনম্র চিত্তে প্রণাম জানাই। পাশাপাশি, দেশের সকল সহ-নাগরিককে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।’’
‘হে ভারত, আজি তোমারি সভায় শুন এ কবির গান ।
তোমার চরণে নবীন হরষে এনেছি পূজার দান ।’আজ ভারতবর্ষের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। এই পুণ্যভূমিকে চিরতরে স্বাধীন করতে যাঁরা নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ করেছেন, আজকের এই মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁদের সকলকে বিনম্র চিত্তে প্রণাম জানাই। পাশাপাশি, দেশের সকল… pic.twitter.com/sPEAX4QM6s
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 15, 2024
আরও পড়ুন: হোটেলে থাকছেন? বিছানার নীচে জলের বোতল ফেলতে ভুলবেন না! ৯৯% শতাংশ লোকজনই জানেন না কারণ
সেইসঙ্গে মমতা টেনে আনলেন অন্য রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গও। তিনি লেখেন, ‘‘যে নীতি-আদর্শকে শিরোধার্য করে দেশের মানুষ, কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতাকে বুকে জড়িয়েছিল তা আজ কিছু সাম্প্রদায়িক এবং কুচক্রী রাজনৈতিক দলের জন্য ভূলুণ্ঠিত। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচ্চতায় অধিষ্ঠান করার কথা ছিল সেখানে স্বৈরাচারী শক্তির নাগপাশে আজ তা সমাধিস্থ। ’’
আরও পড়ুন: রসুন সবজি নাকি মশলা? উত্তর জানতে শেষমেশ আদালতে! আসল উত্তর জানলে চোখ কপালে উঠবে
স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ পোস্টের শেষাংশে তিনি উল্লেখ্য করেছেন বিপ্লবী বাঘাযতীনের কথা। ‘‘কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা বাঘাযতীন বলে গিয়েছেন, ‘আমরা মরব, আমরা মরে দেশের লোককে জাগিয়ে দিয়ে যাব’, আমরা সেই আদর্শকে পাথেয় করে দেশের সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে আজীবন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’’, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
Independence Day: রেলপথে পৌঁছে ধান্যকুড়িয়ার প্রাচীন এই স্কুলে সভা করে ছিলেন নেতাজি
বসিরহাট: রেলপথে পৌঁছে ধান্যকুড়িয়ার প্রাচীন এই স্কুলে সভা করে ছিলেন নেতাজি। ধান্যকুড়িয়া বসিরহাট মহাকুমার প্রাচীন ইতিহাসের পীঠ স্থান। এলাকায় রাজা আর রাজ্যপাট কোনওটাই আর আগের মতো নেই। কিন্তু প্রাচীন জমিদারদের প্রাসাদ আজও বিদ্যমান। এর মধ্যে আজও স্বমহিমায় ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুল। জানা যায়, সালটা ১৯৩১, মাটিন বার্ন রেলপথে তৎকালীন বসিরহাটের জমিদারদের আস্তানা ধান্যকুড়িয়ে পৌঁছায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস। তাঁকে বরণ করে রীতিমতো র্যালির মাধ্যমে সেখান থেকে ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুলের সামনে তৎকালীন সময়ে স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত ভগিরথ বাহিনী চিনির কলে বক্তৃতা রাখেন। যেখানে তৎকালীন ব্রতচারী ছেলেদের স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বদেশীকতায় উদ্বুদ্ধ করেন।
আরও পড়ুনঃ ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচির আবেদনে সাড়া, বুধ রাতে মেট্রোর সংখ্যা বাড়াল কলকাতা মেট্রো!
