গত ১০ মে ঘটেছিল সেই ঘটনা। শক্তিশালী সৌরঝড় আঘাত হানে পৃথিবীর বুকে। তার কয়েক দিন পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো জানাল মহাকাশযান আদিত্য এল১ মহাজাগতিক কিছু দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছে। ভূচৌম্বকীয় সৌর ঝড় ধরা পড়ে আদিত্য এল১ এর শক্তিশালী ক্যামেরায়।গত কয়েক দশকের মধ্যে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড়। ভূচৌম্বকীয় ক্ষেত্র অনুযায়ী এটি জি৫ স্তরের সৌরঝড়। গত কয়েক দিন ধরে নানান মহলে আলোচনা হচ্ছে এই সৌরঝড়ের প্রভাবে বিশ্বের কোথায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হল। তবে মঙ্গলবার ইসরোর বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করেছেন যে ভারতের ল্যাটিচিউড বা অক্ষাংশ কম থাকার কারণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আমেরিকার তুলনায় কম প্রভাব পড়েছে।১১ মে ভোরে সৌরঝড়টি মূল আঘাত হানে। তবে সে সময় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আমেরিকার ওপর আয়নোস্ফিয়ার খুব অশান্ত ছিল। সূর্য থেকে আলফা পার্টিকেল আর প্রোটোন কণার উদগিরন ধরা পড়েছে আদিত্যর ক্যামেরায়।গত ২ সেপ্টেম্বর সফল ভাবে মহাকাশে পাড়ি দেয় ভারতের প্রথম মহাকাশাভিযান আদিত্য এল১। আদিত্য এল১ এর এক্স রে পেলোডে ধরা পড়েছে একাধিক সৌরঝড়। এছাড়াও ইনসিটু ম্যাগনেটোমিটারের পেলোডেও ধরা পড়েছে মহাজাগতিক ঘটনা। আদিত্যর পাশাপাশি চন্দ্রযান-২ যা চাঁদের কক্ষপথে ঘুরপাক খাচ্ছে তার অরবিটারেও ধরা পড়েছে মহাজাগতিক ঘটনা সৌরঝড়ের একাধিক দৃশ্য।২০০৩-এর অক্টোবরে ‘হ্যালোউইন স্টর্মস’ তৈরি হওয়ার পর এই প্রথম সৌরঝড়ের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ভূচুম্বকীয় ঝড় তৈরি হল। যার ফলে দেখা গেল মেরুজ্যোতি। ‘ সূর্যের যে বায়ুমণ্ডল তাকে বলে ‘করোনা’ ।এই ‘করোনা’ থেকে কখনও কখনও বিপুল পরিমাণে প্লাজমা এবং চুম্বকীয় ক্ষেত্র নিক্ষিপ্ত হয়। একে বলে ‘করোনাল মাস ইজেকশনস্’। আর এই সিএমই থেকেই তৈরি হয় সৌরঝড়।অরোরা তথা মেরুজ্যোতি হল আকাশে সৃষ্ট উজ্জ্বল আলোর অসংখ্য ফিতে। সৌরঝড়ে যে শক্তিযুক্ত কণা এবং চুম্বকীয় ক্ষেত্র থাকে তা পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সৌরঝড় যত বেশি তীব্র হয়, মেরুজ্যোতির তীব্রতা তত বেশি হয়।এই সৌরঝড় পৃথিবীতে পৌঁছোতে কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে আবার দু’-একটা দিনও লাগতে পারে। ১০ ও ১১ মে এ ধরনের অন্তত চারটি সৌরঝড় পৃথিবীতে পৌঁছোয়। আর সেই সৌরঝড় থেকেই সৃষ্টি হয় অভাবনীয় মেরুজ্যোতি, যা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে দৃশ্যমান হয়েছিল।