শান্তিপুর: রাতের ট্রেনে যাত্রী কম থাকলেও শারদীয়ার প্রাক্কালে দেব দেবীর সংখ্যা কিন্তু খুব কম নেই! ধর্মনগরী নদিয়ার প্রতিমা গড়ার শহর শান্তিপুর। অতীতের তাঁত শিল্পীদের মতোই এখানকার মৃৎশিল্পীদের হাতের কাজ সুনামের সঙ্গে পরিচিত জেলা, রাজ্য এমনকি অন্যান্য দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালিদের কাছেও। তাই প্রতিদিন সড়ক কিংবা রেলপথে রওনা প্যান্ডেল প্যান্ডেলে রওনা দিতে শুরু করেছে অনেক প্রতিমা।
সোমবার থেকেই রাত ৮টা ২০ মিনিটের ডাউন শান্তিপুর লোকালে লক্ষ্য করা গেল প্রায় প্রতিটা কামরাতেই একটি করে প্রতিমা। কোনও ক্ষেত্রে ছোট মাপের, কোনও ক্ষেত্রে মাঝারি মাপের প্রতিমা, কোথাও বা সুবিশাল আকৃতির। কোনও প্রতিমাকে তোলা হয়েছে বিক্রেতা কামরাতে তো কোনও প্রতিমা উঠেছে মহিলা কামরাতে। কোনও দুর্গা প্রতিমা আবার নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে বসেছেন ট্রেনের সিটেই, দেখে মনে হবে দেবদেবীরাও যেন ডেইলি প্যাসেঞ্জার হয়ে উঠেছে শারদীয়ার এই মরশুমে।
জেনারেল কম্পার্টমেন্টে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে দুর্গাকেও বসানো হয়েছে সিটে, যাবেন বেলঘড়িয়া। সেখানকার অনিন্দ্য বিশ্বাস জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রায় ১২ বছরের দুর্গাপুজো, প্রতিবারই মিনিয়েচার অর্থাৎ ছোট ঠাকুর দিয়ে পুজো হয়। তবে বিগত তিন বছর ধরে তিনি শান্তিপুরে কুটিরপাড়া নিবাসী অরূপ বঙ্গের কাছ থেকে এই প্রতিমা অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিয়ে থাকেন। শান্তিপুরে আসার পেছনে কারণ হিসেবে তিনি জানাচ্ছেন কলকাতার কুমারটুলি কিংবা তাদের নিজস্ব এলাকাতেও প্রতিমা নির্মাণ হয়, তবে দামের ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য যেমন রয়েছে তেমন শান্তিপুরের মতো সাবেকি মুখের আদল এবং সাজসজ্জা সেখানে পাওয়া যায় না।
অন্য দিকে, শিল্পী অরূপ বঙ্গ জানাচ্ছেন, মিনিয়েচার ঠাকুর হিসাবে এ বছর তিনটি বরাত পেয়েছিলেন যার একটি ট্রেন পথে চলে গেছে মঙ্গলবার একটি যাচ্ছে এবং অপরটি দু-একদিনের মধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে।