দার্জিলিং: উত্তরবঙ্গ যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর তেমনি উত্তরবঙ্গে রয়েছে বহু পুরনো ঐতিহ্যের ছোঁয়া। পাহাড়ের কোলে কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ আমলের এই নেতাজির বাড়ি ঘিরে রয়েছে নানা অজানা তথ্য। বর্তমানে কার্শিয়াং পাহাড়ে নেতাজির স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এই বাড়ি দেখতে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের।।
এই ঐতিহাসিক বাড়িটি এখন নেতাজি যাদুঘর, যা নেতাজি ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজের অধীনে রয়েছে। এখান থেকে তিনি তাঁর স্ত্রী এমিলিকে লেখা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চিঠি-সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ১৯৩৬ সালে, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে ছিলেন। জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ সরকার তাঁকে বন্দি করে এই বাড়িতেই রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝুন, হলদে-নোংরা দাঁত পরিষ্কার করার সহজ উপায় জানুন! ঝকঝক করবে হাসি
২০০৫ সালে এই বাড়িটি কলকাতা যাদুঘরের অধীনে একটি যাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। নেতাজির লেখা সমস্ত চিঠি এখানে সাবধানে সংরক্ষিত রয়েছে। সেই সঙ্গে, নেতাজি ব্যবহার করা খাট, মেকআপ টেবিল, লেখার টেবিল এবং চেয়ারও এখানে রয়েছে। নেতাজির বড় ভাই শরৎচন্দ্র বোস ১৯৩৪ সালে এখানে একটি ক্যামেলিয়া গাছ লাগান, যা আজও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে নতুন করে খোলাই জাদুঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পদমবাহাদুর ছেত্রী বলে নেতাজির বড় ভাই শরৎচন্দ্র বোস ১৯২২ সালে তখনকার অসমের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ পিটার লেসলি থেকে এই বাড়িটি কিনেছিলেন।
আরও পড়ুন: রুটিগুলো বেশি ফোলা, মুখে দিতেই ‘সেই’ গন্ধ! আটায় যা মাখালেন পরিচারিকা, ভিডিও দেখে শিউরে উঠবেন
এই বাড়িটি ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বসু পরিবারের অধীনে ছিল। রাজ্য সরকার ১৯৯৭ সালে বাড়িটি পুনঃনির্মাণ করে। ২০০০ সালে এটি একটি নতুন যাদুঘর হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। নেতাজি এখানে বসে হরিপুরা কংগ্রেসের ভাষণ লিখেছিলেন। তিনি এখান থেকে গান্ধিজি ও জওহরলাল নেহেরুর উদ্দেশে চিঠিও লিখেছিলেন।
বসু পরিবারের সদস্যরা প্রতি বছর গ্রীষ্মের ছুটি বা পুজোর ছুটিতে এই বাড়িটি পরিদর্শন করতেন। এবং নেতাজি কয়েকবার বসু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এসেছিলেন। তথ্য অনুযায়ী, ১৯২২ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত নেতাজি এই বাড়িতে ছিলেন। নেতাজি এখানে তাঁর বাড়ি বন্দি অবস্থায় থাকাকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাছে চৌকিদারদের মাধ্যমে অনেক গোপন নির্দেশ পাঠাতেন। বর্তমানে বহু স্মৃতি দিয়ে ঘেরা নেতাজির এই বাড়ি দেখতে ভিড় জমাচ্ছে পর্যটকেরা।
সুজয় ঘোষ