মালাবদল

Bankura News: মালা পরিয়ে, সিঁদুরের টিপ লাগিয়ে বেছে নিন আপনার পছন্দের সঙ্গী, আসল ঘটনা জানলে মাথা ঘুরে যাবে!

বাঁকুড়া: প্রায় ১৫০ বছর আগে শুরু হওয়া এক আজব মেলা অনুষ্ঠিত হলইন্দাসে, মেলায় গেলেই মিলবে নতুন নতুন বন্ধু এবং বান্ধবী, কপালে সিঁদুর, চন্দনের টিপ, মালা পরিয়ে বরণ ডালা দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন একে অপরকে নতুন নতুন বন্ধু বান্ধবীরা, অদ্ভুত এই মেলায় হাজারও লোকের ভিড়। বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস এলাকায় সহেলা স্থানীয় ভাষায় ‘সয়লা’ উৎসবের প্রচলন হয় আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে। জানা যায়. বর্ধমানের রাজার এক সজ্জন নায়েব এলাকায় খাজনা আদায় করতে এসে মানুষের কষ্ট দেখে খুবই ব্যথিত হয়েছিলেন। সেই থেকে বর্ধমান সীমানায় বাঁকুড়ার ইন্দাস এলাকায় বিভিন্ন গ্রামে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মিলন মেলা আরম্ভ হয়। যার নাম হয় ‘সয়লা’। তবে এই উৎসব স্থান ভেদে ৪,৫,৭, ৯ ও ১২ বছর অন্তর হয়।

এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘ অপেক্ষার পর ওই মেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন। একইভাবে ইন্দাস ব্লকের আকুই গ্রামে পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে ‘সয়লা’র মেলা বসেছিল। তারপর পুনরায় ওই উৎসব শুরু হয়। পাঁচ বছর বাদে বন্ধুত্বের মিলন উৎসব ‘সয়লা’য় মাতলেন এলাকার বাসিন্দারা। পছন্দের সই বেছে নেওয়ার অভিনব এই উৎসব উপলক্ষে আকুই হাইস্কুল প্রাঙ্গনে এদিন দুপুর থেকেই হাজার হাজার নারী ও পুরুষ জড়ো হন।

আরও পড়ুন– ১০ টাকার এই কয়েন রয়েছে? মুহূর্তে বদলে যাবে ভাগ্য… বিরাট সুখবর আপনার জন্য, কী করতে হবে জানুন

জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মিলনের এই মেলায় অধিকাংশই তাঁদের পছন্দের বন্ধুকে মাল্যদান, কপালে সিঁদুর, চন্দনের টিপ, বরণ ডালা দিয়ে বরণ করে নেন। তবে এই উৎসবে পুরুষরা পুরুষকে এবং মহিলারা মহিলাদেরকেই বন্ধু হিসাবে বরণ করেন। এবং বালক, বালিকা থেকে শুরু করে প্রবীনরাও উৎসবে সামিল হন। প্রত্যেকেই বরণের পর আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে বন্ধুত্বকে স্বীকার করেন।

আরও পড়ুনদিঘার সমুদ্রে দানবীয়…! ছুটে এল কাতারে কাতারে মানুষ, ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখলে আঁতকে উঠবেন আপনিও

সয়লার প্রস্তুতি শুরু হয় একমাস আগে থেকেই। প্রথা অনুযায়ী গ্রামের সমস্ত দেবদেবীদের মন্দিরে গিয়ে পান, সুপারি ও গোটা হলুদ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিমন্ত্রণ করা হয়। স্থানীয় ভাষায় ওই লোকাচারকে ‘গোয়া চালানো’ বলে। সয়লার দিন আকুই স্কুল সংলগ্ন মনসা মন্দির থেকে শোভাযাত্রা-সহকারে দেবদেবী ও তাঁর সহচর সঙ্গীদের আকুই স্কুলমাঠে স্থায়ী মঞ্চে আনা হয়। এবং সেখানে বিশেষ পুজো পাঠ করা হয়। তারপর প্রথা অনুযায়ী উৎসব শুরু হয়। ওই উপলক্ষে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে আত্মীয়রা আসেন।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী