Report: Nitin Gautam
বৃন্দাবন: সেও ছিল এক চাঁদ ওঠার সময়। তফাতের মধ্যে শুক্লপক্ষ। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌল্লার সময়ে অতীব ধনী মহাজন জগৎ শেঠের পরিবারের গল্প। শোনা যায়, এক সময়ে তাঁরা খুবই দরিদ্র ছিলেন। কোজাগরীর রাতে না কি দেবী লক্ষ্মী স্বয়ং দেখা দিয়েছিলেন জগৎ শেঠের মাকে। স্নান করে শুদ্ধ হয়ে বর চাইবেন, এই বলে মহিলা পুকুরে স্নান করতে যান। দেবী লক্ষ্মী কথা দেন, যতক্ষণ না মহিলা ফিরছেন, তিনি ওই বাড়িতেই থাকবেন, কোথাও যাবেন না। মহিলা আর ফেরেননি। এভাবেই স্বামীর কল্যাণ হয়েছিল তাঁর সূত্রে।
বর্তমানে স্বামীর কল্যাণের জন্য সম্প্রতি দেশের ঘরে ঘরে যে পার্বণ উদযাপিত হল, তার প্রেক্ষাপটে বৃন্দাবনের পরিবারেও দেখা গেল এক স্ত্রীর ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা। দেশ জুড়ে সদ্যই উদযাপিত হয়েছে করবা চৌথ। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথি, লোকমুখে তাই এর স্বীকৃতি করবা চৌথ নামে। এই পার্বণে বিবাহিতাদের ষোল শৃঙ্গারে সেজে ওঠা রেওয়াজ, স্বামী এবং পরিবারের মঙ্গল কামনায় সারা দিন উপোস করেন তাঁরা। সন্ধ্যায় চাঁদ উঠলে চন্দ্রদেবকে অর্ঘ্য দান করে চালুনি দিয়ে স্বামীর মুখ দেখেন, তাঁর হাত থেকে জল খেয়ে উপোস ভাঙেন। স্বামী দীর্ঘায়ু হন, দাম্পত্য মধুর হয়। বৃন্দাবনের কাশীরাম কলোনির এক স্বামীও চাঁদ ওঠার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু পরিণতি মধুর হল না।
জানা গিয়েছে যে বৃন্দাবনের কাশীরাম কলোনির বাসিন্দা ওই ভদ্রলোক করবা চৌথের সন্ধ্যাবেলায় স্ত্রীর একটি চিঠি পান। সেই চিঠিতে ঠিক কী লেখা ছিল, তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। শুধু জানা গিয়েছে যে সেই চিঠিতে ছিল স্ত্রীর ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার খবর। সঙ্গত কারণেই বিচলিত হয়ে পড়েন স্বামী। খোঁজাখুঁজি চলতে থাকে চার দিকে। কিন্তু নিখোঁজ স্ত্রীর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে কেবল পানিগাঁও ব্রিজে স্ত্রীর চপ্পল মেলে। দেরি না করে এর পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে যে ওই ভদ্রলোকের নাম প্রদীপ এবং তাঁর স্ত্রীর নাম নিশা। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। দাম্পত্যে যে মেঘ ঘনিয়েছে, তা প্রদীপ বুঝতে পারেননি কোনও দিন। এবার করবা চৌথে এই অঘটনে সঙ্গত কারণেই হতাশ পুরো পরিবার। নিশার খোঁজে নদীতে ডুবুরি নামানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও খবর মেলেনি। পুলিশ তদন্ত জারি রেখেছে।