বসিরহাটের প্রাচীন জনপদ বলে পরিচিত ধান্যকুড়িয়া। বনেদি এলাকা বলেও তার খ্যাতি আছে। বসিরহাট মহকুমা এলাকার প্রাচীনতম স্কুলের মধ্যে অন্যতম ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুল। এখানকারই পরিচিত ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুল নতুন করে রাজ্য সরকারের হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। এক সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এই স্কুলে এসেছিলেন। ১২ বিঘা জমির উপর এই স্কুল প্রাঙ্গণটি দাঁড়িয়ে আছে।
বহু মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর আবক্ষ মূর্তি আছে এখানে। এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা দেশ-বিদেশে সুনামের সঙ্গে চাকরি করেন। তাঁদের কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ চিকিৎসক বা গবেষক। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত ও হেরিটেজ প্রাপ্র এই স্কুল আজও গর্বের সাথে মাথা তুলে নিজস্বতাকে জানান দেয়।
জুলফিকার মোল্যা
‘স্ত্রী ২’ বনাম ‘খেল খেল মেঁ’ বনাম ‘বেদা’: স্বাধীনতা দিবসে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বক্স অফিসে, প্রতিযোগিতায় এগিয়ে কে? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা…
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বড় বাজেটের তিনটি হিন্দি ছবি মুক্তি পাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হল – রাজকুমার রাও এবং শ্রদ্ধা কাপুরের ‘স্ত্রী ২’, অক্ষয় কুমারের ‘খেল খেল মেঁ’ এবং জন এব্রাহাম ও শর্বরীর ‘বেদা’। কিন্তু বক্স অফিসে কোন ফিল্মটি এগিয়ে রয়েছে, সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
ট্রেড রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে, স্ত্রী ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় ইনস্টলমেন্টই আপাতত এই প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে। Sacnilk-এর রিপোর্টে দাবি, প্রথম দিনের অ্যাডভান্স বুকিং প্রায় ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি। যা সলমন খানের ‘টাইগার ৩’ এবং রণবীর কাপুরের ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান – শিবা’ ছবির প্রি-সেলকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। তবে অন্যদিকে ‘বেদা’ এবং ‘খেল খেল মেঁ’ ছবি নিয়ে গুঞ্জন ততটাও জোরালো নয়।
আরও পড়ুনঃ ‘নারকীয় এবং ভয়ঙ্কর ঘটনা…’ ! আরজি করে মহিলা চিকিৎসক খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইলেন কঙ্গনা
আর মজার বিষয় হল, ১৫ অগাস্টের সময়ে তৃতীয়বারের জন্য একে অপরের মুখোমুখি অক্ষয় এবং জনের ছবি। বুক মাই শো-এর মতে, ‘স্ত্রী ২’ দেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন ২,৪০,০০০ ব্যবহারকারী। ‘বেদা’ এবং ‘খেল খেল মেঁ’ ছবি দেখতে আগ্রহী যথাক্রমে ৩০০০০ এবং ৩৮০০০০ ব্যবহারকারী। তাহলে কি এবারও বক্স অফিসে সেই একপেশে তুমুল প্রতিযোগিতা দেখা যাবে?এই বিষয়ে ট্রেড বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে News18 Showsha।
প্রযোজক এবং ফিল্ম বিজনেস এক্সপার্ট গিরীশ জোহর ‘স্ত্রী ২’-এর উপরেই বাজি রেখেছেন। তাঁর বক্তব্য, অ্যাডভান্স বুকিংয়েই জোর সাড়া মিলেছে। অন্য দু’টি ছবিকে সহজে জায়গা ছাড়বে না। তাঁর মতে, ‘স্ত্রী ২’-এর সূচনা বড়সড় ব্যবসা দিয়েই হতে চলেছে। সব মিলিয়ে দেখতে গেলে প্রথম দিনে প্রায় ২০-২৫ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারে বলে আশা। কিংবা তারও বেশি ব্যবসা হতে পারে।
