টোকিও: দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্য ও ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা মোকাবিলা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাপান। কিন্তু লাভ হচ্ছে না কোনও। নিঃসঙ্গতা দিন দিন বেড়েই চলেছে দেশটিতে। পরিস্থিতি এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, মৃত্যুর সময়ও কাউকে পাশে পাচ্ছেন না অনেকেই। নিজের বাড়িতেই মারা গিয়েছেন তাঁরা। অথচ কেউ জানেনই না। মরদেহ উদ্ধার হচ্ছে মারা যাওয়ার বেশ কিছু দিন পর।
অবিশ্বাস্য হলেও নিঃসঙ্গতার এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে জাপানে। জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিজ বাড়িতে একাকি মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় চার হাজার মানুষকে মৃত্যুর এক মাসের বেশি সময় পর উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড়লোক জেলা কোনটি জানেন? শুনে চোখ কপালে উঠবে, চমকে দেওয়া রিপোর্ট
প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত এই দেশে বাস করেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রবীণ মানুষ। বর্তমানে জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ শুধুমাত্র প্রবীণ। সেখানে প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জনের বয়স ৮০ বছর কিংবা তারও বেশি। জাপানের পুলিশ-প্রশাসন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, এই দেশের প্রবীণ নাগরিকেরা জীবনের শেষ মুহূর্তে কীভাবে একাকীত্বের মধ্যে দিয়ে বেঁচে আছেন। ঠিক কী বেরিয়ে এসেছে ওই রিপোর্টে? জানা গিয়েছে, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে জাপানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিজের বাড়িতে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা গিয়েছেন।
যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৭ হাজার ৪৯৮ জনের বয়স ৮৫ বছরের বেশি। আবার ৫ হাজার ৯২০ জন রয়েছে ৭৫-৭৯ বছর বয়সি। অন্যদিকে ৫ হাজার ৬৩৫ জনের বয়স ছিল ৭০-৭৪ বছরের মধ্যে। তবে ভবিষ্যতে একাকিত্বের মৃতের সংখ্যা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপানিজ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ। তাঁদের মতে, ২০৫০ সালে জাপানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সি যাঁরা একা থাকেন, তাঁদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে পৌঁছবে প্রায় ২ কোটিতে। জাপানে সেই সময় পাঁচটি পরিবারের মধ্যে একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে একাকী জীবন কাটাতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপানের জনগণনাকারী সংস্থাটি।