Tag Archives: handcrafts

Stone Art: রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর দিয়েই শিল্পীর অনবদ্য সৃষ্টি! দেখলে চোখ জুড়িয়ে ‌যাবে

উত্তর দিনাজপুর: রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর দিয়ে নতুনত্ব সামগ্রী তৈরি করছেন শিক্ষক । রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর যা অমরা সচরাচর তুলেও দেখি না ফেলে দেই সেই পাথর দিয়েই তৈরি হচ্ছে ঘর সাজানোর সামগ্রী। শুনতে অবাক লাগলেও শিক্ষকের বিস্ময়কর আবিস্কার দেখে অবাক সকলে।

প্রাচীন কাল থেকেই পাথর দিয়েই বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কারুশিল্প তৈরি হয়ে আসছে। পাথর খোদাই করে প্রায় সময় ভাস্কর্য, মূর্তি, বা আলংকারিক আইটেম তৈরি হয়ে আসছে। তবে এবার রাস্তার পাথর দিয়েইরক পেইন্টিং করা শেখাচ্ছেন শিক্ষক।পাথরের উপর নকশা বা কিংবা পাথর ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ছবি এঁকে ইতিমধ্যে সকলের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন শিক্ষক দিলীপ দাস। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর বাসিন্দা দিলীপ কুমার দাস। শিক্ষকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত।

আরও পড়ুন- বিরাট ক্ষতিকর…! ‘তেলাপিয়া’ মাছ-ই ডেকে আনছে ভয়ঙ্কর বিপদ, যা বলছেন গবেষকরা, শুনলে আঁতকে উঠবেন

রাস্তা থেকে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড়ো বিভিন্ন সাইজের পাথর সংগ্রহ করে সেই পাথর গুলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পরিস্কার করে তারপর সেই পাথরে প্রয়োজন মতো বিভিন্ন ধরনের রংয়ের ব্যবহার করে কাগজে ও রং তুলির মাধ্যম বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং ফুটিয়ে তুলছেন।

আরও পড়ুন-  বলুন তো, স্ত্রী-রা কি রাখি পড়াতে পারেন স্বামীকে? ৯৯ শতাংশই ‘এই’ ভুলটা করেন, আপনিও কি তাই করছেন? আজই শুধরে নিন…

সাদা কাগজে পাথর দিয়েই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন বিভিন্ন ধরনের ফুল, পাখি এছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশ যা সকলের কাছেই আকর্ষণীয়। পেশায় শিক্ষক দিলীপ বাবু পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপশি বরাবরই নতুন কিছু আবিষ্কারে জোর দেন ছাত্র ছাত্রীদের। দিলীপ দাস জানান, প্রকৃতিতে বিভিন্ন শেপের পাথর আছে। সেই পাথর ফেলে না দিয়ে সেটা দিয়েই যদি নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায় তবে আগামীতে ছাত্র ছাত্রীরা এই পাথর দিয়েই নতুন ভাবে আয়ের উৎস খুঁজে পাবে ।

পিয়া গুপ্তা

East Medinipur News: ৫৬৮ ফুট পটচিত্রে গোটা মহাভারত! মেদিনীপুরের এই পটুয়ার কীর্তি সাড়া ফেলল বিদেশেও

চন্ডিপুর: পটচিত্রে নানা ধরনের কাহিনি উঠে এলেও এই প্রথম পটচিত্রের মাধ্যমে মহাভারতের কাহিনি তুলে ধরলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটুয়া। পটুয়া আবেদ চিত্রকর এবং তাঁর স্ত্রী সায়রা চিত্রকর মহাভারতের কাহিনি পটচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরলেন। চিত্রকর দম্পতির হাতের জাদুতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহাভারতের কাহিনি।

শুধু রাজ্যে নয় দেশে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও পটচিত্রের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন এই চিত্রকর দম্পতি। শুধু পটচিত্র আঁকা নয়, সঙ্গে সঙ্গে গান গেয়ে মহাভারতের কাহিনি বর্ণনা করেছেন তাঁরা।

পটচিত্র একটি অতি প্রাচীন লোকশিল্প। প্রাচীনকালে কাপড় বা কাগজের উপর দেবদেবীর প্রচলিত কাহিনির ছবি এঁকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান গেয়ে পট দেখাতেন কিছু মানুষ। এটাই তাঁদের একমাত্র জীবিকা, লোকে তাঁদের বলতেন ‘পটুয়া’। তাঁরা ‘পটিদার’ নামেও অনেকাংশে পরিচিত ছিলেন।

