হারমোনিকা বাজাচ্ছেন এক শিল্পী

Bangla Video: খেলায় নয় এবার লিগ বাদ্যযন্ত্রে! হারমনিকার লিগ নদিয়ায়

নদিয়া: ক্রিকেট ফুটবল কিংবা অন্যান্য খেলাধুলোর প্রতিযোগিতার সময় লিগ সিস্টেমের কথা আমরা অনেকেই শুনেছি। কিন্তু সংগীত জগতে লীগ সিস্টেমের কথা কেউ কি শুনেছেন কখনো? হারমোনিকা প্রতিযোগিতার এবার করা হল লিগ সিস্টেমে হাড্ডা হাড্ডি কম্পিটিশন। এই বছরই প্রথমবার হারমোনিকা বাজানোর কম্পিটিশন করা হল লিগ সিস্টেমে, যা এর আগে বিশ্বে কোনও জায়গায় করা হয়নি বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।

হারমোনিকা কনসার্ট হারমোনিকা নিয়ে রেকর্ড ইত্যাদি বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এর আগে, কিন্তু হারমনিকার লীগ হিসেবে কম্পিটিশন এর আগে কোথাও দেখা যায়নি। ডক্টর ববিতা বসু হারমোনিকা বাদ্যযন্ত্রের জগতের অন্যতম পরিচিতি নাম, এছাড়াও চয়ন চক্রবর্তী, গৌরব দাস ইত্যাদি নামকরা হারমোনিকা শিল্পীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

শান্তিপুর ঐক্যতান হারমোনিকা একাডেমী প্রায় ১৫০ জন হারমোনিকা শিল্পীর মধ্যে থেকে যারা বহুদিন ধরে এই বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এবং যারা অভিজ্ঞ তাদেরকে পাঁচটি দলে বিভক্ত করে সেই দলের অন্তর্ভুক্ত করা হয় প্রথমে। এই সমস্ত শিল্পীরা নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে যোগদান করে এই প্রতিযোগিতায়। সেই দলগুলির প্রথমে অধিনায়ক বাছাই করা হয়। এরপর ঠিক আইপিএল খেলার মত করেই যেভাবে নিলাম করে খেলোয়ারদের দলের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ঠিক সেভাবেই নিলামের মাধ্যমে শিল্পীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেই পাঁচটি দলের মধ্যে। তবে এখানে অন্যান্য খেলার মত নিলামে কোনরকম টাকা পয়সার ব্যবহার করা হয়নি, নিলাম হয়েছে পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে। প্রত্যেকটি দলকে ১০০ পয়েন্ট করে দেওয়া হয়, তারা তাদের মত পছন্দের শিল্পীকে পয়েন্টের মাধ্যমে বেছে নিয়েছেন তাদের দলে।

আরও পড়ুন: ইলিশ মাছ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড! বাজারে হানা দিতেই যা মিলল… চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের, জানলে চমকে যাবেন আপনিও

সেই লীগ হিসেবে চারটি রাউন্ড করা হয়। প্রত্যেকটি রাউন্ডে একজন বিগিনার রাখা বাধ্যতামূলক। প্রথম রাউন্ডে হয় বিগিনার রাউন্ড, দ্বিতীয় রাউন্ড হয় রবীন্দ্র সংগীতের ওপর ডুয়েট, তৃতীয় রাউন্ড রাখা হয়েছিল বিশিষ্ট শিল্পীদের পারফরম্যান্স, এবং চতুর্থ রাউন্ড ছিল দলের গ্রুপ পারফরম্যান্স। প্রথম রাউন্ডে ১০ দ্বিতীয় রাউন্ডে ৩০ তৃতীয় রাউন্ডে ২০ এবং ফাইনাল রাউন্ডে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছিল। চারটি রাউন্ড মিলে সর্বমোট নম্বর ছিল ১০০।

উদ্যোক্তারা জানায় চারটি রাউন্ড মিলে প্রত্যেকটি শিল্পীই যথেষ্টই ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এই লীগে। তবে বাজানোর মধ্যে যে কলাকুশলী কিংবা প্রেজেন্টেশন তার মাধ্যমেই নম্বরের ভিত্তি করা হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে অবশ্যই রাখা হয়েছে একটি ট্রফি। যেটি আনা হয়েছিল সুদূর মুম্বাই থেকে। ফাইনাল রাউন্ডের পর দুটি দল যুগ্মভাবে একই নম্বর পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়ন দলদের ট্রফি দেওয়া হয়। এছাড়া অন্য সমস্ত দলগুলিকেই আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। যেহেতু এই বছর প্রথমবার এই প্রতিযোগিতার রাখা হয় সেই কারণে আর্থিক কিছুটা টানাপোড়েনের কারণে সেভাবে পুরস্কারের ঘনঘটা করতে পারেনি তারা। যদিও জানা যায় চ্যাম্পিয়ন দল গুলি এই ট্রফি নির্দিষ্ট সময়ের জন্যেই রাখতে পারবেন তাদের কাছে এরপর সংস্থার কাছে এই ট্রফি ফেরত দেওয়ার পরে তাদেরকে একটি রেপ্লিকার ট্রফি দিয়ে দেওয়া হবে যদি তারা সবসময়য়ের জন্যে তাদের কাছে রেখে দিতে পারবে।

জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও হারমোনিকা শিল্পীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলেন। তবে তারা আবদার করেছিলেন সংস্থাদের কাছে এই প্রতিযোগিতা ভার্চুয়ালি করার জন্য, তবে সংস্থার বক্তব্য ভার্চুয়াল কম্পিটিশন তারা কিছুদিন আগে করেছিলেন, কিন্তু ভার্চুয়ালি এই গ্রুপ পারফর্মেন্স করার পর সেটি বিচার কার্য করা খুবই সমস্যা হয়ে যায়। তবে ভবিষ্যতে তাদের পরিকল্পনা রয়েছে এ বছর শান্তিপুরে এই কম্পিটিশন করা হলেও ভবিষ্যতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই কম্পিটিশনের আয়োজন করার। যাতে প্রত্যেক হারমোনিকা শিল্পীরা এই লীগে অংশগ্রহণ করতে পারে।

মৈনাক দেবনাথ