তুফানগঞ্জ: দীর্ঘ সময় ধরে বাংলার ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে লক্ষ্মীর পটচিত্র। বাংলার অনেক বাড়িতেই এই পটচিত্র দিয়েই লক্ষী দেবীর আরাধনা করা হয়। আর লক্ষ্মী পুজোর আগে তা তৈরিতে মগ্ন হয়ে পড়েন শিল্পীরা। জেলা কোচবিহারের এক শিল্পী দীর্ঘ সময় ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমা এলাকার চিলাখানা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মৃৎশিল্পী এই ব্যক্তি। দীর্ঘ বহু বছর ধরে মাটির সড়ার মধ্যে মা লক্ষ্মীর পটচিত্র এঁকে আসছেন তিনি। এই লক্ষ্মী পটের চাহিদা বাড়ে দুর্গা পুজোর পর থেকে। বংশ পরম্পরায় এই কাজ করেন তিনি।
কোচবিহারের এই এলাকার পটচিত্র শিল্পী অমূল্য পাল জানান,”ছোটবেলা থেকেই অল্প অল্প করে এই জিনিসগুলি তৈরি করতে শিখেছেন। একটা সময় বাড়িতে লক্ষ্মী পুজোর সময় এই জিনিসগুলো দরকার হত। তখন অন্য কারোর কাছ থেকে কিনে আনতে হতো। তারপর নিজেরাই বানাতে শুরু করেন। বর্তমান এটাই তাঁর পেশা। বেশ ভালই লাগে এগুলি বানাতে। লক্ষ্মী পুজোর সময়ে এগুলির চাহিদা অনেকটাই বেড়ে যায়। তখন বাজারের চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিতে হয়। গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এই মাটির সড়াগুলিকে বহু মানুষ তাঁদের ঘর সাজানোর জন্যও নিয়ে গিয়ে থাকেন। এই মাটির পটচিত্রগুলির পাইকারি মুল্য ৪০ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত হয়। তবে বাজারে খুচরা বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর দাম দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ বেড়েও যায়।”
আরও পড়ুনঃ Siliguri News: দুই বঙ্গ সন্তানের অনন্য নজির! বাংলা থেকে প্রথম হল এমনটা! জানলে গর্বিত হবেন আপনিও
মূলত বাড়িতেই এই জিনিসগুলি নিজেদের হাতে তৈরি করে থাকেন এই শিল্পীরা। তারপর রং এবং তুলির টানে লক্ষ্মী আঁকেন তাঁরা। বেশ কিছু পটের মধ্যে লক্ষ্মী ও নারায়ণের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়। কিছুতে শুধুই থাকে দেবী লক্ষ্মীর ছবি। গ্রাম্য এলাকার বিভিন্ন হাট কিংবা বাজারে বিক্রি হয় এসব মাটির সড়া। তবে আধুনিকতার ছাপ কিছুটা হলেও গ্রাস করেছে এই গ্রাম্য ঐতিহ্যকেও। তবুও আজও এই শিল্পীরা এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। দীর্ঘ সময় পরেও এই জিনিসের চাহিদা আজও দেখতে পাওয়া যায় লক্ষ্মী পুজোতে।
Sarthak Pandit