তাঁদের বেশির ভাগের পদবি সাধারণত ‘চিত্রকর’। মহাভারতের ১৮টি পর্ব ৫৬৮ ফুট পটচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মহাভারতের কাহিনি পটচিত্রে ফুটিয়ে তুলতে সময় লেগেছে ১ বছর ৩ মাস। মহাভারতের আদিপর্ব থেকে দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভা, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, ভীষ্মের শরশয্যা থেকে স্বর্গ আরোহণের পর্ব একের পর এক তুলে ধরা হয়েছে পটচিত্রের মাধ্যমে।

পটচিত্র নিয়ে বিভিন্ন গবেষক দল বার বার এসেছে এই পটচিত্রের গ্রামে। শুধু পটচিত্র অঙ্কন নয়, তার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সর্তকতামূলক বার্তা দেওয়া ও সচেতনতার বার্তা দেওয়ার জন্য বার বার প্রয়াসী হয়েছেন এই পটচিত্রকাররা। মহাভারতের বিভিন্ন চরিত্রের কাহিনিগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন পটচিত্রের তুলির টানে। ধর্মীয় বেড়াজাল ভেঙে শিল্পভাবনা ও ঐতিহ্য মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে পটচিত্রের আঙ্গিকে। এ বিষয়ে শিল্পী আবেদ চিত্রকর জানিয়েছেন, সব সময় ব্যতিক্রমী কিছু কাজ করার নেশা চেপে বসে। সেই নেশা থেকে বৃহত্তম পটচিত্র আঁকার জেদ জন্মায়। সেই জেদ থেকেই মহাভারতের কাহিনি পটচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’

আরও পড়ুন-  সাময়িক ভাবে চালু হলেও ফের বন্ধ বিমান পরিষেবা! ভারত থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালাবে না কোন ২ সংস্থা?

মহাভারত ও রামায়ণ উপখ্যান থেকে চরিত্র খুঁজে নিয়ে উজ্জ্বল রঙে আঁকা হত। পটে আঁকা হত দুর্গাপট ও লক্ষ্মীপট। দিন দিন এই পটচিত্র শিল্প যেন হারিয়ে যাচ্ছে। পটচিত্র নিয়ে বেঁচে থাকতে শিল্পীরা তাঁদের আঁকার মাধ্যম বদলে বর্তমানে মাটির জিনিসপত্র এমনকি পোশাক, আচার থেকে দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রে পটচিত্রের শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলছেন। এবার সেই পটশিল্পীরা সর্ববৃহৎ পটচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন মহাভারতের সম্পূর্ণ কাহিনি। শিল্পী জানান, এই পটচিত্র দেখতে সম্প্রতি বিদেশ থেকে গবেষকের দল আসবেন।

সৈকত শী

West Medinipur News: ফেলে দেওয়া মাছের আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুন্দর জিনিস… না দেখলে বিশ্বাস হবে না

পশ্চিম মেদিনীপুর: তুলো, কাগজ কাপড় কিংবা বিভিন্ন ধরনের ক্লে দিয়ে আপনারা তো গয়না দেখেছেন? আবার ধরুন বিভিন্ন ধরনের রং বা অন্য জিনিস দিয়ে ঘর সাজানোর নানা উপকরণও দেখেছেন। বাজারেও বেশ ভাল দামে বিক্রি হয় এগুলো। কিন্তু জানেন কি মার্কেটে কিংবা আপনার বাড়িতে মাছ ছাড়ানোর পর ফেলে দেওয়া আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জিনিস? যা আপনি দেখলে প্রথমবার বিশ্বাস করবেন না।

মাছের আঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানিয়ে স্বনির্ভর হচ্ছেন গ্রামীণ এলাকার মহিলারা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রান্তিক ব্লক কেশপুর। এই ব্লকের স্ব-সহায়ক দলের মেয়েদের ১৮ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের স্বনির্ভর করতে ফেলে দেওয়া মাছের আঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হ্যান্ডমেড গয়না এমনকি ঘর সাজানোর নানা উপকরণ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতেই মহিলারা তৈরি করছেন নানা জিনিস।

