শিল্পী মনোজ সামন্ত 

Paschim Medinipur News: শিল্পকে আঁকড়েই দিনযাপন! মূর্তি তৈরি করেই একাধিক পুরস্কার শিল্পীর ঝুলিতে

পশ্চিম মেদিনীপুর: ছোট থেকেই তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর শিল্পকর্মের জন্য নিরন্তর লড়াই। শিল্পকর্ম এবং ভাস্কর্যের সঙ্গে নিজের জীবন কাটাতে প্রতিদিন লড়াই করেছেন রোগের সঙ্গে। সম্প্রতি তাঁর অস্ত্রোপ্রচারও হয়েছে। চিকিৎসকেরা যে ছেলেটিকে ভারী কাজ করতে না করেছিলেন, বিছানায় শুয়ে থাকার উপদেশ দিয়েছিলেন, আজ বিভিন্ন ভাস্কর্য, কাঠ দিয়ে বিভিন্ন থিম ফুটিয়ে তুলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজের বাড়িতেই করেছেন স্টুডিও। তাঁর হাতে তৈরি একাধিক প্রতিকৃতি, বিভিন্ন বিষয়ের উপর কাঠ কিংবা পাথরের তৈরি নানা জিনিস পাড়ি দিচ্ছে জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর হাতে গড়া বিভিন্ন মনীষীদের প্রতিকৃতি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

বয়স যখন সবে ছয়-সাত বছর, তখন থেকেই ফার্মাসিস্টের বিভিন্ন ধরনের এনাটমির বই দেখে ছাপ তুলে গড়তেন বিভিন্ন ধরনের রেপ্লিকা। এরপর থেকেই তিনি এক এক করে বিভিন্ন ভাস্কর্য ও প্রতিকৃতি তৈরি করা শুরু করেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুরারোগ্য হৃদরোগ তাকে আরও বেশি করে আক্রান্ত করে। তবে সেই রোগকে পরোয়া না করে বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি বিভিন্ন জিনিস দিয়ে মূর্তি গড়ছেন। শিল্প নিপুনতায় ফুটিয়ে তুলছেন বিভিন্ন মনীষী, মানুষের প্রতিকৃতি। কাঠ দিয়ে তৈরি করছেন থিমের নানা জিনিস। কোথাও দল বেঁধে চলেছে হাতির পাল, কোথাও আবার মা সন্তানের ভালোবাসা। কাঠের তার হাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বেশিরভাগই মা কেন্দ্রিক। মা সন্তানের ভালোবাসা ফুটে ওঠে তার শিল্পকর্মে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর গ্রামীণের সাঁকোয়া এলাকার বাসিন্দা ভাস্কর মনোজ সামন্ত। যৌথ পরিবারে থাকেন তিনি। বাড়িতেই করেছেন ছোট্ট স্টুডিও। সেখানেই প্রতিদিন চলে তাঁর এই শিল্পের কাজ। কখনও ছেনি-হাতুড়ি ঠুকে পাথরের কিংবা কাঠের বিভিন্ন প্রতিকৃতি, থিমের কাজ ফুটিয়ে তোলেন তিনি। আবার কখনও ফাইবার কিংবা পাথরের বিভিন্ন মনীষীর প্রতিকৃতি তৈরি করেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য স্তরের একাধিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। মিলেছে পুরস্কারও। সম্প্রতি একাধিক সৃষ্টি মূলক কাজের অর্ডারও পারছেন তিনি।

সৃষ্টি যেন তাঁর কাছে অন্তরের আত্মা। ভাস্কর্য তাঁর শিরায় শিরায়। তাই শত শারীরিক অসুস্থতা তাঁকে দমাতে পারেনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মিলেছে সম্মান। তবে প্রচার বিমুখ, অত্যন্ত মিষ্টিভাষী এই ভাস্করের হাতের কাজ এবং শিল্প নিপুণতা মুগ্ধ করবে।

রঞ্জন চন্দ