ঝাড়গ্রাম : একদা মাওবাদী অধ্যুষিত লালগড়ের কথা সকলেরই জানা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল হলেই মাওবাদীদের হাতে নিহতদের মৃত্যুর মিছিলের দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতিটা বদলে গিয়েছে। নেই আর গোলাবারুদের শব্দ। নেই আর যৌথ বাহিনীর ভারী বুটের আওয়াজ। তবুও ফের খবরের শিরোনামে লালগড় থানার পুলিশ।
লালগড় থানার পুলিশ কী এমন কাজ করল, যে ফের খবরের শিরোনামে তারা? রবিবার সকালে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে লালগড় থানার আইসি হাজির হন পুর্নাপানি গ্রামে। কোনও আসামির খোঁজে নয়, হাতে বন্দুকের বদলে ছিল কালো ত্রিপল। পুর্নাপানিতে বসবাস লোধা-শবর সম্প্রদায়ের। বৃষ্টিতে যে সমস্ত লোধা শবরদের ভগ্ন প্রায় বাড়িতে জল পড়ছিল সেই সমস্ত বাড়ি গুলিকে চিহ্নিত করে তা সংস্কার করে দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। আইসি, সাব-ইন্সপেক্টর, এএসআই ,কনস্টেবল, সিভিক ভলেন্টিয়ার সকলে মিলে ভগ্নপ্রায় বাড়ির উপরে ত্রিপল চাপিয়ে, তা সংস্কার করেন।
আরও পড়ুন: এবার মুখ্যমন্ত্রী-পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ, আরজি কর ইস্যুতে FIR-এর আবেদন কৌস্তভ বাগচীর
এছাড়াও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ পরিচালিত দিশা কোচিং সেন্টারে খুদে পড়ুয়াদের হাতে পড়াশোনার সামগ্রী এবং মশা বাহিত রোগের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে স্থানীয়দের হাতে মশারি তুলে দেওয়া হয় লালগড় থানার পক্ষ থেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের এসডিপিও শামীম বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে লালগড় থানার আইসি স্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে লালগড় থানার পুলিশ প্রতিনিয়ত সামাজিক কাজ করে চলেছে। পুর্নাপানি এলাকার যে সমস্ত মানুষজনের বাড়ির অবস্থা বেহাল দশা ছিল, সেগুলিকে আমরা চিহ্নিত করে নিজেরাই সংস্কার করে দিয়েছি। আবার অনেকের হাতে ত্রিপল তুলে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি এখানে ৪০০ জনের হাতে মশারি এবং ১০০ জন স্কুল পড়ুয়ার হাতে পড়াশোনার সামগ্রীও তুলে দেওয়া হয়েছে।”
ভগ্নপ্রায় বাড়ি পুলিশ নিজের উদ্যোগে ত্রিপল দিয়ে সংস্কার করে দিয়েছে, বাড়িতে আর জল পড়বে না তাই এবার মুখে হাসি পুর্নাপানি গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ শবর, যশোদা শবর, ঝুমী শবরদের। বিকাশ বলেন, “বৃষ্টি হলে জল পড়ত বাড়ির মধ্যে। থাকতে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। আজ দেখলাম পুলিশ এসে নিজেরাই আমার বাড়িটি ত্রিপল দিয়ে ঠিক করে দিয়েছে। এবার আর জল পড়বে না। আমি খুবই খুশি।”
—- বুদ্ধদেব বেরা