সরকারিভাবে এবং স্থানীয়ভাবে এই সমস্ত জিনিস বিক্রি করে স্বনির্ভর হচ্ছেন মহিলারা। সম্প্রতি সৃষ্টিশ্রী মেলাতে তাঁদের প্রদর্শনীর জন্য ডাকও পেয়েছেন। মাছ ছাড়ানোর পর ফেলে দেওয়া হয় আঁশ। বড় বড় আঁশকে এনে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাকে প্রক্রিয়াকরণ করে কেটে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা হচ্ছে এবং যা দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। বাড়ির অন্য কাজ সামলে মহিলারাই তৈরি করছেন সুন্দর সুন্দর জিনিস। ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো।

ব্লক প্রশাসন জানিয়েছেন, মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে আগামী দিনে এলাকায় একটি বিশেষ হাব তৈরি করা হবে, যেখানে মহিলারা তাঁদের উৎপাদিত নানান হাতের কাজ বিক্রি করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার এই ভাবনা চিন্তাকে এবং ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।

Birbhum News: গাছের তৈরি তানপুরা-গদা-টোপর পাড়ি দেয় বিদেশে, দেখলে অবাক হবেন আপনিও

বীরভূম: ফেলে দেওয়া জিনিস যা তৈরি হচ্ছে দেখলে অবাক হবেন আপনি। নিপুন দক্ষতায় বাতিল জিনিসে তৈরি তাক লাগানো শিল্পকর্ম।গাছের তৈরি তানপুরা, গদা থেকে ঘাস পাতা দিয়ে তৈরি টোপর, কলসি, গয়না, হাতপাখা চোখে পড়ার মত। প্রত্যেক শিল্পকর্মের গায়ে সব কারুকার্য যা নিখুঁত দক্ষতায় সম্পন্ন।বর্ষীয়ান আদিবাসী শিল্পী দেবু মুর্মু আজও কাজ করে চলেছেন নিরলসভাবে। বীরভূমের পাড়ুই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা সরপুকুর ডাঙার বাসিন্দা।তাঁর শৈল্পিক কাজ পাড়ি দিয়েছে দেশ ছাড়িয়ে সুদূর আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জাপান, চীন ও বাংলাদেশে।

তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী, মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্মান জানিয়েছেন তাকে।পেয়েছেন জাতীয় সম্মানও।প্রত্যেক শিল্পকর্মের গায়ে নিখুঁত সব কারুকার্য যা আজও তাক লাগায়। এমনকি পাতা, ঘাস দিয়ে পৌরাণিক কাহিনী, রামায়ণের কাহিনী ও বর্ণিত আছে বিভিন্ন শিল্পকর্মের গায়ে। শিল্পকর্মগুলি প্রত্যক্ষ করে বেশ বোঝা যায় যে, প্রতিটি কাজের নির্দিষ্টতা যেন শিল্পী-ভাস্করদের স্বাধীন চিন্তা- ভাবনাকে ভীষণ ভাবে উন্মুক্ত করেছে। এই উদ্দামতা ও প্রয়োজনীয় সংযম যেন সেই কাজটিকে আরও প্রাঞ্জল করেছে। শিল্পের নিজস্ব একটি ভাষা যেন আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন-    গরমে গোলাপ গাছ শুকিয়ে কাঠ হচ্ছে? এই ৬ জিনিস ‘ধন্বন্তরি’! গোড়ায় দিলেই থোকা থোকা ফুলে ভরবে গাছ, গ্যারান্টি!

সুদূরপ্রসারী ভাবনা, সঙ্কট, সমাজ, দলবদ্ধতা, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, কীটপতঙ্গ, জন্তু-জানোয়ারের জীবন, মুক্তির সন্ধান, স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন, স্মৃতি, জমি- মাটি-ভূখণ্ডের শ্বাস-প্রশ্বাস, জীবনের সীমাবদ্ধতা ও সীমাহীনতা, নতুনত্বের প্রতিষ্ঠা, উত্থান-পতন- এমন বহু ভাবনার সমন্বয় ফুটে উঠেছে শিল্পীর শৈল্পিক ভাবনায়। মানব দেহাবয়ব, পাখি, বাউল- এসব এসেছে আদিবাসী শিল্পীর ভাবনায়।

আরও পড়ুন-    বলুন তো, পৃথিবীর কোন দেশে Jeans পরা নিষেধ? ৯০% মানুষই জানেন না সঠিক উত্তর, নাম শুনলে চমকে যাবেন গ্যারান্টি!

