মূর্তিতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ

Nadia News: মূর্তি বানিয়েই চলে সংসার! সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে স্বনির্ভতার পথে তরুণ শিল্পী

নদিয়া: তাঁতির ঘরের ছেলে গড়ে তুলেছেন একের পর এক প্রতিমা। ছোটবেলা থেকেই মূর্তি বানানোর প্রতি আগ্রহ ছিল শান্তিপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তোপখানা এলাকার বাসিন্দা সৌম্যদীপ মণ্ডলের। বাবা একজন তাঁত শ্রমিক ছিলেন। তবে তাঁতের অবস্থা শোচনীয় হওয়ার কারণে বর্তমানে তাঁর বাবা একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। পরিবারের কেউই এর আগে মূর্তি বানানোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। নিজের আগ্রহের বশেই বেশ কয়েক বছর ধরে মিনিয়েচার মূর্তি বানানোয় মনোনিবেশ করেন সৌম্যদীপ। শান্তিপুর কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে আঁকা শেখানোর পাশাপাশি এখন তিনি স্বপ্ন দেখেন মূর্তি বানিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার।

ছোটবেলা থেকেই সৌম্যদীপ আঁকা শিখেছেন। তবে ঠাকুর বানানোর প্রথাগত প্রশিক্ষণ কখনও নেননি। বিভিন্ন জায়গায় ঠাকুর বানানো এবং মূর্তিতে রং করার কাজ দেখে দেখেই শিখে নিয়েছেন সবটা। এরপর কখনও রাধাকৃষ্ণ কিংবা কালীপ্রতিমা, গোপালের মূর্তি , সরস্বতীর মূর্তি তৈরি করে ফেলেছেন। মূর্তি বানানোর পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেগুলি বিক্রি করার আহ্বান জানান তিনি। ইতিমধ্যে জেলা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর মূর্তি পাড়ি দিচ্ছে।

পুজোর আর হাতেগোনা কয়েক দিন। আর সেই কারণেই এই সময় বিভিন্ন মিনিয়েচার দুর্গামূর্তি তৈরি করার ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেল তাঁর কাছে গিয়ে। ছোটবেলা থেকেই আঁকা শেখার কারণে অত্যন্ত সুনিপুণ দক্ষতার সঙ্গে সেই মূর্তিগুলি বানিয়ে চলেছেন একের পর এক। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। দিনরাত তিনি পরিশ্রম করে চলেছেন মূর্তি বানিয়ে সংসার চালাতে। তবে সে আত্মবিশ্বাসী রাস্তার পাশে একটি দোকান অথবা কারখানা হলে সে আরও বেশি অর্ডার পাবে বর্তমানে বসত বাড়ির মধ্যেই কোনরকমে ছাদের এক টুকরো জায়গায় কাজ করতে হচ্ছে অনেক কষ্ট করে ।

বর্তমানে মিনিয়েচার মূর্তির চাহিদা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন ফ্ল্যাট কিংবা আবাসনে ছোট আড়ম্বর করে এই ছোট মূর্তি পুজো করে থাকেন অনেকেই। আবার বড় বড় পুজো উদ্যোক্তারা থিমের ঠাকুরের নীচে সাবেকি ছোট মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করেন। এছাড়াও ঘর সাজাতে অনেকেই এই মিনিয়েচার মূর্তি বাড়ি নিয়ে যান। আর সেই কারণেই ক্রমশই বেড়ে চলেছে এই মিনিয়েচার মূর্তির চাহিদা।

সৌম্যদীপ জানান, চলতি বছর তাঁর একটি মূর্তি পাড়ি দেবে কলকাতায়। মূর্তিটি তৈরি করতে তাঁর সময় লেগেছে তিন থেকে চার সপ্তাহ। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি এই মূর্তির বরাত পান।

মৈণাক দেবনাথ