পাঁচমিশালি General Knowledge: আজ ট্রেনে টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন কিন্তু এক বাঙালির জন্যই! এক ঘটনাতেই ইংরেজদের থেকে ছিনিয়ে আনেন ‘টয়লেট’! কে সেই বাঙালি জানেন? Gallery October 27, 2024 Bangla Digital Desk দূরপাল্লার ট্রেনে সব ক্লাসের কামরাতেই টয়লেট, এ একান্তই ব্রিটিশদের ভাবনা, এমনটাই হয়তো ভেবেছেন এতদিন। কিন্তু না, ভুল ভেবেছেন। দূর পাল্লার ট্রেনে এই প্ল্যানিংয়ের পিছনে ছিল এক বাঙালির অবদান। আরও বিশেষ ভাবে বললে, তাঁর কড়া চিঠি। সেটা ১৯০৯ সালের কথা। জনৈক অখিলচন্দ্র সেন রেলগাড়িতে করে যাচ্ছেন। বাড়ি থেকে আসার সময় সুস্বাদু বেশ কয়েকটি কাঁঠাল খেয়ে এসেছেন। হঠাৎ প্রকৃতির ডাক। ট্রেন চলছে, ওয়াশরুম নেই! প্রমাদ গুনলেন অখিল সেন। এ বার কী হবে? ভীষণ ভোগান্তিতে পড়লেন তিনি। পরের স্টেশন অবধি অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই! ট্রেনে যাত্রাকালে পেটে ‘বিশেষ কাজ’ এর চাপ নিয়ে উসখুশ করছিলেন অখিল চন্দ্র। কিন্তু কোথাও কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রচণ্ড চাপে ধুতি নষ্ট হওয়ার জোগাড়। কোনও মতে, চেপে ধরে পরবর্তী স্টেশনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মহারাষ্ট্রের আহমেদপুর স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে পড়িমরি লোটা হাতে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে শৌচালয়ে ছুটলেন। এক দিকে, শরীর হালকা হচ্ছে, আর এক দিকে শৌচালয় থেকেই শুনতে পাচ্ছেন গার্ড হুইসল বাজিয়ে দিয়েছেন। ট্রেন ছাড়ছে। ফলে হালকা হওয়ার কাজ ‘হাফ ডান’ রেখেই তিনি ফের পড়িমরি করে শৌচালয় থেকে বেরিয়ে এক হাতে লোটা আর এক হাতে ধুতি ধরে ট্রেন ধরার জন্য দৌড় লাগালেন। এক হাতে নিজের জিনিসপত্র ধরে, আরেক হাতে ধুতি সামলাতে সামলাতে দৌড়াতে গিয়ে হুড়মুড়িয়ে প্ল্যাটফর্মের ওপর পড়ে গেলেন। প্ল্যাটফর্মভর্তি লোকের সামনে ধুতিটুতি খুলে গিয়ে বিতিকিচ্ছি অবস্থা! গন্তব্যের মাঝপথে ট্রেন হারিয়ে রেগে যান অখিল চন্দ্র সেন। ক্ষেপে গিয়ে সাহেবগঞ্জ ডিভিশনাল রেলওয়ে অফিসে ভুলভাল ইংরেজিতে একটি চিঠি লিখলেন। চিঠিটির সারকথা হল- অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়ার কারণে তাঁর পেট ফেঁপেছিল। তিনি কোষ্ঠ সাফ করে হালকা হতে গিয়েছিলেন। তিনি টয়লেটে যাওয়ার আগে গার্ডদের বলেওছিলেন। কিন্তু গার্ডরা তার কথা মনে রাখেনি এবং ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে, এ কারণে বহু নারী-পুরুষের সামনে তাকে হেনস্তা হতে হয়েছে। এ কারণে তিনি গার্ডদের জরিমানা করার দাবি জানান, নচেৎ সংবাদপত্রে খবর দিয়ে এই ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন। অখিলচন্দ্র সেনের এই চিঠিটি রেলের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, ব্রিটিশ সরকার ওই চিঠির ভিত্তিতেই গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় যার জেরে ভারতে ট্রেনের মধ্যে বাথরুমের প্রচলন হয়। অখিলের সেই চিঠি এখনও দিল্লির রেল মিউজিয়ামে রাখা আছে।