বীরভূম: বুধবার মহাষষ্ঠী। উদ্যোক্তারা পুরোদমে ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে। এর মধ্যেই দু’টি পুজোর থিম নিয়ে তুমুল চর্চা রামপুরহাটে। শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা দিয়ে এগলে প্রথমেই পড়ে হাটতলা। আরও খানিকটা গেলে ডাক্তারপাড়া। কাছাকাছি দুই এলাকা। পুজোয় এই দুই পাড়ার মধ্যে ভিড় টানার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল মাস দুয়েক আগে থেকে। ডাক্তারপাড়ার নবীন ক্লাব নাকি হাটতলা সর্বজনীন, থিমের লড়াইয়ে কারা এগিয়ে থাকবে, তা নিয়ে প্রতি বছরই জোর টক্কর চলে দুই পুজোর মধ্যে। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। মহালয়ার দিন থেকেই সন্ধ্যা লাগলেই এই দুই পুজো মণ্ডপে কার্যত লাগাম ছাড়া ভিড়।
গত কয়েক বছর ধরে থিম পুজোর আয়োজন করে রামপুরহাট-সহ গোটা জেলাকে চমক দিয়ে আসছে এই দুই পুজো কমিটি। শহরের বিগ বাজেটের পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এই দু’টি। প্রতি বছরই পুজোর থিমে নতুনত্ব আনার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তাঁরা। চলতি বছরে ৭১তম বর্ষে হাটতলা সর্বজনীনের থিম ‘সময়’। মণ্ডপে রয়েছে বিভিন্ন সময়ের ঘড়ি।মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে এই পুজোয় উঠে এসেছে প্রলয় থেকে সৃষ্টি, জাগতিক থেকে মহাজাগতিক এবং অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণের গাথা। রয়েছে মানানসই কুড়ি ফুটের সাবেকি দুর্গা প্রতিমা।
প্রলয়ের প্রতীক হিসাবে মণ্ডপের বাইরে রয়েছে নটরাজ মূর্তি। মণ্ডপের উপরিভাগে শোভা দিচ্ছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। নীচের ভাগে দেখা যাচ্ছে অন্ধকার জগৎ। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা এবং থিম যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, সেই প্রশান্ত রায় বলেন, “মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় দ্বন্দ্ব,হানাহানি,কলুষতায় ভরা সমাজ। পাশাপাশি রয়েছে জাগতিক এই কর্মকাণ্ড থেকে মানুষের উত্তরণ।যা মানুষের চেতনা, মানবিকবোধকে ভর করে এগিয়ে যাবে জাগতিক থেকে মহাজাগতিকের দিকে।অন্ধকার থেকে আলোর পথে।” বিবর্তনের যাত্রাপথে এই সকল মুহূর্ত বাঁধা পড়বে সময়ের বাঁধনে।সেই সঙ্গে রয়েছে মানানসই থিম সং।
তাঁর দাবি, ফি বছর তাঁদের ভাবনা এবং সৃষ্টি দেখতে রামপুরহাট-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের ভিড় জমাতে শুরু করেছে। চলতি বছর এই পুজোর বাজেট রয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা। একদিকে যখন মণ্ডপ থেকে শুরু করে দুর্গা প্রতিমা সাজিয়ে তোলা হয়েছে, ঠিক অন্য দিকে গোটা এলাকা আলোয় আলোকিত করে দেওয়া হয়েছে।
সৌভিক রায়