চিত্রকলায় শিল্পীরা নিসর্গ, মুখাকৃতি, বিমূর্ত ধাচে রংরেখা আকার আকৃতির বিন্যাস নিয়ে নিরীক্ষাধর্মী কাজ আজও নিরলস করে চলেছেন বর্ষিয়ান শিল্পী। দেবু মুর্মু বলেন, “শিশু অবস্থা থেকেই নিজের খেয়ালেই তালপাতা, শালপাতা, খেজুর পাতা, কলাগাছ, ঘাস-সহ বিভিন্ন গাছের ছাল, তেতুল গাছের শিকড়, বিভিন্ন গাছের বীজ দিয়ে শিল্পকর্ম শুরু করি। সংসারে নিত্য অভাব। শিল্পকর্ম নিপুনভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য অর্থ ব্যয় করার মত অবস্থা ছিল না। জীবনের বিভিন্ন সময় শিল্প প্রদর্শণীর বৈচিত্র্যময় আয়োজনের অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।”সব মিলিয়ে নিজেদের পেশা আকড়ে ধরে বেঁচে আছেন বহু শিল্পী।

সৌভিক রায়

Cane Craft: প্লাস্টিকের রমরমায় অবলুপ্তির পথে হুগলির বেত শিল্প

হুগলি: একটা সময় ছিল যখন বেতের ঝুরি বা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি হত ঝুড়ি কুলের মতন একাধিক সামগ্রী। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্লাস্টিকের রমরমা বাজারে অবলুপ্তির পথে বেত ও কঞ্চির সামগ্রী। যার ফলে কমছে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা কারিগরদের সংখ্যা। বর্তমান সময়ে হুগলিতে হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার রয়েছে যারা বেতের কুলো, ঝুড়ি এই সমস্ত দৈনন্দিন গৃহস্থলীর সামগ্রী বানানোর কাজে যুক্ত। তবে পরবর্তী প্রজন্ম মুখ ফিরিয়েছে এই কাজ থেকে।

হুগলির ভদ্রেশ্বরের বিঘাটির পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গপুর গ্রামে একটা সময় গ্রামের সমস্ত পরিবার যুক্ত ছিল বেতের কাজের সঙ্গে। ঝুড়ি, কুলো, বেতের চেয়ার এই সমস্ত কিছুই বেত বা কঞ্চি দিয়ে তৈরি করতেন। আজও সেই কাজ করেন, তবে যুক্ত থাকা মানুষের সংখ্যা অনেক কমেছে। সেই সময় বাজারে এই সমস্ত জিনিসের চাহিদাও ছিল ভাল। কিন্তু কালের নিয়মে বেত-কঞ্চির জায়গা নিয়েছে প্লাস্টিক। অনেক কম খরচে ও কম দামে প্লাস্টিকের এই সমস্ত সামগ্রী বাজারজাত হচ্ছে। যার ফলে কমে কমেছে পরিবেশ বান্ধব সামগ্রীর চাহিদা। একটা সময় গৌরাঙ্গপুরের ঘরে ঘরে এই কাজ হলেও বর্তমানে মাত্র দুটি পরিবার যুক্ত রয়েছে ঝুড়ি তৈরির কাজের সঙ্গে।

আর‌ও পড়ুন: টিবি মুক্ত বাঁকুড়া, আদৌ কি সম্ভব? কী বলছেন সরকারি কর্তারা

এই বিষয়ে এক কারিগর জানান, কঞ্চির ঝুরি বানিয়ে বাজারজাত করার কোনও উপায় নেই। তাই হকার সেই ঝুড়ি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন। রিষড়া, হিন্দমোটর, কোন্নগর, উত্তরপাড়ার মত জায়গায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘুরে এই বেতের ঝুড়ি বিক্রি করতে হয়। একটি ঝুড়ি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা দামে। এই কাজ করতে শারীরিক পরিশ্রম ও দক্ষতা দুই’ যথেষ্ট প্রয়োজন। তবে এত পরিশ্রম করেও দিনের শেষে যখন তাঁদের সামগ্রী বিক্রি হয় না তখন হতাশা গ্রাস করে কারিগরদের। সেই কারণেই বহু কারিগর বদলেছেন নিজেদের পেশা।

