কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘শান্তিনিকেতনে’র সামনে সেরে গিয়েছে রেইকি৷ তোলা হয়েছে ছবি, ভিডিয়োয় রেকর্ড করা হয়েছে আশপাশের গতিবিধি৷ এমনকি, জোগাড় করেছিল অভিষেকের পিএ-র ফোন নম্বরও৷ তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গত সোমবারই মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী রাজারাম রেগেকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় ভোটের পশ্চিমবঙ্গে৷ প্রশ্ন ওঠে, তবে কি অভিষেককে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিল ওই ‘জঙ্গি’?
কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মার এই বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসার পরে একাধিক জনসভা থেকে এ নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেকও৷ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের জনসভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘‘ দুই দিন আগে আমাকে মারার চক্রান্ত হয়েছে। কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে৷ আমার প্রাণের ভয় নেই৷ আমি রাজনৈতিক কর্মী সব সময়ের৷’’
শুধু তাই নয়, এদিন ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধেও সুর চড়াতে দেখা যায় অভিষেককে৷ তিনি বলেন, ‘‘যে আমার বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই লাগিয়েছে। সে-ই আবার এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে৷ আমার স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা-মাকেও অবধি ছাড়েনি৷ আমি যাতে সভা না করতে পারি তাই হেলিকপ্টার রেইড করিয়েছে৷ আমাকে আটকাতে পারেনি।’’
কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত মুর্শিদাবাদে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানাতে দেখা যায় অভিষেককে৷ এমনকি, কংগ্রেস-সিপিএম’কে বিজেপির বি-টিম বলেও কটাক্ষ করেন তিনি৷ তোলেন ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গও৷
অভিষেকের কথায়, ‘‘কংগ্রেস আর সিপিএম বিজেপির বি টিম হয়ে কাজ করছে৷ রাহুল গান্ধি ও সনিয়া গান্ধি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে বলেছেন বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূল কংগ্রেস দরকার৷ আর এখানে ব্রাঞ্চ অফিসে বসে অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিমের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস আর আমার বাপ বাপান্ত করছে।’’
সরাসরি অধীর চৌধুরীকে লক্ষ্য করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অধীর বাবু বলছে, মমতা বন্দোপাধ্যায় আমার বিরুদ্ধে লড়ুক। কই একবারও তো বলছেন না, যোগী আদিত্যনাথ, নরেন্দ্র মোদি, শুভেন্দু অধিকারী বা দিলীপ ঘোষ তাঁর বিরুদ্ধে লড়ুক। অন্যদিকে, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা মমতা বন্দ্যপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে দরকার বিজেপি বিরোধিতায়৷’’
এরপরেই অভিষেকের হুঙ্কার, ‘‘এই ৪২-৪৪ ডিগ্রি গরমে ভোগান্তির শেষ নেই৷ তবে নিজের ভোট নিজে লাইনে দাঁড়িয়ে দেবেন। প্রথম দফায় ঘাড় ভেঙেছি, দ্বিতীয় দফায় মাথা ভাঙব, তৃতীয় দফায় কোমর ভাঙব।’’