রামলালের কাহিনী শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে

Success Story: দারিদ্র্যর মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়েননি, পাঁচবারের চেষ্টায় সফল হলেন NEET-এ, রামলালের কাহিনি শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে

NEET Success Story: “কেউ যদি মন থেকে কিছু করতে চায়, হাজার বাধাও তাঁকে থামাতে পারে না।’’ এটা শুধু কথার কথা নয়। জীবনের সার সত্য। রাজস্থানের যুবক তা প্রমাণ করলেন আরও একবার।

ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তে পড়তে বিয়ে হয়ে যায়। বয়স তখন মাত্র ১১ বছর। ২০ বছর বয়সে এক কন্যার পিতা। সংসার, দায়িত্ব কোনও কিছুই টলাতে পারেনি তাঁকে। ডাক্তার হওয়াই ছিল তাঁর পাখির চোখ। অবশেষে সাফল্য মিলল।

চিতোরগড় জেলার ঘোসুন্দা গ্রামের বাসিন্দা রামলাল। দারিদ্র নিত্যসঙ্গী। লেখাপড়ার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে বাড়ি থেকে বিয়ে দিয়ে দেয়। তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তেন। ২০ বছর বয়সে কন্যা সন্তানের জন্মের পর নিট-এর প্রস্তুতি শুরু করেন।

আরও পড়ুন– বিসর্জনের আগে ভগবান গণেশের বিগ্রহের গা থেকে সোনার গয়না খুলতে ভুলে গিয়েছিলেন দম্পতি; তারপর যা হল…

গ্রামের সরকারি স্কুলে পড়েছেন দশম শ্রেণী পর্যন্ত। মেধাবী ছাত্র। একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন বিজ্ঞান নিয়ে। তখন থেকেই বায়োলজির সঙ্গে প্রেম। দ্বাদশ শ্রেণী পাশ করার পর রামলালের কথা দুটো পথ খোলা ছিল। হয় চাকরিবাকরি করে সংসারের হাল ধরবেন। নয়ত ছুটবেন স্বপ্নের পিছনে, ডাক্তার হবেন।

দারিদ্র, সংসারের বোঝা সামলাতে গিয়ে কত স্বপ্নেরই যে অপমৃত্যু ঘটেছে। হয়ত এখানেও তাই হত। কিন্তু রামলাল অন্য ধাতুতে গড়া। তিনি ঠিক করলেন, যা হয় হোক, ডাক্তার তাঁকে হতেই হবে। চলে গেলেন কোটায়। শুরু করলেন নিটের প্রস্তুতি।

আরও পড়ুন– ২০২৪ সালে প্রবাসীদের জন্য বিশ্বের সবথেকে ব্যয়বহুল শহর কোনগুলি? আর ওই তালিকায় ভারতের কোন শহর কত-তম স্থানে রয়েছে?

কিন্তু নিটের খরচ জোগাবে কে? ছেলের জেদ দেখে লোন নেন রামলালের বাবা। আজীবনের সঞ্চয় সমস্ত গয়না বিক্রি করে দেন মা। সেই পয়সা নিয়ে পড়তে যান রামলাল। পিছনে গোটা পরিবারের দু’চোখ ভরা আশা এবং সামনে স্বপ্ন জয়ের হাতছানি।

স্ত্রী ও একরত্তি সন্তানকে ছেড়ে কোটায় বাসা ভাড়া নিলেন রামলাল। শুরু হল এক হার না মানা সংগ্রাম। মোট চারবার নিট পরীক্ষা দিয়েছিলেন, চারবারই ব্যর্থ হন। নম্বরও বলার মতো নয়, ৩৫০, ৩২০, ৩৬২। বাড়িতে কান্নার রোল। রামলালের বাবা বলেছিলেন, পড়াশোনা থাক। এবার চাকরিবাকরি খোঁজার চেষ্টা করাই ভাল।

রামলাল হার মানেননি। পঞ্চমবারে সফল হন। ৭২০-এর মধ্যে পান ৬৩০ নম্বর। অবশেষে এমবিবিএসে ভর্তি হয়েছেন রামলাল। এবার নতুন লড়াই।