শোভাযাত্রা করে তোলা হল ঘট, প্রতিপদে শারদোৎসবের সূচনা হল বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে

Durga Puja 2024: পাথর ভেবে তার উপরে শামুক গুগলি থেঁতো করতেন স্থানীয়রা! বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দিরের ইতিহাস শুনলে চমকে উঠবেন!

বর্ধমান: রীতি মেনে প্রতিপদে ঘট প্রতিষ্ঠা মধ্য দিয়ে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সূচনা হলো। সেই সঙ্গেই নবরাত্রি দুর্গাপূজা শুরু হয়ে গেল বর্ধমানে অধীষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। হোম যজ্ঞের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হল। চলবে নবমী পর্যন্ত।

আরও পড়ুন- কোন বাঙালি খাবার খেয়ে নিটোল যৌবন ধরে রাখেন জাপানিরা? জানেন সেই সিক্রেট?

এদিন সকালে পূজার্চনার পর মন্দির থেকে মায়ের রূপোর ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। ঢাক বাজনা সহ ঘোড়ায় টানা রথের ওপর বিশেষ ছাতার তলায় ঘট নিয়ে বসেন পুরোহিতরা। বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে শোভাযাত্রা যায় কৃষ্ণসায়রে। সেখানে মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ঘট জলপূর্ণ করেন। এরপর তা নিয়ে এসে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। ছিলেন জেলার পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক ও অন্যান্য আধিকারিকরা। অন্যান্যবারের মতো এবারও মহালয়ার পর প্রতিপদে ঘট উত্তোলনের শোভাযাত্রায় অগণিত বাসিন্দা ভিড় করেছিলেন।

এখানে সর্বমঙ্গলা দেবীর মূর্তি কষ্টি পাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী ‘মহিষমর্দিনী’ মহালক্ষীরূপিণী। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির অবিভক্ত বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দির। প্রাচীন এই মন্দির বর্ধমানের মানুষের কাছে পবিত্র তীর্থস্থান। দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের সমাগম হয় এই মন্দিরে।
প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে শহর বর্ধমানের বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ায় বাগদিরা পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে একটি শিলামূর্তি পেয়েছিল। সেটিকে প্রস্তর খণ্ড ভেবে তার উপরে শামুক গুগলি থেঁতো করতো। সেই সময় দামোদর নদ লাগোয়া চুন তৈরির কারখানার জন্য শামুকের খোলা নেওয়ার সময় শিলামূর্তিটি চলে যায় চুন ভাটায়। তখন শামুকের খোলের সঙ্গে শিলামূর্তিটি পোড়ানো হলেও মূর্তির কোনো ক্ষতি হয়নি।

তবে সেই রাতে স্বপ্নাদেশ পাওয়া মাত্র বর্ধমান মহারাজা সঙ্গম রায় শিলামূর্তিটিকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে ১৭০২ সালে টেরাকোটার নিপুণ কারুকার্য খচিত সর্বমঙ্গলা মন্দির নির্মাণ করেন মহারাজাধিরাজ কীর্তিচাঁদ মহতাব। ধীরে ধীরে মূল মন্দিরের আশেপাশে গড়ে ওঠে নাট মন্দির, শ্বেত পাথরের তৈরি রামেশ্বর ও বাণেশ্বর নামে দুটি শিব মন্দির। কালো পাথরে তৈরি হয় মিত্রেশ্বর, চন্দ্রশ্বর ও ইন্দ্রেশ্বর নামে আরও তিনটি শিব মন্দির।

দুর্গা পুজো ২০২৪, ফিচার , পুজো 360, পুজো ইন্টিরিয়র, পুজোর রেসিপি, দুর্গা পুজোর ভ্রমণ, বনেদি বাড়ির পুজো, জেলার পুজো, অন্য পুজো