হাওড়া: ১৬১ তম বর্ষে মা কালীর আরাধনায় হাওড়ার মৌরি নাথবাড়ি! নাথ বাড়ির সদস্যদের কাছে উৎসব বলতে দুর্গা পুজোর থেকেও বেশি আনন্দের এই কালীপুজো। দেড় শতাব্দীরও বেশি বছর আগে নাথ বাড়িতে যে নিয়ম নীতি মেনে কালী পুজোর সূচনা হয়েছিল সেই নিয়ম আজও অক্ষত।
মৃৎশিল্পী পুরোহিত থেকে ঢাকি সকলেই বংশপরম্পরায় যুক্ত রয়েছেন নাথ বাড়ির এই পুজোর সঙ্গে। পুরনো রীতি মেনে বাড়ির পুরুষ মহিলা সদস্য মিলে পুজোর আগে গঙ্গা থেকে ন’ঘরা জল আনতে যান। ন’ঘরা জলের মধ্যে ২ ঘরা জলে ভোগ তৈরির কাজে লাগে। সাতঘরা জল পুজোর কাজে ব্যবহৃত হয়। নাথ বাড়িতে এই রীতি পুজোর সূচনা কাল থেকে। জাঁকজমক করে মা কালীর পুজো হয়। পুজোর আগে নাথ বাড়ির গৃহ দেবতাকে ঢাক কাঁসর শঙ্খ বাজিয়ে নিয়ে আসা হয় ঠাকুর দালানে। মা কালীর পুজোর পাশপাশি বাস্তু মনসার পুজো হয় অমাবস্যা শেষ হলে। পারিবারিক কালীপুজো মানে নাথ বাড়ির সদস্যদের কাছে সবথেকে বড় উৎসব। তাই সারা বছর অপেক্ষার এই দিন। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই জোর প্রস্তুতি।
পুজোর দিন সকালে থেকে প্রতিমা আনা, নাড়ু পাকানো, নৈবিদ্য সাজানো, বেল পাতার মালা গাথা, ভোগ তৈরির মত নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পরিবারের ছোট বড় প্রায় ৭০ জন সদস্যই। পুজোর দিন সকাল থেকে আত্মীয় আগমন ঘটে। পরিবার সদস্যের সঙ্গে আত্মীয় এবং গ্রামের মানুষও সামিল হয় মা কালীর আরাধনায়।
অষ্টাদশ শতকে সারা বাংলার জুড়ে মা কালীর আরাধনা শুরু। শেষ সময়ই মৌরি নাথ বাড়িতে কালী আরাধনা শুরু হয়েছিল আরোগ্য লাভের আশায়। নাথ বাড়িতে সিদ্ধেশ্বরী কালী পুজোর সূচনা করেছিলেন ডাঃ শশীভূষণ নাথ। দাদা হরিশচন্দ্র নাথের সুস্থতা কামনা করে। মা কালীর আরাধনা করে সেসময় দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিল হরিশ চন্দ্রনাথ। সেই থেকেই নাথ বাড়িতে মা কালীর পুজোর চল।
এ বছর ১৬১ তম বর্ষে নাথ বাড়ির কালীপুজো। এ প্রসঙ্গে মৌরি নাথ বাড়ির সদস্য সঞ্জয় নাথ জানান, সমস্ত বিপদ থেকে নাথ বাড়িকে রক্ষা করে মা সিদ্ধেশ্বরী কালী। নাত বাড়িতে আদরিনী কন্যা রূপে পুজো হয় মা কালী।
রাকেশ মাইতি