পশ্চিম মেদিনীপুর: সামনে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। মাত্র কদিন পরেই টেস্ট। তবে সামনে পরীক্ষা থাকলেও সমাজের জন্য যা করে দেখালউচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা, জানলে চমকে যাবেন। একবার দুবার নয়, বেশ কয়েকবার সমাজের প্রতি এই ছাত্র-ছাত্রীদের কর্তব্য এবং তাদের ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। নিজেদের সঞ্চয় করা অর্থে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের সহযোগিতা নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে এসে এই কাজ করে দেখালছাত্র-ছাত্রীরা। শুধু তাই নয়, সমাজকে দিল বিশেষ বার্তা। কালীপুজো উপলক্ষে প্রত্যন্ত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং প্রতিটি বাড়ি আলোকিত করতে ছাত্র-ছাত্রীদের এই বিশেষ ভাবনা।
একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনার সময় থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই বিশেষ ভাবনার সঞ্চার ঘটে। সাধারণ অবহেলিত মানুষ, প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় থাকা গ্রামবাসী, পিছিয়ে পড়া পরিবার, সমাজে না খেতে পাওয়া মানুষ কিংবা অর্থের অভাবে পড়তে না পারা পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে পড়ুয়ারাই। নিজেদের হাত খরচ, টিফিন খরচ বাঁচিয়ে কখনও আবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে একাধিক কর্মসূচি করেছে তারা। বর্তমানে প্রায় সকলেই দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে, কিছু জন একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াও রয়েছে। কালীপুজো উপলক্ষে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এসে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রদীপ, মোমবাতি তুলে দিল তারা। শুধু তাই নয়, শীত শুরু হতে না হতেই বেলদা এলাকায় ফুটপাতে থাকা দুজন মানুষের হাতে তুলে দিয়েছে শীতবস্ত্র।
আরও পড়ুন: সাইকেল, মোটরবাইক অতীত! রাজ্যের এই জায়গায় এখন রাস্তায় যেতেও একমাত্র ভরসা নৌকা
সামান্য কয়েকদিনের পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের জমানঅর্থে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের কানপুর গ্রামে বেশ কয়েকটি পরিবারের হাতে তারা মোমবাতি এবং প্রদীপ তুলে দেয়। প্রসঙ্গত আলোর উৎসব দীপাবলি। এই দীপাবলিতে শহর, শহরতলী কিংবা গ্রামবাংলায় আলো জ্বালিয়ে আলোর উৎসব উপভোগ করেন সকলে। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় সেই চল আজও কম। তাই আলোর উৎসবে সকলকে আনতে এবং গ্রামীণ এলাকায়ও প্রতিটি বাড়িতে যাতে আলোর উৎসব পালন করেন প্রত্যেকে, তার অঙ্গীকার নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এই ভাবনা। প্রায় ৬০টিরও বেশি বাড়িতে তারা মোমবাতি, প্রদীপ প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন: মাটির থালা, বাটি, গ্লাস, হাঁড়ি! নকশা ডিজাইনে দিশা দেখাচ্ছেন স্বনির্ভর কলেজ ছাত্রী
আলোর উৎসবে সমাজে আলোকবর্তিকা নিয়ে চলা ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিকতা এবং বিশেষ ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। যারা সমাজের মূল স্তম্ভ, যারা সমাজে এক পা এক পা করে এগিয়ে চলেছে তাদের এই দূরদর্শী ভাবনাচিন্তা এবং তাদের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ।
রঞ্জন চন্দ