কলকাতা: মঙ্গলবার আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে উত্তপ্ত হয়েছিল পরিস্থিতি। আন্দোলনকারীদের আটকাতে হাওড়া কলকাতার জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযান শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে অশান্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। জায়গায় জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় আন্দোলনকারীদের। জলকামান ছোড়ে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানে ‘পুলিশি সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ তুলে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। আর সেই সূত্রেই বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ শুরু করেন বিজেপি কর্মীসমর্থকরা। তবে, হুগলির হিন্দমোটরে রেল অবরোধের সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মহিলারা ট্রেনের জানলা দিয়ে দেন আতঙ্কে। ট্রেনের ভিতরে অনেকে কান্নাকাটিও শুরু করেন। অভিযোগ, ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হচ্ছিল, এমনকী মহিলা কামরায় অনেক পুরুষও উঠে যান বলে অভিযোগ ওঠে।
এছাড়া, হুগলি, কাটোয়া, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগরে প্রভাব পড়ে ট্রেন চলাচলে। বিভিন্ন লাইনে পর পর দাঁড়িয়ে পড়ে লোকাল ট্রেন। বিজেপির ডাকা বনধে সকালেই রেল অবরোধ হুগলি স্টেশনে। ব্যান্ডেল-হাওড়া লোকাল আটকে দেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। রেললাইনে শুয়ে পড়েন। ব্যারাকপুর স্টেশনেও রেল অবরোধ করে বিজেপি। রেললাইন ধরে হেঁটে পরিষেবা বিঘ্নিত করেন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। বিজেপির সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে, বনধের বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: স্টেশনে স্টেশনে রেল অবরোধ, শিয়ালদহ-হাওড়া শাখায় ব্যাহত ট্রেন চলাচল, নাজেহাল অফিসযাত্রীরা
এদিকে, বর্ধমান- হাওড়া মেইন লাইন শাখায় বিজেপির ডাকা বনধের সমর্থনে বিজেপি কর্মীরা ট্রেন অবরোধ শুরু করতেই, তৃণমূল কর্মীরা অতর্কিতে আক্রমণ শুরু করে বলে অভিযোগ। দুই পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি, মারপিট শুরু হয়ে যায়। রীতিমতো সংঘর্ষের চেহারা নেয়। ঘটনায় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
অপরদিকে, খড়গপুর স্টেশনে ঢোকা মাত্রই ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। কেউ ট্রেনের লাইনে বসে বিক্ষোভ, তো কেউ ট্রেনে ইঞ্জিনের সামনে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ছুটে আছে আরপিএফ ও জিআরপি এবার বিক্ষোভকারীদের রেললাইন থেকে সরানোর কাজ শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের চ্যাংদোলা করে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের থেকে রেল লাইনের সামনে থেকে সরিয়ে দেয় আরপিএফ ও জিআরপি।