ঝাড়গ্রাম : জন্ম থেকেই একটি হাত নেই। এক হাত দিয়ে চালাচ্ছে ড্রিল মেশিন, বাটালি, করাত। এক হাত ও দুই পায়ের জোরেই আজ তার হাতের তৈরি কারুকার্য মানুষের মন ছুঁয়েছে। গাছের ডাল, গাছের শিকড়, গাছের গুড়ি,শুকনো ডাব, নারকেল খোলা, বাঁশের গোড়ালি, তালের আঁটি সহ ফেলে দেওয়া নানা জিনিসকে নিজের কারুকার্যর মাধ্যমে বিভিন্ন রূপ দিচ্ছে ঝাড়গ্রামের শিল্পী ষষ্ঠীচরনা আহীর।
ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম ব্লকের রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাজার গ্রামের শিল্পী ষষ্ঠীচরন আহীন এখন পর্যটকদের কাছেও যথেষ্ট পরিচিত। লালবাজার গ্রাম তথা খোয়াব গাঁ যারা বেড়াতে যাই তারা কিন্তু ষষ্ঠীর ‘শৈল্পিক’ নামের কর্মশালা দেখতে ভোলেন না। আর সেই কর্মশালাতেই তার ফুটিয়ে তোলা ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী রয়েছে। সামগ্রী বললে ভুল হবে গাছের শিকড় দিয়ে আস্ত দুর্গাও তৈরি করেছে শিল্পী। যা পর্যটকরা তাদের বাড়িকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার জন্য ক্রয় করে নিয়ে যায়।
গাছের বিভিন্ন আকৃতির শিকড় বা গাছের ডালকে জঙ্গল থেকে কুড়িয়ে এনে তার আকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন পশুপাখি থেকে শুরু করে কীট, পতঙ্গে তৈরি করেন ষষ্ঠী। কখনও আবার ফেলে দেওয়া ডাব, নারকেল দিয়ে বানিয়ে ফেলছে পেঁচা, উইপোকা সহ বিভিন্ন কিছু।
ষষ্ঠীচরন আহীর বলেন,”আমার জন্ম থেকে বাঁ হাতটি ছোট, বাঁ হাত নেই বললেই চলে। একটি হাত না থাকলেও আমি নিজেকে কখনও আর পাঁচজনের থেকে আলাদা মনে করতাম না। কারণ আমি চাষের কাজ সহ বিভিন্ন কাজ করতাম। ২০১৮ সালে কাটুম কুটুমের এই কাজ আমি শিখি। তারপর থেকেই গাছের ডাল, শিকড় সহ ফেলে দেওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে ঘর সাজাবার একাধিক জিনিস তৈরি করে চলেছি। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে শুরু করে বাইরে থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে আমার তৈরি করা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আমার ভালো লাগে যে আমার তৈরি জিনিসগুলি কারও বাড়ির সভা বৃদ্ধি করছে”।
আরও পড়ুনঃ ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেটারদের স্যালারি পার্থক্য জানেন? রোহিত-বিরাটদের ধারে কাছে নেই বাবর-শাহিনরা
অদম্য ইচ্ছা আর চেষ্টা থাকলে সবকিছুই করা সম্ভব তা আরওএকবার প্রমাণিত করে দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের শিল্পী ষষ্ঠীচরন আহীন। পর্যটকদের কাছেও আজ ষষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। আগামী দিনেও এইভাবেই কাজ করে যেতে চান ষষ্ঠী।
বুদ্ধদেব বেরা