আগ্রা: গ্রামবাসীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল দুই নাবালক। সোজা নালিশ জানাতে হাজির হল জেলাশাসকের দফতরে। বয়সে হয়তো তারা খুবই ছোট, কিন্তু সেই তুলনায় তাদের অভিযোগ একেবারেই ছোট নয়! আসলে তাদের গ্রামের পুকুর দখল নিয়েই রয়েছে অভিযোগ। শিশুদের অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী কাকু তো বলেছিলেন যে,পুকুর দখল করা হবে না। কিন্তু আমাদের গ্রামের কিছু মানুষ তা মাটি ফেলে ভরাট করে দখলের চেষ্টা করছে।” ছোট দুই শিশুর সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে। এমনকী তাদের এহেন দৃঢ় সঙ্কল্প অনুপ্রেরণাও জোগাচ্ছে।
ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের আগ্রার। যা সকলের নজর কেড়ে নিয়েছে। নিজেদের গ্রাম থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে আগ্রা জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছয় তারা। যা দেখে সেখানে উপস্থিত সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। বুধবার দুপুর ১২ নাগাদ জেলাশাসকের দফতরে হাজির হয় দুই নাবালক। পরনে জিন্স আর শার্ট। তাঁদের হাতে রয়েছে সাদা কাগজ। দু’জনের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। তবে জেলাশাসকের দফতরে ঢোকার পরে জানা যায়, তিনি ওই দিন ছিলেন না। ফলে অতিরিক্ত সিটি ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএম) সতীশ কুমার কুশওয়াহা শিশু দু’টির কথা শোনেন। তাদের প্রশ্ন করায় একটি শিশু বলে, “কাকু আমার নাম পীযূশ। আর এটা আমার ভাই বিনয়। আমরা আসলে একটা অভিযোগ নিয়ে এসেছি।”
এরপর জানতে চাওয়া হলে ওই নাবালক বলে যে, “আমাদের গ্রামের নাম সুচেতা (পথৌলি)। আমাদের গ্রামে একটি ১০০ বছরের পুরনো পুকুর রয়েছে। তবে গ্রামের কিছু মানুষ পুকুর দখল করার চেষ্টা করছেন এবং মাটি দিয়ে পুকুরটিকে ভরাট করছেন। আসলে পুকুরটিকে যদি দখল করা হয়, তাহলে গ্রামে বৃষ্টির জল ভরে যাবে। নোংরা-আবর্জনা জমবে এবং মশার উৎপাত বাড়বে।” ওই শিশু দু’টির সাহস দেখে রীতিমতো আশ্চর্য হয়েছেন আধিকারিকরাও।
এসিএম এই ঘটনার কথা শোনেন এবং শিশু দুটিকে তেহসিলে গিয়ে এসডিএম-এর কাছে চিঠিটি জমা করতে বলেন। এরপর তারা সেই নির্দেশ মতো এসডিএম-এর দফতরে যায়। আর অভিযোগপত্রটি জমা করে। ওই দুই শিশুর আর্জি, তাদের গ্রামের ১০০ বছরের পুরনো পুকুরটিকে যেন দখলমুক্ত করা হয়। এটাকে ঠিক ভাবে পরিষ্কার করা উচিত। জেলা আধিকারিক ভানুচন্দ্র গোস্বামী বলেন যে, সুচেতা গ্রামের পুকুর দখল নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য একটা বাহিনী পাঠানো হবে। অভিযোগ সত্যি হলে পুকুরটিকে দখলমুক্ত করা হবে। তবে এই ঘটনার পরে শিশু দু’টির সাহসিকতা নিয়ে জোরদার চর্চা হচ্ছে।