বোলপুর ছাতিমতলা 

West Bengal news: ছাতিমতলা থেকেই এই শান্তিনিকেতনের শুরু! জেনে নিন অজানা গল্প

বীরভূম: বীরভূমে অবস্থিত বোলপুর শান্তিনিকেতন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লাল মাটির শহর লালমাটির অঞ্চল এই শান্তিনিকেতন। যে দিকে চোখ যায়, শুধুই সবুজ গাছগাছালি। এক কথায় প্রকৃতির মাঝে লুকিয়ে রয়েছে এই বোলপুর শান্তিনিকেতন। প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্যের পীঠস্থান যেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। বঙ্গজীবনের এক ঐতিহ্য বয়ে বেড়াচ্ছে এই স্থান।

তবে বোলপুর শান্তিনিকেতন তো অনেকবার এসেছেন কোনও দিন ঘুরে দেখেছেন ছাতিমতলা। যদিও বা ঘুরে দেখেছেন তবুও জানেন না হয়তো এই ছাতিমতলার আসল কী রহস্য রয়েছে। এই ছাতিমতলাতেই বোলপুর শান্তিনিকেতনের শুরু। শান্তিনিকেতনের বীজটা এখানেই বপিত হয়েছিল! আগে শান্তিনিকেতনের নাম ছিল ভুবনডাঙা। রায়পুরের জমিদার ভুবন মোহন সিংহের নামানুসারে এই নাম।

আরও পড়ুন: পুজোর আগেই দক্ষিণবঙ্গে মহাবিপদ! সোমবার থেকেই ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা একাধিক জেলায়

রায়পুরের এই সিংহ পরিবারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল। একবার তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষায় সেখানে গেলে ভুবনডাঙায় রাত হয়ে যায়। দৈবক্রমে সেই দিন ছিল জ্যোৎস্নারাত, মাঠের মধ্যে ছিল দুটি ছাতিমগাছ, অপূর্ব সেই দৃশ্য। এই নৈসর্গিক দৃশ্যে অভিভূত হয়ে তিনি ভুবনডাঙার প্রেমে পড়ে যান। সেই ধূসর প্রান্তরের ভিতর এই ছাতিম গাছ দু’টি দেখে তিনি এক ধরনের আত্মিক আকর্ষণ অনুভব করেন।

আরও পড়ুন: ৫৮ জন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ! বড় সাজা হল চিনের আমলার

এরপর এখানে ছাতিমগাছের ছায়ায় তিনি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। এখানে তিনি তাঁর ‘প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ ও আত্মার শান্তি’ পেয়েছিলেন। এই স্থানের আকর্ষণ থেকেই ১৮৬৩ সালের ৩১ মার্চ তিনি রায়পুরের জমিদার ভুবন মোহন সিংহের কাছ থেকে ষোলো আনার বিনিময়ে ছাতিমতলা-সহ ভুবনডাঙার ২০ বিঘা জমি পাট্টা নেন এবং গড়ে তোলেন এক আশ্রম। এই স্থানে খুব ডাকাতের ভয় ছিল। সেই সময় এই স্থানের ডাকাত-সর্দারের নাম ছিল দ্বারী সর্দার। দেবেন্দ্রনাথ এই ডাকাত-সর্দারকে এই স্থানের রক্ষাকর্তা হিসাবে নিয়োগ করেন। এর ফলে ক্রমে ক্রমে এই স্থানে ডাকাতি কমে যায়।বর্তমানে ৭ই পৌষ সকাল ৭.৩০ ঘটিকায় এখানে উপাসনা হয়। কিন্তু সেকালের সেই ছাতিম গাছ দু’টি মরে গেছে। তারপর ঐ জায়গায় দু’টি ছাতিমগাছ রোপণ করা হয়। সেই ছাতিমতলা বর্তমানে ঘেরা আছে সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। তাই এবার বোলপুর শান্তিনিকেতন এলে এই ছাতিমতলা ঘুরতে কোনওভাবেই ভুলবেন না।