পূর্ব বর্ধমান: সমাজ মাধ্যমে বন্ধুত্ব করছেন ? জানেন এর পরিণতি কী ভয়াবহ হতে পারে ! এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব বর্ধমান জেলা। সমাজ মাধ্যম থেকে প্রেম, তারপরই প্রেমিকের হাতে খুন হতে হল প্রেমিকাকে। সমাজ মাধ্যম থেকে হওয়া প্রেমের পরিণতি হল ভয়াবহ। ১৪ অগাস্ট, যেদিন রাজ্য জুড়ে রাত দখল কর্মসূচী পালিত হয়েছিল,সেদিন সন্ধ্যার সময় পূর্ব বর্ধমানের গাংপুর এলাকায় এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল সেই তরুণীকে। অবশেষে গ্রেফতার হল সেই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে মৃত তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বপ্রথম পরিচয় এবং পরবর্তীতে তা প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়।
মৃত তরুণীর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের নান্দুর গ্রামের ঝাপানতলা এলাকায়।অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা গ্রামে। দু’জনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। তাঁরা দু’জনেই ব্যাঙ্গালোরে কাজ করত। মৃত তরুণী বছর দু’য়েক আগে ব্যাঙ্গালোরের একটি শপিং মলে কাজের জন্য গিয়েছিল। তবে অভিযুক্ত যুবক নির্দিষ্ট কোনও কাজ করত না, চুক্তির ভিত্তিতে সে বিভিন্ন কাজ করত। যেদিন তরুণী খুন হয় তার ঠিক দু’দিন আগে ১২ তারিখ তাঁরা একসঙ্গে ফিরেছিল। কিন্তু ১৪ তারিখ ওই তরুণীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনের মধ্যে মত পার্থ্যকের জন্য , কোনও কারণে খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, ” আমরা অভিযুক্তকে খুঁজছিলাম। শুক্রবার রাত্রে আমরা অভিযুক্তকে ধরতে পেরেছি। আমাদের অ্যারেস্ট করতে সময় লাগল কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা তাকে ধরতে পারলাম। আমাদের ২১ জনের একটা টিম গঠন করা হয়েছিল। আমাদের টিমের প্রত্যেকেই টেকনিক্যালি এবং ম্যানুয়ালি ভাল কাজ করেছে। আমরা জানতে পেরেছি, মেয়েটির ওই ছেলেটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এদের মধ্যে কিছু মত পার্থক্য হয়েছিল। সেই জন্য ওই দিন ওই ছেলেটি মেয়েটির কাছে গিয়েছিল। ছেলেটি যখন মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে যায় তখন তাদের মধ্যে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তখন ছেলেটি রেগে গিয়ে মেয়েটিকে খুন করে দেয় ওখানে। আমরা চেষ্টা করব যাতে ছেলেটার সর্বোচ্চ সাজা হয়।”
আরও পড়ুন- বিরাট ক্ষতিকর…! ‘তেলাপিয়া’ মাছ-ই ডেকে আনছে ভয়ঙ্কর বিপদ, যা বলছেন গবেষকরা, শুনলে আঁতকে উঠবেন
এই খুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন এবং বিক্ষোভ হতেও দেখা গিয়েছিল। রীতিমতো এই ঘটনার জেরে উত্তপ্ত ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব বর্ধমান জেলা। তবে অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে খুনের ঘটনার কিনারা করে ফেলল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক ১৪ তারিখের পর থেকে রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় হলেও তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রেম, আর অবশেষে প্রেমিকাকে খুন করল প্রেমিক। জানা গিয়েছে, পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তীতে আরও তথ্য জানা যাবে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী