নিজের বানানো গাড়িতে তিনি

মাত্র এক লাখ টাকায় জিপ! দুর্দান্ত মাইলেজ! মেকানিক যা বানালেন, সবাই অবাক

শান্তিপুর: কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, লাখ টাকার শখ পুরনও হতে পারে, ইচ্ছে আর মনের জোর থাকলে। আর সেই রকমই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন শান্তিপুরের এক দরিদ্র ঘরের সন্তান জয়ন্ত বিশ্বাস।

অবশ্য তাঁর পদবী এখন মিস্ত্রিতে রূপান্তরিত হয়েছে। পেশায় ইঞ্জিনভ্যান মেকানিক। তবে ঝাঁ চকচকে দোকান কিংবা দামি দামি গাড়ি মেরামতি করেন এমনও কিন্তু নয়, পথের পাশে রাস্তা দিয়ে যাওয়া ইঞ্জিন ভ্যান সারিয়ে থাকেন তিনি।

পরিবারকে সুখে রাখতে দামি গাড়ি উপহার না দিতে পারলেও তাঁর গ্যারাজের বিভিন্ন বাতিল সামগ্রী নিপুন হাতের ছোঁয়ায় এক আশ্চর্য জিনিস বানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- টি২০ বিশ্বকাপের ভারতীয় দলে বড়সড় চমক! ‘এই’ তারকা ক্রিকেটারের জায়গা পাকা

এর আগেও একটি মারুতি ভ্যান তিনি পরিবারের জন্য তৈরি করেছিলেন মাত্র এক লক্ষ টাকা খরচের মধ্যে। তবে অভাবে সংসারের ভাল দাম পেয়ে ব্যবসা আরও বাড়ানোর জন্য সেটাও বিক্রি করে দেন। তবে এবারের গাড়িটি বড়ই অদ্ভুত!

রঙচঙ কিংবা সাজসজ্জা এখনও সমাপ্ত হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তার আগেই শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় নামী-দামি গাড়িদের টেক্কা দিয়ে ছুটে চলেছে তাঁর তৈরি অভিনব এই চারচাকা গাড়ি।

অনেকটা বিদেশি হুড খোলা দামি গাড়ির মতো। ডিজেল ইঞ্জিন হওয়ার কারণে শব্দটা শুধু একটু বেশি। স্ত্রী সোমা বিশ্বাসকে নিয়ে সঞ্জয় মিস্ত্রি একমাত্র সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। আর সেখানে অবস্থিত ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালকদের আকর্ষণের বিষয় হয়ে ওঠেন তিনি।

আরও পড়ুন- নাইটদের হারে চিন্তা! ‘ঘাবড়াও মত’ এই হারের ম্যাচে কেকেআরের যা লাভ হল

কেউ চাপলেন গাড়িতে, কেউবা একটু চালালেন। তাঁরাও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এক লক্ষ টাকায় ন্যানো গাড়ি থাকলেও তাঁর তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী এই গাড়ি।

স্ত্রী সোমা বিশ্বাস বলেন আগের থেকেও এ গাড়ি তাঁর বেশি পছন্দের। সাংসারিক প্রয়োজনে এবং মাঝেমধ্যেই স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। পাশে যতই দামি গাড়ি থাকুক না কেন, সকলে তাকিয়ে দেখে এই গাড়িটি।

জয়ন্ত বাবু জানান, কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন বাতিল জিনিসপত্র দিয়ে এই গাড়ি তৈরি করতে তাঁর এক মাস সময় লেগেছে। খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তবে গতি যথেষ্ট বেশি, ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে যাওয়া যায়। খরচ অত্যন্ত কম।

যদিও এখনও পর্যন্ত তার ছোট পরিবার হওয়ার কারণে ড্রাইভার সিট বাদে দুজনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে পেছনে আরও তিনজনকে বসানোর ব্যবস্থা করা যাবে। পথ চলতি আগ্রহী অনেকেই নাকি জয়ন্ত বাবুকে এই গাড়ির অর্ডার দিয়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই।

Mainak Debnath