ট্রেড গুরু অতুল মোহনের আবার বলেন, ‘স্ত্রী ২’ ছবিই এই প্রতিযোগিতায় বিপুল ভাবে জয় লাভ করবে। একপেশে পরিস্থিতিই হয়ে দাঁড়াবে। মনে হচ্ছে যেন, একটাই ছবি রিলিজ করছে। তাঁরও আশা, প্রথম দিনেই ২৫ কোটির ব্যবসা করবে ‘স্ত্রী ২’। এমনকী ৩০ কোটির ব্যবসা করলেও তিনি অবাক হবেন না বলে জানান।
Sacnilk প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ‘বেদা’ ছবির অ্যাডভান্স বুকিং প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। আর ‘খেল খেল মেঁ’ ছবির অ্যাডভান্স বুকিং প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা। অতুল মোহনের বক্তব্য, মূলত সিঙ্গেল স্ক্রিনকেই টার্গেট করছে ‘বেদা’। আবার ‘খেল খেল মেঁ’ ছবির ভাল সুযোগ রয়েছে মাল্টিপ্লেক্সে।
Independence Day: সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতি বুকে নিয়ে উজ্জ্বল বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান
মুর্শিদাবাদ: বৃহস্পতিবার দেশের স্বাধীনতা দিবস। আজও স্বাধীনতা দিবসের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান। স্বপ্ন হেথা টুটেছিল মহাস্বপ্ন আাঁকি…….. এই শব্দ বন্ধ গুলোই যথেষ্ট মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরের ফুসফুস বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান সম্পর্কে বলার জন্য। ১৭৫৭ র পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী দু’শো বছরের জন্য নিকষ অন্ধকার নেমে এসেছিল ভারতের ভাগ্যাকাশে। কিভাবে বণিকের মানদণ্ড দেখা দিয়েছিল রাজদণ্ড রূপে, কিভাবে একটা আস্ত উপমহাদেশ পর্যবসিত হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশে, সে ইতিহাস তো সকলেই জানেন কিন্তু জানেন কি এই ময়দান থেকেই একটা সময়ে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের শুরু হয়েছিল, শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ অর্থাৎ সিপাহী বিদ্রোহ।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে এই ময়দান ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। একদা বাংলা বিহার উড়িষ্যার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্পদশালী রাজধানী মুর্শিদাবাদকে তাদের রাজত্বের কেন্দ্র বিন্দু করতে ভয় পেয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।রাজধানী সরে গিয়েছিল কলকাতায়। পলাশীর যুদ্ধের কয়েক দশক পরে অর্থাৎ ১৭৮৬ সালের ২৫ এপ্রিল স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল মুর্শিদাবাদ।
ঐতিহাসিকরা জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলনের সুচনা হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে যে সিপাহী বিদ্রোহ হয়েছিল, মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ার ছিল সেই মহাবিদ্রোহের সূতিকাগার। ১৮৫৭ সালের ২৬ জানুয়ারি, বহরমপুর ব্যারাক স্কয়ার থেকেই বিদ্রোহের অগ্নিস্ফূলিঙ্গ প্রথমে ব্যারাকপুর, তারপর ধীরে ধীরে গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছিল।
এনফিল্ড রাইফেলের টোটা সহ ইংরেজদের অন্যায় শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বহরমপুর সেনা ছাউনির কিছু সেনার বিদ্রোহে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যারাকপুর সেনা ছাউনির সিপাহী মঙ্গল পান্ডে ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। লড়াইয়ের মাঠে কয়েকজন ইংরেজ সৈন্যকে হত্যা করে শেষে নিজের রিভলভার থেকে নিজের বুকে গুলি করেন তিনি। লুটিয়ে পড়েছিল তাঁর দেহ। সেনা বাহিনীর বিদ্রোহে ভীত ইংরেজরা ভারতীয়দের সবক শেখাতে মঙ্গল পাণ্ডের আহত শরীরকে তুলে নিয়ে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়।
বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ারে আজও আছে মঙ্গল পান্ডের মুর্তি। পলাশীর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার সংলগ্ন চারশো বিঘা জমি লিজ নেয় ইংরেজরা। সিরাজ পরবর্তী সময়ে ইংরেজদের তৈরি ক্রীড়নক নবাবদের ওপর লক্ষ্য রাখতে ব্যারাক স্কোয়ার মাঠের ১২০ বিঘা জমির ওপর তৈরি করা হয় ক্যান্টনমেন্ট। যার নিদর্শন চারিদিকে আজও আছে। বর্গাকার এই ময়দানের চারদিকে রয়েছে চারটি কামান। ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বুকে নিয়ে আজও স্বমহিমায় উজ্জ্বল বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান।
কৌশিক অধিকারী
Independence Day: নামকরণের ইতিহাস থেকে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সাক্ষী নরঘাট
নন্দকুমার: নরঘাটহলদি নদী তীরবর্তী প্রাচীন অঞ্চল। যার নাম করেন এর মধ্যে লুকিয়ে আছে তার ঘৃণ্য ইতিহাস। এক সময় দাসপ্রথা ব্যক্তির জন্য মানুষ কেনাবেচার হাট বসত হলদি নদী তীরবর্তী এই অঞ্চলে। শুধু নামকরণের ইতিহাস নয় নরঘাট বিখ্যাত হয়ে আছে স্বাধীনতার আন্দোলনে। স্বাধীনতা আন্দোলনের লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন এই হলদি নদী তীরবর্তী অঞ্চলে শুরু করেছিল তাম্রলিপ্ত মহাকুমার লবণ সত্যাগ্রহীরা।
১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একচেটিয়া লবণ তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। অবিভক্ত মেদিনীপুরের তমলুক মহাকুমার নরঘাট ছিল ব্রিটিশদের নিমক মহাল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অবিভক্ত মেদিনীপুরের কাঁথি মহাকুমার উপকূলবর্তী এলাকা খেজুরি, হিজলি, বীরকুল, নন্দীগ্রাম, মহিষাদল ও নরঘাটে একচেটিয়া লবণ তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের শ্রমিক হিসাবে কাজে লাগাত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৮০৪ খেজুরিতে লবণ শ্রমিকেরা ন্যায্য পারিশ্রমিক ও কাজের সময় কমানোর দাবিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। যার ঢেউ এসে পড়েছিল নরঘাটে। এখানকার লবণ শ্রমিকরাও বিদ্রোহ শুরু করে।
১৯৩০ সালে গান্ধীজির ডান্ডি অভিযান শুরু করে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দেয়। তমলুকে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হয়। তমলুকের লবণ সত্যাগ্রহীরা লবন তৈরির উদ্দেশ্যে তমলুক রাজবাড়িথেকে নরঘাট এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। আইন অমান্য বা লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হলে তমলুক মহাকুমার ব্রিটিশ বাহিনী দমন-পীড়ন ও নেতাদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। তৎকালীন তাম্রলিপ্ত রাজা সুরেন্দ্র নারায়ণ রায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে লবণ সত্যাগ্রহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নিজের রাজবাড়ির একাংশ ছেড়ে দেয়। সত্যাগ্রহীদের এই রাজবাড়িশিবিরে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের আচার্য হিসাবে সতীশ সামন্ত ও উপাচার্য হিসেবে সুশীল কুমার ধাড়া নির্বাচিত হয়।
১৯৩০ সালে এপ্রিল মাসে লবণ সত্যাগ্রহীরা তমলুক রাজবাড়িথেকে নরঘাট যাত্রা করেছিল লবণ তৈরি করে ইংরেজদের লবণ আইন ভেঙে ফেলার উদ্দেশ্য। লবন তৈরির প্রথম দিনই নরঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয় সতীশচন্দ্র সামন্তকে। দ্বিতীয় দিন গ্রেফতারকরা হয় অজয় মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেক লবণ সত্যাগ্রহীদের। তৃতীয় দিন লবন তৈরির কাজে যুক্ত থাকার সত্যাগ্রহীদের ওপর ব্রিটিশ বাহিনী বর্বরোচিত আক্রমণ করে। ব্রিটিশ বাহিনী দমন-পীড়নে নরঘাটে লবন তৈরির কাজে যুক্ত থাকা সত্যাগ্রহীরা ছত্রভঙ্গ হয়।বর্তমানে নরঘাটের কাছাকাছি মগরাজপুরে দিঘা হাওড়া রেল লাইনের একটি স্টেশন এর নামকরণ হয়েছে লবণ সত্যাগ্রহ স্মারক স্টেশন নামে।
Saikat Shee