আভা খাটুয়া 

Paris Olympics 2024: প্যারিস অলিম্পিক্সে পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষকের মেয়ে আভা, তার জীবন সংগ্রামের কাহিনি চোখে জল আনবে

পশ্চিম মেদিনীপুর: পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, ছোটবেলায় সেই অর্থে জোটেনি পেটভর্তি খাবারও। আধপেটা খেয়েই কেটেছে ছোটবেলা। এরপরও লড়াই চালিয়ে গিয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে। অবশেষে স্বপ্নের সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছে সে। মিলেছে অলিম্পিক্সে খেলার ছাড়পত্র।

প্যারিস অলিম্পিক্সে খেলবেন প্রত্যন্ত গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। তাঁর এই সাফল্যে খুশির হাওয়া জেলা জুড়ে। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে প্যারিসে পৃথিবীর অন্যান্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে প্রত্যন্ত গ্রামের এই মেয়ে। ছোটবেলা জুড়ে রয়েছে খেলাধুলা, বাড়ি থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে যেতে হত পড়তে। তবে স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে খেলোয়াড় হবে সেই মেয়ে। অবশেষে স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। গ্রামের এই মেয়ে খেলবেন প্যারিস অলিম্পিক্সে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের গ্রাম খুড়শি। এই গ্রামের কৃষকের মেয়ে আভা খাটুয়া। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বাধা-বিপত্তিকে কাটিয়ে আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সে। আগামী প্যারিস অলিম্পিক্সে শটপুট ইভেন্টে খেলতে নামবে আভা। বর্তমানে জাতীয় স্তরে শটপুট থ্রোতে প্রথম স্থানে রয়েছে সে। পটিয়ালাতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আভা। তাঁর এই সাফল্যে খুশির হাওয়া জেলা জুড়ে। নেটিজেনদের প্রশংসায় ভরে গিয়েছে সমাজমাধ্যম।

ছোট থেকেই আভার ঝোঁক ছিল খেলাধুলার প্রতি। সেই মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে শুরু হয় তাঁর লড়াই, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দীর্ঘ প্রচেষ্টা। প্রথমে দৌড়, লং জাম্প, জ্যাভলিন থ্রো-সহ একাধিক ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় স্তর থেকেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবার লড়াই শুরু হয়। একে একে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরেছেন আভা। আগামী ১ অগস্ট থেকে প্যারিসে শুরু হচ্ছে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলেটিক্স। চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত। মহিলাদের মধ্যে নজরে থাকবেন বাংলার আভা। আভা জানাচ্ছেন, তাঁর আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং ২৩। এর আগে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এই অ্যাথলিট একাধিক মেডেল জিতেছেন।

কলেজে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মাঝে কলকাতাতে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়াতে প্রশিক্ষণ নেন আভা। ২০১৯ সাল থেকেই তিনি পঞ্জাবের পটিয়ালাতে থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। স্পোর্টস বিভাগের সংরক্ষণে কাস্টমসে চাকরিও পেয়েছেন তিনি। অনেক কষ্ট ও অভাব নিয়ে জীবনে সাফল্যের কাছে আভা। অলিম্পিক্সে সুযোগ পাওয়া সেই ধারাবাহিক লড়াইয়ের ফসল।

আরও পড়ুন: ব্যারাকপুরে বেসরকারি স্কুলে দুর্ঘটনা! প্র্যাকটিক্যালের সময় টেস্টটিউব বিস্ফোরণে আহত ছাত্র

তবে এই সমগ্র জার্নি সহজ ছিল না। খেলাধুলা করতে গিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে, জানালেন আভা। তবে দমে যায়নি সেই মেয়ে। শুধু নারায়ণগড়ের নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গর্ব আভা খাটুয়া। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছে সে। আসন্ন অলিম্পিক্সে আভার দিকে তাকিয়ে সকলে।