বিঘাটির গৌরাঙ্গপুরে এখন মাত্র দুটি পরিবার বহন করে আসছে বেত শিল্পের ঐতিহ্য। তবে তাঁরা মনে করছেন তাঁদের পরে আর কেউই এ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না। কারণ পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এত কম উপার্জনে নিজেদের সংসার চালাতে পারবে না। তাই উপার্জন বাড়াতে অন্যান্য কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বাকিরা।

রাহী হালদার

বয়স ৮৫ পেরিয়েছে! এখনও হাতের এমন কাজ, দেখলে চমকে যাবেন

বয়সের ছাপ চোখে মুখে স্পষ্ট। তবে মনের জোর তরুণের মত। সবকিছু সামলেই ছোট থেকে যে নেশায় তিনি বুঁদ হয়ে থাকতেন, এখনও সেই নেশাকেই জিইয়ে রেখেছেন তিনি। বয়সটা এক এক করে ৮৫ পেরিয়েছে। তবে বয়সের ভার দমাতে পারেনি অশীতিপর এই বৃদ্ধ মহিলাকে। বৃদ্ধ হলেও তিনি এখনও ঠিক যেন অষ্টাদশীর মত। তাঁর হাতের কাজ এবং শিল্পের নিপুণতা মন ভরাবে আপনার।

Jalpaiguri News: পর্যটকদের জন্য খুশির খবর! এখানে বেড়াতে গেলেই পেয়ে ‌যাবেন হস্তশিল্পের নানা সম্ভার

জলপাইগুড়ি: এক সময় ডুয়ার্সের পাট শিল্পের খ্যাতি ছিল বিশ্ব জোড়া৷ ক্রমেই যেন মান হারাচ্ছে সেই শিল্প। মুখ থুবড়ে পড়ছে ডুয়ার্সের পাট শিল্পীদের খানিক বাড়তি উপার্জনের পথ। সেই পথ যাতে পুনরায় গতি ফিরে পায় তারই আবেদন জঙ্গল লাগোয়া বাসিন্দাদের।

সালটা ২০০৫। মহিলাদের স্বনির্ভর করার পাশাপাশি বন এবং বন্যপ্রাণ রক্ষার জন্যই মূলত এই উদ্যোগ নিয়েছিল বন দফতর। বর্তমানে এই কাজে যুক্ত রয়েছে এই এলাকার প্রায় ৪৫ জন মহিলা। এছাড়াও এখানে রয়েছে একজন প্রশিক্ষক। প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের হাতে তৈরি করছেন পাটের তৈরি নানান জিনিসপত্র। পাশাপাশি এখানে তৈরি হয় বনজ ধূপকাঠি। গরুমারা জঙ্গল এবং ডুয়ার্সে ঘুরতে আসা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা মহিলাদের তৈরি পাটের জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান।

আরও পড়ুন: ভোটের সকালেই উত্তপ্ত ভাঙড়! একাধিক এলাকায় বোমাবাজি, কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি নির্বাচন কমিশনের

এভাবেই বন দফতরের উদ্যোগে স্বনির্ভর হয়েছে বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামের মহিলারা। পপি, প্রিয়া , রিঙ্কি-দের হাতে এবং যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে পাটের তৈরি ব্যাগ, পাপোশ, মাদুর সহ ঘর সাজানোর নানান উপকরণ। বাড়ির কাজের পাশাপাশি বাড়তি উপার্জনের‌ও পথ‌ খুঁজে পেয়েছেন বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামের এই মহিলারা। ডুয়ার্সের গরুমারা বন্যপ্রাণ শাখার অন্তর্গত দক্ষিণ ধূপঝোরা গাছ বাড়ি এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে তৈরি করা হয়েছে পাটজাত শিল্প। ডুয়ার্সের দক্ষিণ ধূপঝোরা গাছ বাড়ি এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে সরকারি কটেজ। পর্যটকরা বেড়াতে গিয়ে কিনতে পারবেন এইসব হাতে তৈরি জিনিস সহজেই।

সুরজিৎ দে